ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

রাখাইন রাজ্যের বর্বরতার কথা শুনলেন জর্ডানের রানী

প্রকাশিত: ২৩:৩৮, ২৩ অক্টোবর ২০১৭

রাখাইন রাজ্যের বর্বরতার কথা শুনলেন জর্ডানের রানী

জনকণ্ঠ রিপোর্ট ॥ রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের হত্যাযজ্ঞ ও নির্যাতনের কথা শুনেছেন জর্ডানের রানী রানিয়া আল আব্দুল্লাহ। কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করার সময় তিনি রোহিঙ্গাদের অমানবিক নির্যাতনের কাহিনি শুনেন এবং তিনি রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্মম নির্যাতনের নিন্দা জানান। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ যে মানবিকতা দেখিয়েছে, তারও প্রশংসা করেন রানী রানিয়া। রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির পরিদর্শন করে বলেছেন, ন্যায় বিচারের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসীর দাঁড়ানোর উচিত। ইন্টারন্যাশনাল রেসকিউ কমিটির (আইসিআর) পর্ষদ সদস্য ও জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থাগুলোর একজন দূত হিসেবে রানী রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শনে এসেছেন। তিনি তার অভিজ্ঞতার কথা বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরবেন যাতে দুর্দশায় থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য জরুরি সহায়তার পরিমাণ দ্রুত বাড়ানো সম্ভব হয়। সোমবার উখিয়ার কুতুপালংয়ে রোহিঙ্গাদের দেখতে এসে রানি বলেন, “কেবল মানবিক কারণে নয়, ন্যায় বিচারের স্বার্থে রোহিঙ্গাদের পাশে বিশ্ববাসীর দাঁড়ানোর উচিত।” জর্ডানের রানী বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী জাস্টিস অব ল’প্রতিষ্ঠা হলেও মিয়ানমার কোনো কিছুতেই তা মানছে না। মিয়ানমারের ওপর চাপ প্রয়োগ করে রোহিঙ্গাদের নির্যাতন বন্ধ ও তাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে বাধ্য করতে এখনই ব্যবস্থা নিতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি তিনি আহ্বান জানিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রশংসা করে রানী রানিয়া বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও এ দেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে মানবিকতা দেখিয়েছে তা বিশ্বের ইতিহাসে উদাহারণ হয়ে থাকবে। গত অগাস্টের শেষ দিকে মিয়ানমারে নতুন করে সেনা অভিযান শুরুর পর পৌনে ছয় লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। রানী বলেন, “রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর পরিচালিত এই জাতিগত নিধন বিশ্বের সবচেয়ে জঘন্যতম, বর্বরতম ঘটনা। এই গণহত্যার বিরুদ্ধে বিশ্ববাসীকে স্বোচ্চার হতে হবে।” বেলা ১১টার দিকে বিমানে করে ঢাকা থেকে কক্সবাজার আসেন রানী। এরপর কুতুপালং শরণার্থী শিবিরে গিয়ে কয়েকটি জায়গা ঘুরে দেখার পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। পর্যবেক্ষণ করেন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোর কার্যক্রম। শিবির পরিদর্শন শেষে তিনি কুতুপালং আইওএম-এর অস্থায়ী হাসপাতালে সংবাদ সম্মেলনে অংশ নিয়ে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের প্রশংসা করেন। জেনেভায় সোমবার অনুষ্ঠেয় বৈঠকে রোহিঙ্গাদের জন্য পর্যাপ্ত মানবিক সহায়তা পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম চৌধুরী, মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তাক আহমদ চৌধুরী, জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিরাজুল মোস্তফাসহ জর্দান দূতাবাস ও আন্তর্জাতিক সংস্থার কর্মকর্তারা রানীর সঙ্গে ছিলেন।
×