ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশে ছয় বছরে ভ্রমণ করেছে ৩১ লাখ পর্যটক ॥ পর্যটনমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২১:৫২, ১৯ জুন ২০১৭

বাংলাদেশে ছয় বছরে ভ্রমণ করেছে ৩১ লাখ পর্যটক ॥ পর্যটনমন্ত্রী

সংসদ রিপোর্টার ॥ বিগত ৬ বছরে ৩১ লাখ ২২ হাজার ৭৫৬ জন পর্যটক বাংলাদেশ ভ্রমণ করেছে বলে জানিয়েছেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এতথ্য জানান। তিনি আরো জানান, বিদেশী সংস্থার সুপারিশের ভিত্তিতে দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা আধুনিক ও উন্নত করা হয়েছে। সরকারি দলের সদস্য সামশুল হক চৌধুরীর প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, ২০১০ সালে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৫ জন, ২০১১ সালে ৫ লাখ ৯৩ হাজার ৬৭৭ জন, ২০১২ সালে ৫ লাখ ৮৮ হাজার ১৯৩ জন, ২০১৩ সালে ২ লাখ ৭৭ হাজার ৫৯৬ জন, ২০১৪ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৫৩১ জন এবং ২০১৫ সালে ৬ লাখ ৪৩ হাজার ৯৪ জন পর্যটক বাংলাদেশে এসেছে। তিনি জানান, বিদেশী পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে বর্তমান সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। বিদেশী ট্যুর অপারেটর বা পর্যটন বিষয়ক সাংবাদিক বা লেখক বাংলাদেশে পরিচিতিমূলক ভ্রমণে নিয়ে আসার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ট্যুর অপারেটরগণ যাতে সম্ভাবনাময় সোর্স দেশগুলোর ট্যুর অপারেটরদের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে সে লক্ষ্যে বিজনেস টু বিজনেস সভার আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়া ডিজিটাল ও অনলাইন মাধ্যমে বাংলাদেশে ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য যাতে পর্যটকগণ সহজে পেতে পারেন সে লক্ষ্যে ওয়েবসাইট হালনাগাদ করা হচ্ছে। একই প্রশ্নের জবাবে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, দেশী-বিদেশী পর্যটকদের জন্য ‘ভিসা অন এরাইভেল’র পরিধি বাড়িয়ে আরো বেশ কয়েকটি দেশকে অন্তর্ভুক্ত করতে সেমিনার আয়োজন করা হচ্ছে। বিটিভি নির্মিত প্রামাণ্য চিত্র এবং টিভিসি দেশের পর্যটন বিপণনে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সাফল্য অর্জন করেছে। তিনি আরো জানান, দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিরাপত্তার জন্য ট্যুরিস্ট পুলিশ গঠন করা হয়েছে। গত ২০১৬ সালের ২৩ থেকে ২৫ নভেম্বরে কক্সবাজার সফলভাবে ‘পাতা নিউ ফ্রন্টিয়ার্স ফোরাম-২০১৬’ আয়োজন করার ফলে পর্যটন দেশ হিসেবে বাংলাদেশের পরিচিতি বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়া দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিকট বাংলাদেশের বিভিন্ন পর্যটন আকর্ষণ তুলে ধরতে সম্প্রতি একটি ভিডিও চিত্র তৈরী ও প্রচার করা হচ্ছে। বিমান বন্দরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত ॥ সরকারী দলের সংসদ সদস্য কামাল আহমেদ মজুমদারের প্রশ্নের জবাবে বিমান মন্ত্রী সংসদে জানান, বিমান বন্দরের উন্নয়নে আধুনিক যন্ত্রপাতিসহ ডুওয়াল ভিউ এক্স-রে মেশিন স্থাপন করা হয়েছে। ব্রিটিশ সংস্থা রেডলাইনের সুপারিশের ভিত্তিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে উন্নত করা হয়েছে। এছাড়া চোরাচালান রোধে বিমানবন্দর সমূহের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে বিমানবন্দরে বিভিন্ন স্থাপনায় সিসিটিভি স্থাপন করা হয়েছে। মন্ত্রী আরো জানান, বিমান বন্দরে নিরাপত্তার বিষয়টি একটি সমন্বিত কার্যক্রম যাতে সিভিল এভিয়েশন, বিমান, এপিবিএন, আনসার ইমেগ্রেশন এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা যেমন ডিজিএফআই, ইউকে রেডলাইন সিকিউরিটি, দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট এবং এনএসআই সম্মিলিতভাবে অংশগ্রহন করে থাকে। এ বিষয়ে একটি সমন্বিত সভা প্রতিমাসে অনুষ্ঠিত হয়। বিমান বন্দরের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন ইস্যুসমূহ নিয়ে আলোচনা হয়। সে মোতাবেক প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহন করা হয়ে থাকে। একই প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিমানবহর আধুনিকায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এজন্য বিমানের পুরাতন এ২৮ ও ডিসি ১০-৩০ উড়োজাহাজ ফেউজ আউট করা হয়েছে। ৩১০-৩০০ উড়োজাহাজ ফেউজ আউট করার লক্ষ্যে গ্রাউন্ডেট করা হয়েছে। বোয়িং কোম্পানীর কাছ থেকে নতুন প্রজন্মের ৪ টি ৭৭৭-৩০০ ইআর উড়োজাহাজ ২০১১/২০১৪ সালে ও ২ টি ৭৩৭ ৮০০ উড়োজাহাজ ২০১৫ সালে বিমানবহরে সংযোজনের মাধ্যমে বহর আধুনিকায়ন করা হয়েছে। ফলে বিমানের উড়োজাহাজের রক্ষনাবেক্ষণ ও মেরামত ব্যয়সহ জ্বালানী খরচ কমেছে। দুই অর্থ বছরে লাভ ৬শ’ কোটি টাকা ॥ সরকারী দলের বেগম সফুরা বেগমের প্রশ্নের জবাবে বিমান মন্ত্রী জানান, বিগত ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ৬০০ কোটি ১২ লাখ ৩৩ হাজার টাকা লাভ করেছে। এরমধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে ৩২৪ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা এবং ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ২৭৫ কোটি ৯৮ লাখ ৯৮ হাজার টাকা লাভ করেছে।
×