ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা মোহামেডান ৩-০ গোলে পরাজিত

ইস্ট বেঙ্গল ফাইনালে

প্রকাশিত: ০৫:৪৮, ২৯ অক্টোবর ২০১৫

ইস্ট বেঙ্গল ফাইনালে

রুমেল খান, চট্টগ্রাম থেকে ॥ চট্টলাবাসীদের একান্ত চাওয়া ছিল ‘শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্লাব কাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট’-এর ফাইনালে খেলবে বাংলাদেশেরই দুটি ক্লাব। প্রথম সেমিতে আফগানিস্তানের ডি স্পিন ঘার বাজান ফুটবল ক্লাবকে হারিয়ে চট্টগ্রাম আবাহনী ফাইনালে উঠে অর্ধেক প্রত্যাশা পূরণ করে। বাকি অর্ধেক প্রত্যাশা পূরণের দায়িত্ব ছিল ঢাকা মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেডের। কিন্তু সেটা পূরণে নিদারুণ ব্যর্থ হয়েছে তারা। মাঠের বাইরে আগে থেকেই নানা কারণে ক্লান্ত-বিধ্বস্ত ছিল তারা। বুধবার এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের মাঠেও রীতিমতো বিধ্বস্ত হলো ‘ব্ল্যাক এ্যান্ড হোয়াইট’রা। অদম্য মনোবল, স্বদেশী সমর্থন আর ঐতিহ্যবাহী জার্সির ভারকে সম্বল করেও জিততে পারল না বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী এই ক্লাবটি। তারা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে ভারতের কিংফিশার ইস্ট বেঙ্গলের কাছে ৩-০ গোলে হেরে। এই টুর্নামেন্টের এখন পর্যন্ত একমাত্র অপরাজিত দল ইস্ট বেঙ্গল আগামী ৩০ অক্টোবর ফাইনালে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের। এই টুর্নামেন্টে আফগানিস্তানের ডি স্পিন ঘার বাজান ফুটবল ক্লাবের কাছে ১-০ গোলে হেরে ধাক্কা খেয়েছিল পরাভূত হয় ঢাকা মোহামেডান। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য তারা শ্রীলঙ্কার সলিড এসসিকে ৬-১ গোলে হারিয়ে ঘুরে দাঁড়ায়। তৃতীয় ম্যাচে তারা ২-১ গোলে হারায় কলকাতা মোহামেডানকে। সেই সঙ্গে ‘এ’ গ্রুপের রানার্সআপ হিসেবে সেমিতে নাম লেখায়। পক্ষান্তরে ‘বি’ গ্রুপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইস্ট বেঙ্গল ২-১ গোলে চট্টগ্রাম আবাহনীকে হারিয়ে শুভসূচনা করে। পাকিস্তানের করাচী ইলেকট্রিককে ৩-১ গোলে হারায় দ্বিতীয় ম্যাচে। শেষ ম্যাচে তারা গোলশূন্য ড্র করে ঢাকা আবাহনীর সঙ্গে। সেই সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে উন্নীত হয় সেমিতে। ৭৯ বছরের পুরনো ক্লাব মোহামেডানকে হারিয়ে ১৯ বছরের একটি পুরনো হিসেব চুকাল ৯৫ বছরের পুরনো ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল। সেই ১৯৯৬ সালে তারা হেরেছিল ৩-১ গোলে মোহামেডানের কাছে, বঙ্গবন্ধু কাপে। বুধবার মোহামেডানকে পরাভূত করে প্রতিশোধটা কড়ায়-গ-ায় নিল তারা। বুধবার সেমির ম্যাচে মোহামেডান ছিল ক্লান্ত, বিধ্বস্ত একটি দল। দলের সাত খেলোয়াড়ই ছিলেন চোটগ্রস্ত ও অসুস্থ। জুয়েলের জন্ডিস। বিপুলের চোখে ইনফেকশন। সোহেল রানার মাথায় ১২ সেলাই। মোবারক, ইব্রাহিম, জীবন ও মনসুরের জ্বর। এত সমস্যা থাকলে কি কোন দল জিততে পারে? মোহামেডানও পারেনি। বলা যায়, তাদের নিয়ে ছেলেখেলাই করেছে ক্লাব ইস্ট বেঙ্গল। ম্যাচে নামার আগেই মানসিকভাবে যেন হেরে গিয়েছিল তারা! ইস্ট বেঙ্গলে যোগ দিতে মঙ্গলবার বাংলাদেশ উড়ে আসেন ডু দক্ষিণ কোরিয়ান ফরোয়ার্ড ডু ডং। তবে সেমির ম্যাচে তাকে খেলাননি কোচ বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য। তাতে জিততে কোন সমস্যা হয়নি (এই আসরে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে খেলতে গিয়ে চোট পেয়ে ভারতে ফিরে গিয়েছিলেন ডং)। ৩ মিনিটে ম্যাচের প্রথম আক্রমণটি অবশ্য মোহামেডানেরই। ডানপ্রান্ত দিয়ে অরূপের থ্রু পাস পেয়ে মোবারক প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে বক্সে ঢুকে মাইনাস করেন। তা থেকে জীবন পা ছোঁয়াতে পারেননি। ৫ মিনিটে মাসুক মিয়া জনির থ্রু মোবারক অরূপকে মাইনাস করেন। তার ক্রস জীবনের হেড পোস্টের পাশ দিয়ে বাইরে চলে যায়। ১০ মিনিটে ইস্ট বেঙ্গলের অবিনাশ রুইদাসের ক্রস মোহামেডানের ডিফেন্ডার মিন্টু শেখ বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হলে সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইস্ট বেঙ্গলের নাইজিরিয়ান ফরোয়ার্ড রন্টি মার্টিন্স গোল করেন (১-০)। ১৪ মিনিটে অরূপের বাড়ানো বল ফাঁকায় পেয়েও জালে জড়াতে ব্যর্থ হন জীবন। ৪৮ মিনিটে ইয়োন্টা মাইকেলের পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে তা জালে জড়িয়ে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন মোহাম্মদ রফিক (২-০)। ৫৮ মিনিটে তৃতীয় গোল করে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলে ভারতের ‘আই লীগ’ চ্যাম্পিয়নরা। ছোট বক্সে প্রল্লাদ রায়ের আলত চিপে মাথা ছু্্ঁইয়ে নিজের দ্বিতীয় গোলটি করেন (৩-০)। মোহামেডান ॥ আশরাফুল ইসলাম রানা, ইয়োন্টা মাইকেল, অরূপ কুমার বৈদ্য, নুরুল নাইয়ুম ফয়সাল, মিন্টু শেখ, মোবারক হোসেন, ফয়সাল মাহমুদ, নাবিব নেওয়াজ জীবন, আকিনইয়েলে পিটার, মাসুক মিয়া জনি, লামিনে কামারা।
×