ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামাঞ্চলে নারী মাত্র ৮% উৎপাদনশীল সম্পদের মালিক ॥ এডিবি

প্রকাশিত: ০২:৩৩, ১৭ জুলাই ২০১৭

গ্রামাঞ্চলে নারী মাত্র ৮% উৎপাদনশীল সম্পদের মালিক ॥ এডিবি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বৃদ্ধিতে অবকাঠামো প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য সম্ভাবনা রয়েছে। জেন্ডার সমতা উন্নয়নে সরকারের যে প্রচেষ্টা চলমান, তাতেও অবকাঠামো প্রকল্পের অবদান রাখার সুযোগ আছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ‘সাপোর্ট ফর জেন্ডার এন্ড ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক মূল্যায়ন প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে। এডিবির স্বাধীন মূল্যায়ন বিভাগ প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। সোমবার এডিবির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ সংক্রান্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২০০৫-২০১৫ সালের মধ্যে বাংলাদেশে জেন্ডার সমতা ও উন্নয়নের জন্য এডিবি'র যে সমর্থন মূলত সেটিরই মূল্যায়ন করা হয়েছে। এসময়ে অবকাঠামো প্রকল্পে এডিবির সমর্থন উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এসময় বাংলাদেশ এডিবির কাছ থেকে ৯ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি পেয়েছে, যার মধ্যে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্যই ছিল ৫ বিলিয়ন ডলার। গত এক দশক ধরে এডিবি বাংলাদেশে মূলত নতুন রাস্তা নির্মাণ, বিদ্যুত গ্রিড সম্প্রসারণ এবং পানি সরবরাহের উন্নতিসাধন সংক্রান্ত প্রকল্পে সহায়তা দিয়ে আসছে। মূল্যায়নে প্রতিবেদনে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, এসব প্রকল্প আপনা আপনি নারীর জন্য ভাল জীবনযাত্রার সুযোগ বা জেন্ডার সমতার সুযোগ তৈরি করে দেয়নি। বরং এসব প্রকল্পের বিভিন্ন স্তরে নারীর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। উদাহরণস্বরুপ, ২০৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিতীয় গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে। প্রকল্পের আওতায় ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং রাজশাহী বিভাগের সড়কগুলির উন্নতির পাশাপাশি সড়কসংলগ্ন বাজারে মহিলাদের জন্য পৃথক দোকান নির্মাণ, দোকান পরিচালনার ক্ষেত্রে মহিলাদের অভ্যন্তরীণ সুযোগ বৃদ্ধি এবং অন্যান্য আয়-উৎপাদক দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ দেয়া হয়েছে। সড়ক উন্নয়নের ফলে স্কুলে মেয়েদের অংশগ্রহণ বেড়েছে এবং কর্মক্ষেত্রে নারীদের নিরাপদ ও সহজ যাতায়াত নিশ্চিত করেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত এক দশকে বাংলাদেশে এডিবি-সমর্থিত অবকাঠামো প্রকল্পগুলি জেন্ডার সমতা উন্নযনের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর ছিল। বিশেষ করে নারীর শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নীত করা এবং তাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন উন্নয়নে এগুলো সাহায্য করেছে। মূল্যায়নে পাওয়া গেছে, বাংলাদেশে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্য হ্রাসের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে, যেখানে গত দশকে নারীর অবস্থা স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু নারীরা এখনো জীবিকা অর্জনের সুযোগে উচ্চতর বৈষম্য এবং অর্থনৈতিক সম্পদের মালিকানা অর্জনে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। সর্বশেষ প্রাপ্ত আনুমানিক হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে নারী মাত্র ৮% উৎপাদনশীল সম্পদের মালিক। পোশাক শিল্পের কারনে শ্রমিকশ্রেণির নারী অংশগহণ বাড়লেও শ্রম অভিবাসন এবং মাইক্রোফিনান্স প্রোগ্রামে নারীর অংশগ্রহণ আশানুরূপ নয়, যা ৩৪ শতাংশেরও কম। মূল্যায়নে প্রতিবেদনে এ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। জেন্ডার সমতা উন্নয়নে বাংলাদেশ সরকার ও এডিবি উভয়েই প্রতিশ্রুবদ্ধ। সপ্তম-পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এ বিষয়ে সরকারের বিস্তারিত কর্মপরিকল্পনার কথা বলা হয়েছে। মূল্যায়ন প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সরকার ও এডিবির যুথবদ্ধ উদ্যোগ গত এক দশকে জেন্ডার সমতা উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে। আগামীতেও এটি অব্যাহত থাকবে বলে প্রতিবেদনে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
×