ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ভালো নেই মেধবী প্রতিবন্ধী জাকারিয়ার পরিবার

প্রকাশিত: ২২:০৬, ৯ জানুয়ারি ২০১৮

ভালো নেই মেধবী প্রতিবন্ধী জাকারিয়ার পরিবার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর ॥ প্রতিবন্ধীতা দমাতে পারেনি মাদারীপুরের জাকারিয়াকে। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ভালো ফলাফল অর্জন করেও হাঁসি নেই পরিবারে। সামনে আলোকিত পথ গড়ার প্রধান অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্রতা। এছাড়া জাকারিয়ার পরিবারে রয়েছে আরো তিনজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। পারিবারিক সুত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামের বাবুল হাওলাদারের বড় ছেলে এ. কে. এস. ডি. আদেল উদ্দিন হাওলাদার স্কুল এন্ড কলেজের ছাত্র জাকারিয়া হাওলাদার শারীরিক প্রতিবন্ধী। এবারের জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। গত শনিবার ফলাফল দিলে সে জিপিএ-৩.৩৬ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়েছে। কিন্তু আগামী দিনে পড়াশুনা নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় রয়েছে। জাকিরয়ার সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাঁটতে না পারায় তার স্কুলে যেতে খুব সমস্যা হয়। কিন্তু পড়াশুনার প্রতি প্রবল ইচ্ছে ও আগ্রহ। নিজের পায়ে দাঁড়াতে না পারলেও পড়াশুনা করে ভালো কোন কাজ করে নিজে স্বাবলম্বী হতে চায়। তারা ৩ ভাই-বোনই শারীরিক প্রতিবন্ধী। এমনকি তার বাবাও শারীরিক প্রতিবন্ধী। তাদের সংসারে খাবারটুকুই যোগার করাই কষ্টকর। তবুও শারীরিক প্রতিবন্ধী তিন ভাই-বোনই পড়াশুনা করছে। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, গৃহকর্তা বাবুল হাওলাদার ও তার তিন সন্তানই শারীরিক প্রতিবন্ধী। জেলা শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিরখাড়া ইউনিয়নের কুচিয়ামাড়া গ্রামে তাদের বসবাস। বাবুল হাওলাদার সংসারের খরচ চালাতে ঢাকা শহরে ভিক্ষা করে যে আয় করে তা দিয়েই কোন রকম খেয়ে না খেয়ে চলে পরিবারটি। ছোট খুপড়ি ঘরে বাবুলের স্ত্রী ও চার সন্তানে থাকে। এর মধ্যে দুই ছেলে ও এক মেয়ে শারীরীক প্রতিবন্ধী। এদের হাত-পা কোমর চিকন হয়ে বাঁকা হয়ে গেছে। ফলে হাঁটাচলা করতে পারে না। এর মধ্যে বড় সন্তান জাকারিয়া স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণীর পরীক্ষায় ভালো ফলাফল করেছে। বাকি দু‘জন পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তাদের মা হুইল চেয়ারে করে বিদ্যালয়ে নেয়া-আনা করেন। আর্থিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ায় এদের শিক্ষাসহ জীবন ধারণ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। তাই সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার দাবী বাবুলে স্ত্রী জোসনা বেগমের। হুইল চেয়ার ছাড়া কোথাও যাওয়া আসা করতে পারে না এরা। শুধু বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা ছাড়া বাকি সময় ছোট খুপড়ী ঘরে বসে থাকতে হয়। এদের শিক্ষা জীবন নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে তাদের আত্মীয়-স্বজন। মাদারীপুর সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার মোঃ শফিউর রহমান বলেন, পরিবারটি প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছে।’ সমাজের বিত্তবানদেরও এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি। সমাজের বিত্তশালীরা এসব অসহায় পরিবারের পাশে দাঁড়ালে এরাও সমাজের বোঝা না হয়ে সম্পদ হতে পারে।
×