ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

কলকাতার বার এখন শুধু ডান্সবার

প্রকাশিত: ১৯:০৮, ২৭ মার্চ ২০১৭

কলকাতার বার এখন শুধু  ডান্সবার

অনলাইন ডেস্ক ॥ এ শহরে হাতেগোনা কয়েকটি বার ছিল কয়েকদশক আগে। তার কয়েকটিতে গানবাজনাও হতো। সেখান থেকে সংগীত-ব্যক্তিত্বদের উত্থানের খবরও সকলের জানা। এখন তেমন কিছু ঘটে না। কারণ, বার এখন আর শুধু বার নয়! আদতে ডান্সবার। কলকাতা, সন্নিহিত মফস্সল এলাকা, ভিআইপি রোড ধরে বাগুইআটি থেকে দমদম বিমানবন্দর, মায় মধ্যমগ্রাম-ব্যারাকপুর, ডান্সবারই এখন সাঁঝের আসর, রাতের মজলিশ। অধিকাংশ ডান্সবারেই একাধিক ফ্লোর। একাধিক শিফট। দিনভর খদ্দেরের আনাগোনা। বলিউডি ছবির গানের সঙ্গে উদ্দাম নাচ। উড়তে থাকে তাড়া তাড়া নোট। তার সঙ্গে জড়িয়ে যায় যৌনব্যবসা, মারপিট, খুনের ঘটনা। রাজ্যআবগারি আইনের ২৩৯ নম্বর ধারা মোতাবেক জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার বা আবগারি কালেক্টরের অনুমতি ছাড়া পানশালায় লাইভ গান-নাচ-বাজনা বা কোনও রকমের বিনোদনমূলক আয়োজন নিষিদ্ধ। সারাবছর লাইভ গানবাজনার জন্য আগে ক্রুনার লাইসেন্স নিতে হতো। গায়ক-বাদকের ছবিসহ পরিচয় থাকত প্রশাসনের কাছে। এখন সেসব হয় না। এখন সিঙ্গিং বারের অনুমতি দেওয়া হয়। পানশালায় নাচের অনুমতি দেওয়া হয় শুধু বছরের নির্দিষ্ট সময়ে। যেমন, বর্ষশেষের বিনোদন-আয়োজন। বাকি সময়ে নাচের অনুমতি নেই পানশালায়। কিন্তু বাস্তব হল, শহর-শহরতলি জুড়ে গিজগিজ করছে যেসব বার, বছরভর তারা ডান্সবারই। বাগুইআটির একটি ডান্সবারের গা-ঘেঁষা বাড়ির বাসিন্দার অভিযোগ, সকলেই সব জানেন। কিন্তু কেউ কিচ্ছু জানেন না। এই তত্ত্বের উপর দাঁড়িয়েই ডান্সবারের এই রমরমা! ছেলেমেয়ে নিয়ে বাস করাই দায়! বিধাননগর সিটি পুলিশের ডিসি (সদর) সি সুধাকর বলছেন, ডান্সবার বেআইনি। গানের অনুমতি দেওয়ার বিষয়টি আবগারি দফতরের এক্তিয়ারভুক্ত। আমাদের কাছে এনওসি চাওয়া হয়। আমরা অনেক ক্ষেত্রে আপত্তিও জানাই। বারের আশপাশে যাতে শান্তি বজায় থাকে, সেজন্য টহলদারি চলে। নির্দিষ্ট সময় বার বন্ধ হচ্ছে কি না, তাও নজরে রাখা হয়। প্রায় একই বক্তব্য কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (৩) সুপ্রতিম সরকারের। তিনি বলছেন, সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বার খোলা রাখলে আমরা -মালিককে গ্রেফতার করি। রিপোর্ট যায় আবগারি দফতরেও, যাতে লাইসেন্স পুনর্নবীকরণের সময় অতীত রেকর্ড খতিয়ে দেখা হয়। এ সবই সত্যি। প্রশাসনের নজরদারি অবশ্যই আছে। অতিরিক্ত সময় পানশালা খুলে রাখার জন্য মোটা অর্থের বিনিময়ে নিতে হয় বাড়তি অনুমতি। তবে, আদতে এসবের তোয়াক্কা না-করেই শহরের কিছু কিছু এলাকায় মধ্যরাত ছাপিয়ে চলে ডান্সবার। নিয়ম ভাঙাটাই এখন পানশালা-বাণিজ্যের নিয়ম!
×