ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত আগামী বাজেটেই : প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০২:২৯, ১৭ জানুয়ারি ২০১৮

এমপিওভুক্তির সিদ্ধান্ত আগামী বাজেটেই : প্রধানমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, ’বিএনপির কাছে আমিই যেন বড় সমস্যা। দেশের জনগণ আমাকে সমর্থন করে, ভয়-ভীতি আমার নেই। অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আমি সাহস নিয়ে দেশের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এজন্যই আমাকে হত্যার জন্য বুলেট-গুলি, গ্রেনেড হামলা, বড় বড় বোমা পুঁতে রাখা হয়। তবুও আমি মরি না। আল্লাহ আমাকে কীভাবে যেন বাঁচিয়ে রাখেন। হয়তো দেশের মানুষের জন্য কোন ভাল করাবেন। আর মৃত্যুকে আমি ভয় পাই না। জন্মিলে মৃত্যু হবেই। তা নিয়ে আমি চিন্তা করি না। আর কে কত বিশেষণে আমাকে ভূষিত করলো বা কী পেলাম আর কী পেলাম না- সেই হিসাব আমি মেলাই না। যে যতই বিশেষণে বিশেষায়িত করুক, আমার মাথা খারাপ হয় না, এসব আমাকে প্রভাবিত করে না। বরং দেশের জন্য কী করতে পারলাম, দেশের মানুষকে কতটুকু শান্তি, স্বস্তি ও উন্নতি দিতে পারলাম, সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা।’ স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রীর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম ’বিএনপি নেতারাই বলেন- শেখ হাসিনা থাকলে তাদের ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়’-এমন সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন এলেই দেশের একটি শ্রেণী আছে তারা মাথা চাড়া দিয়ে উঠে। এই শ্রেণীর মানুষের কাছে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ভাল লাগে না। দেশের কোন উন্নয়নই তারা চোখে দেখে না। সারাবিশ্ব বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোলমডেল বললেও তা তাদের কাছে যান না। আসলে তারা চোখ থাকতেও অন্ধ, কান থাকতেও বধির। দেশে অসাংবিধানিক শাসন বা জরুরি অবস্থা আসলে তাদের গুরুত্ব বাড়ে। প্রধানমন্ত্রী সুশিল সমাজের কিছু মানুষের কর্মকান্ডের কড়া সমালোচনা করে আরও বলেন, এদের মাথায় একটাই জিনিস থাকে যদি অস্বাভাবিক, অসাংবিধানিক, মার্শাল ল’ বা জরুরি অবস্থা কখন আসবে, তাদের গুরুত্ব পাবে। এই শ্রেণীর মানুষরা আঁকাবাঁকা বা অবৈধপথে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। কারণ নির্বাচিত হয়ে তো তারা মন্ত্রী হতে পারবে না, পতাকা উড়াতে পারবে না। সেজন্য তো তাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। তাদের নির্বাচনে আসার সাহস নেই, নির্বাচনে গেলে জনগণের ভোট পাবে না। তাই আকা-বাঁকা গলিপথে ক্ষমতায় যাওয়ার পথ খোঁজেন। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময়ও তারা ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেছিল। আর ২০১৩ সালেও বিএনপি নেত্রী (খালেদা জিয়া) নির্বাচন বানচাল করে আঁকা-বাঁকা পথে ক্ষমতায় যেতে চেয়েছিলেন। জনগণ প্রতিহত করায় তারা বিছানায় শুয়ে পড়ে বলে, আর বোধহয় হলো না। দেশে নির্বাচন এলেই এই শ্রেণীর লোকরা মাথা চাড়া দিয়ে উঠেন। অবৈধভাবে ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন। এই শ্রেণীর মানুষরা দেশ ও দেশের মানুষের জন্য যন্ত্রণাদায়ক। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইসলাম সম্পুরক প্রশ্ন করতে গিয়ে বলেন- সারাবিশ্বের বিভিন্ন গণমাধ্যম ও রাষ্ট্র নেতাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ’বিশ্ব মানবতার চ্যাম্পিয়ন, প্রাচ্যের নতুন তারকা, বিশ্ব মানবতার বিবেক, বিশ্ব মানবতার মা, বিশ্ব মানবতার আলোকবর্তিক’ ইত্যাদি নানা বিশেষণে তাঁকে ভূষিত করে সম্মানিত করেছেন। এতে বাঙালি হিসেবে আমরাও গর্বিত। সারাবিশ্ব যখন প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসায় পঞ্চমুখ তখন রামপাল বিদ্যুত কেন্দ্রের কী প্রয়োজন আছে? জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এতো আলো জ্বালিয়ে হঠাৎ করেই কেন প্রশ্নকর্তা সুইচ অফ করে দিলেন? বিদ্যুত কেন্দ্র প্রয়োজন দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য। ওই এলাকার মানুষকে জিজ্ঞেস করুন তারা বিদ্যুত চায় কি না। বিভিন্ন বিশেষণ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে তিনি বলেন, কী পেলাম বা কী পেলাম না তার হিসাব আমি করি না। কাজ করি দেশের মানুষের জন্য, এদেশের প্রয়োজনে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার পরবর্তী ৫ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ অনেক উন্নত অবস্থায় যেত, দেশের মানুষকে কেউ অবহেলার চোখে দেখতে পারতো না। