ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০

গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক এ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ শীর্ষক বৈঠক

সরকার শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব দিয়েছে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশিত: ০৬:০৯, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭

সরকার শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্ব  দিয়েছে ॥ প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার সরকার অর্থনীতি ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে শ্রমিক অধিকারের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘মানবাধিকার এবং শ্রমিকের অধিকারের সুরক্ষায় আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের কারণে আমরা অর্থনীতি ও সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে শ্রম অধিকার রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি।’ সোমবার সন্ধ্যায় কনভেইন কনফারেন্স সেন্টারে গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক এ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের ফলোআপ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। খবর বাসসর। সুইডেনের সহায়তায় গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক উন্নয়নের কার্যক্রমের উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত হলে যথাযোগ্য চাকরির সংস্থান এবং শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। শেখ হাসিনা বলেন, সোস্যাল ডায়ালগ এবং হারমোনিয়াস ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিলেশন্স প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ব্যাপক প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের আওতায় ‘বেটার ওয়ার্ক প্রোগ্রাম’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরএমজি খাতের শ্রম ইস্যুসমূহ সমাধানে কার্যকর ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদ গঠন করা হয়েছে। সম্প্রীতিপূর্ণ শিল্প সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশের শ্রম খাতে সামাজিক সংলাপে সহায়তার লক্ষ্যে সরকার, শ্রমিক নেতা, ব্যবসায়ী সম্প্রদায় ও মালিকদের সমন্বয়ে এই পরামর্শক পরিষদ গঠিত হয়েছে। গত বছরের গ্লোবাল ডিল ফর ডিসেন্ট ওয়ার্ক এ্যান্ড ইনক্লুসিভ গ্রোথ বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক শ্রমিক পরিস্থিতির অগ্রগতি এবং এ ক্ষেত্রে সামাজিক সংলাপ জোরদারে ভবিষ্যত প্রচেষ্টার লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত হয়। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টেফান লোফেন, আইএলও মহাপরিচালক গাই রেডার ও অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) মহাসচিব এ্যাঞ্জেল গুররিও অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন। শেখ হাসিনা বলেন, গত নয় বছর ধরে বাংলাদেশ গণতন্ত্র শক্তিশালীকরণের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের নিরলস প্রচেষ্টায় আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অসামান্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার শ্রম আইনে পরিবর্তন এনে তা ‘শ্রমিকবান্ধব আইনে পরিণত করেছে, যা কর্মপরিবেশের উন্নয়নে অবদান রাখছে।’ শেখ হাসিনা বলেন, পোশাক শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি গত পাঁচ বছরে তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে শ্রমিকদের উন্নত জীবন-জীবিকা এবং কর্মপরিবেশ ও তাদের উপার্জনের স্থিতি নিশ্চিত হয়েছে। তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমুখী পদক্ষেপের সুবাদে নাগরিকদের মাথাপিছু আয় গত নয় বছরে অন্তত তিনগুণ বৃদ্ধি এবং দারিদ্র্য দূরীকরণেও উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। শেখ হাসিনা শিল্প সম্পর্কের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে কার্যকর সংলাপ, শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়ন এবং শ্রমবাজারের অংশীদারদের মধ্যে সমান সুযোগ সৃষ্টির প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, শ্রম অধিকার ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে শিল্পসংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যে কার্যকর সংলাপ অত্যন্ত জরুরী। তিনি বলেন, এই দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশ জাতীয় ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক পরিষদের (টিসিসি) মতো ত্রিপক্ষীয় ফোরাম গঠন করেছে যা অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা পালন করছে। শেখ হাসিনা বলেন, শ্রমিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি ও নিয়োগদাতা এবং সরকারের প্রতিনিধি একত্রে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করেন এবং সেখানে সরকার সহায়তাকারীর ভূমিকা পালন করে। দক্ষতার উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সামাজিক উন্নয়ন শ্রমশক্তির উৎপাদন সক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে। দক্ষতা উন্নয়ন উৎপাদনশীলতার মূল হওয়ায় বাংলাদেশ শ্রমশক্তির দক্ষতা উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, চলমান সব দক্ষতা উন্নয়ন কার্যক্রম সমন্বয়ের মাধ্যমে সার্বিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে ন্যাশনাল স্কিলস ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (এনএসডিএ) মতো অনেকগুলো যুগোপযোগী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুব্যবসায়িক রীতির চর্চা ছাড়া অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়। তিনি বলেন, অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির উন্নয়নে গ্লোবাল ডিল স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং এতে শ্রমবাজারের সকল অংশীদারদের সমান সুযোগ সৃষ্টির কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, দায়িত্বশীল ব্যবসায়িক আচরণ হচ্ছে ‘টেকসই শ্রম অনুশীলন জোরদারে আমাদের প্রচেষ্টা।’
×