ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১

যাত্রীবেশী চার ছিনতাইকারী মিলে এএসপি মিজানুর রহমানকে হত্যা করেছে

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ২৩ জুলাই ২০১৭

যাত্রীবেশী চার ছিনতাইকারী মিলে এএসপি মিজানুর রহমানকে হত্যা করেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ যাত্রীবেশী চার ছিনতাইকারী মিলে হাইওয়ে পুলিশের সহকারী কমিশনার (এএসপি) মিজানুর রহমান তালুকদারকে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় শাহ আলম (৬২) নামের এক ছিনতাইকারীকে গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে চাঞ্চল্যকর এ তথ্য দিয়েছে। রবিবার ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারের এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ প্রধান মনিরুল ইসলাম এ তথ্য জানান। অতিরিক্ত পুলিশ প্রধান মনিরুল ইসলাম জানান, শনিবার গভীররাতে গাজীপুরের টঙ্গি এলাকা থেকে শাহ আলমকে গ্রেফতার করা হয়। মনিরুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলম ওরফে আলম ওরফে বুড্ডা জানিয়েছে, তার সহযোগী মিন্টু, কামাল ওরফে ফারুক ও জাকির ২১ জুন ফজরের আজানের পর উত্তরার তিন নম্বর সেক্টরে একটি মসজিদের পাশে প্রাইভেটকারে যাত্রী বেশে বসে ছিল। এসময় মিজানুর রহমান ওই পথ দিয়ে যাওয়ার সময় তারা তাকে উঠতে বলে। এএসপি মিজান উঠার পর ফারুক বুঝতে পারে তিনি (মিজান) সরকারি লোক। তখন ফারুক পালানোর জন্য গাড়ি থেকে নেমে যায়। মিন্টু বলে তুই এভাবে পালিয়ে বাঁচতে পারবি। তখন ফারুক আবারও গাড়িতে উঠে। মনিরুল জানান, শাহ আলম জানিয়েছে চালকের আসনে ছিল জাকির। আর সে সামনে বসা ছিল। এ অবস্থায় তারা গাড়িতে গান বাজিয়ে ও লাইট বন্ধ করে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে জসীম উদ্দিন রোড হয়ে প্রথমে হাউজ বিল্ডিং পরে উত্তরা ১০ নম্বর সেক্টরের দিকে যায়। তখন গাড়ির পেছনের সিটে বসা মিন্টু এএসপি মিজানের মাথায় লাঠি দিয়ে জোরে আঘাত করে। অন্ধকারে গাড়ির পেছনে বসা ফারুক ও মিন্টু ফিসফিস করে কথা বলছিল আর এএসপি মিজানের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করছিল। একজন এএসপি মিজানকে প্রাইভেটকারে থাকা ঝুট কাপড়ের টুকরা দিয়ে গলা পেঁচিয়ে ধরে থাকে। কিছুক্ষণ পর কোনও সাড়া-শব্দ না পেয়ে তারা ভয় পেয়ে যায়। টহল পুলিশের ভয়ে মেইন রোড ব্যবহার না করে ১০ নম্বর সেক্টর থেকে গলি পথ ধরে বেড়িবাঁধ এলাকায় পৌঁছে। বিরুলিয়া ব্রিজের আগেই রাস্তায় বাম পাশে ঘন গাছপালা দেখে জাকির গাড়ি থামায়। মিন্টু ও ফারুক দ্রুত মিজানকে মৃত অবস্থায় গাড়ি থেকে নামিয়ে রাস্তার বাম পাশে রেখে সবাই গাড়িতে উঠে চলে যায়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম কমিশনার (ডিবি) আবদুল বাতেন ও ডিএমপির উপ-কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উল্লেখ্য, গত ২১ জুন রাজধানীর রূপনগর থানার মিরপুর বেড়িবাঁধের বোটক্লাব এলাকার রাস্তার পাশ থেকে এএসপি মিজানুর রহমান তালুকদারের (৫০) লাশ উদ্ধার করা হয়। ওইদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয়রা একটি ঝোঁপে তার মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। খবর পেয়ে ডিএমপির রূপনগর ও সাভার থানা পুলিশ সেখানে গিয়ে তার লাশ উদ্ধার করে। পরে রাত ১০টার দিকে এএসপি মিজানুর রহমান হত্যার ঘটনায় হত্যা মামলা দায়ের করেন নিহতের ছোট ভাই মাসুম তালুকদার। অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন তিনি। রূপনগর থানায় দায়ের করা মামলা নম্বর১৯। পর মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবিতে) স্থানান্তর করা হয়। মামলাটি ঢাকা মহানগর পুলিশ (পশ্চিম) তদন্ত করছে।
×