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বহু বছর আগেই সারাবিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের দৃষ্টান্ত হতো। কিন্তু চক্রান্তকারীরা বঙ্গবন্ধুকে সেই সময়টুকু দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন রেখে বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দীর্ঘ ২১ বছর কেন দেশের উন্নয়ন হয়নি? একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই দেশের মানুষ উন্নয়নের ছোঁয়া পায়। আর কে কি বিশেষণ দিল তা আমাকে প্রভাবিত করে না। বরং দেশের মানুষ ভাল আছে কি না, খেতে পারছে কি না, ছেলে-মেয়েরা শিক্ষা পাচ্ছে কি না- সেটাই আমার কাছে বড় কথা। আমি উচ্চবিত্তদের কথা চিন্তা করি না, দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং তারা দু’বেলা পেটভরে খেয়ে স্বস্তি, শান্তি ও মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে চলছে কি না, সেটিই আমার কাছে সবচেয়ে বড়কথা এবং আমার প্রধান লক্ষ্য। দেশের মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম, কী দিতে পারলাম, দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও কল্য্যান করাই আমার ব্রত। তরিকত ফেডারেশনের সভাপতি সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পুরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ ও এমপিওভুক্ত করণের বিষয়টি সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। আমরা নীতিমালার ভিত্তিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করে যাচ্ছি। বিষয়টি আমরা নিশ্চয়ই বিবেচনা করবো এবং পরবর্তী বাজেট যখন আসবে তখন সিদ্ধান্ত নিতে পারবো। স্কুল-কলেজ সরকারিকরণ বা এমপিওভূক্ত নীতিমালার ভিত্তিতেই হবে। কোন স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী কত, শিক্ষার মান কেমন, শিক্ষকদেরও যোগ্যতা কেমন এবং স্কুলটি জাতীয়করণের যোগ্য কি না তা দেখতে হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রী তাঁর শ্বশুরবাড়ির এলাকা পীরগঞ্জে এক আত্মীয়ের তদ্বির প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, ’আমার কাছে সরকারিকরণ করতে যে স্কুলের প্রস্তাব নিয়ে আসলো সেই স্কুলে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী। আমি বলে দিলাম যেখানে মাত্র দেড়শ ছাত্র-ছাত্রী, এটা কিভাবে সরকারি করণ করবো? আত্মীয় হলেই আমি তো তা করতে পারবো না। একটা যৌক্তিকতা তো থাকতে হবে। আমার আত্মীয় প্রস্তাব নিয়ে আসলো আর আমি সেটা দেখেই সরকারি করে দেব- এত বড় অন্যায় তো আমি করবো না।’ এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতাই সর্বপ্রথম প্রায় ৩৬ হাজার স্কুলকে সরকারিকরণ করেছিলেন। এরপর আবার আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে যখন সরকার গঠণ করলো তখন আমরা ২৬ হাজার স্কুল সরকারি করে দিয়েছি। তখন কিন্ত একটা কথা ছিল যে, আর কোন স্কুলকে সরকারিকরণের দাবি করা যাবে না, এমপিওভুক্ত করলেই হবে। এরপর অনেক স্কুলকে এমপিওভুক্ত করে দিয়েছি। এরপর দেখলাম আবার শিক্ষকরা আন্দোলন শুরু করলেন। তিনি বলেন, প্রত্যেক এলাকায় কোথায় কত স্কুল হবে, কয়টা স্কুল প্রয়োজন- সেগুলো কিন্তু একটা হিসাব করে সেভাবে তৈরি করার নীতিমালা আমরা করে দিয়েছি। সেভাবেই করা হচ্ছে। জাসদ দলীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হক প্রধানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা ও জনগণকে ন্যায় বিচার দেয়ার লক্ষ্যে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে নির্মমভাবে হত্যার পর খুনি মোশতাক ও জিয়ারা খুনীদের বিচার বন্ধ করে পুরস্কৃত করে। আত্মস্বীকৃত খুনীদের রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার অপচেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কোন বিশেষ আইনে অথবা কোন বিশেষ আদালতে খুনীদের বিচার হয়নি। বিচার প্রক্রিয়া এবং আপীল শুনানী শেষে হত্যাকারীদের সাজা ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। এখনও যে সব খুনি বিভিন্ন দেশে পালিয়ে বা আশ্রয় গ্রহণ করে আছে তাদেরকে দেশে ফিরিয়ে আনার সকল প্রকার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের দাবির প্রতি সমর্থন রেখে ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়টি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে অন্তর্ভূক্ত ছিল। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রম বর্তমান সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরে মানবতাবিরোধী অপরাধীদের অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করার জন্য ২০১০ সালের ২৫ মার্চ অফিসিয়াল গ্রেজেটের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা করা হয়। তিনি আরও বলেন, ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে অদ্যবধি ২৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। এর মধ্যে মোট ৫৯ জন আসামীকে মানবতাবিরোধী বিভিন্ন অপরাধের দায়ে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৭ জনকে মৃত্যুদন্ড এবং বাকিদের যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামীদের মধ্যে ৬ জনের মৃত্যুদন্ড ইতোমধ্যে কার্যকর করা হয়েছে। বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে ৩৩টি মামলা বিচারাধীন আছে। এইভাবে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর মানবতাবিরোধী অপরাধের মত ঘৃণ্য একটি অপরাধের অপরাধী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিচার করার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠা ও সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের সাজা কার্যকর করার মাধ্যমে সারা বিশ্বে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার একটি নজীরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। সংসদ নেতা বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার দেশের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। অপরাধ করে কেউ যাতে পার পেয়ে না যায় এবং বিচার এড়াতে না পারে সেজন্য বিচার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করার মাধ্যমে অপরাধীদের প্রচলিত আইনে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিয়ে বিচার কার্যক্রম পরিচালনা করে বিচার নিশ্চিত করে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এটি বর্তমান সরকারের আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার পূরণের একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। নানা পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ সরকার দেশে আইনের শাসন নিশ্চিত করার নিমিত্ত কাজ করে যাচ্ছে। সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম আখতার জাহানের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একটি জ্ঞানভিত্তিক উৎপাদনশীল সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রয়াসের ধারাবাহিকতায় দেশের ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি এবং শিক্ষার্থী ঝরে পড়া রোধ করার জন্য আওয়ামী লীগ সরকার বিগত মেয়াদে ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে ২০১০ হতে ২০১৩ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত প্রথম শ্রেণী থেকে ৯ম শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে। তিনি জানান, পরবর্তীতে ২০১৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদেরও এ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে। ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে ২০১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত গত ৯ বছরে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, ইবতেদায়ি, মাধ্যমিক, দাখিল, দাখিল (ভোকেশনাল) ও এসএসসি (ভোকেশনাল) স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে সর্বমোট ২৫৯ কোটি ৭৯ লাখ ২২ হাজার ৯০২ কপি পাফ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ১ কোটি ৬ লাখ ৬৮ হাজার ৩৮৮টি শিক্ষক নির্দেশিকা সরবত ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৯৮৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এছাড়া ২০১৮ সালের ১ জানুয়ারি ৩৫ কোটি ৪২ লাখ ৯০ হাজার ১৬২টি বই বিতরণ করা হয়েছে। দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল বই, নৃগোষ্ঠিদের জন্য তাদের ভাষায় বইও দেয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী ২০৪১ সাল পর্যন্ত বিদ্যুত উৎপাদনের মহাপরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে বলেন, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের দুই মেয়াদে বিদ্যুত খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে গ্রহণ করেছে। বর্তমান সরকার ২০২১ সালের মধ্যে ২৪ হাজার মেগাওয়াট এবং ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। ফজিলাতুন নেসা বাপ্পির প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মাণ আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। বাংলাদেশ সরকার সাশ্রয়ী ও পরিবেশ বান্ধব উপায়ে বিদ্যুত উৎপাদনের লক্ষ্যে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। আগামী ২ মাসের মধ্যে পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের ফাউন্ডেশন ঢালাইয়ের কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিদ্যুত কেন্দ্রের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিশেষভাবে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এই কেন্দ্রে ব্যবহৃত পারমাণবিক জ্বালানী রাশান ফেডারেশন ফেরত নেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে যে, আগামী ২০১৩ সালের মধ্যে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্র হতে পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যুত উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হবে। আর ২০২৪ ও ২০২৫ সালে বিদ্যুত কেন্দ্র দুটি হতে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুত উৎপাদন শুরু হবে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য বজলুল হক হারুনের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, ২০০৩-০৪ সালে একজন মুক্তিযোদ্ধা ভাতা যেখানে ছিল মাত্র ৩শ’ টাকা, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তা বৃদ্ধি করে দুই লাখ মুক্তিযোদ্ধাকে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেয়া হচ্ছে।
×