ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

আইসিসি এলিট প্যানেলে বাংলাদেশী আম্পায়ার সৈকত

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৮, ২৯ মার্চ ২০২৪

আইসিসি এলিট প্যানেলে বাংলাদেশী আম্পায়ার সৈকত

কৃতী আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত

দারুণ গর্বের একটি বিষয়। ২৪ বছর ধরে টেস্ট ক্রিকেটে পদচারণা বাংলাদেশ দলের। আইসিসির পূর্ণাঙ্গ সদস্য পদও পেয়েছে। অনেক আম্পায়ারই এরপর আইসিসির তালিকাভুক্ত হিসেবে বাংলাদেশের ম্যাচগুলো পরিচালনা করেছেন। তবে কেউ এত বছরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) আম্পায়ারদের এলিট প্যানেলের সদস্য পদ পাননি।

এবার সেই গর্ব বয়ে এনেছেন ৪৭ বছর বয়সী শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত। বৃহস্পতিবার এক অফিসিয়াল বিজ্ঞপ্তিতে আইসিসির এলিট প্যানেলে আম্পায়ার হিসেবে সৈকতকে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে আইসিসি। এখন আইসিসির এলিট প্যানেলে ১২ জন আম্পায়ার আছেন। এমন একটি অর্জনের পর নিজেও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি), আইসিসি ও সহকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সৈকত। আইসিসির প্রধান নির্বাহী (সিইও) জিওফ অ্যালারডাইসও সৈকতকে অভিনন্দন বার্তা দিয়েছেন। 
নব্বইয়ের দশকে সৈকত ছিলেন ঘরোয়া ক্রিকেটের অন্যতম পারফর্মার। বাঁহাতি এই স্পিনার ‘এ’ দল ও জাতীয় দলের হয়েও খেলেছেন। ২০০৬ সালে আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেলের আম্পায়ার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন তিনি। অবশ্য ২০১০ সালে মিরপুরে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ওয়ানডে দিয়ে তার যাত্রা শুরু হয় আন্তর্জাতিক আম্পায়ারিংয়ে। পরের বছর বাংলাদেশ-পাকিস্তান ম্যাচ দিয়ে প্রথমবার আম্পায়ার হিসেবে দাঁড়ান টি২০ ক্রিকেটে। তবে টেস্ট ক্রিকেটে তার যাত্রা শুরু হয় বেশ বিলম্বে।

করোনা মহামারির সময় দুজন নিরপেক্ষ আম্পায়ারের বদলে একজন স্বাগতিক আম্পায়ারের ম্যাচ পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হয়। সেই সুবাদে ২০২১ সালে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ লড়াইয়ে আম্পায়ারিংয়ে তার টেস্ট অভিষেক হয়। সবমিলিয়ে ১৫ টেস্টের ১০টিতে ফিল্ড আম্পায়ার, ৫টি টিভি আম্পায়ার, ১০০ ওয়ানডের ৬৩টিতে ফিল্ড আম্পায়ার, ৩৭টিতে টিভি আম্পায়ার, ৬২ টি২০ ম্যাচের ৪৫টিতে ফিল্ড ও ১৭টিতে টিভি আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সৈকত।

এর মধ্যে চলতি বছর জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে অস্ট্রেলিয়া-ওয়েস্ট ইন্ডিজ দিবারাত্রির টেস্ট ম্যাচ পরিচালনা করে এলিট প্যানেলে যোগ হওয়ার বড় পরীক্ষাটা দিয়ে ফেলেন সৈকত এবং বাড়তি মর্যাদা বয়ে আনেন দেশের জন্য।
গত বছর ভারতে অনুষ্ঠিত ওয়ানডে বিশ^কাপে আইসিসির ইমার্জিং প্যানেলের আম্পায়ার হিসেবে ৫টি ম্যাচে ফিল্ড আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে তার নিখুঁত সিদ্ধান্ত দিয়ে সবার নজর কাড়েন। ২০২৩ পুরুষ বিশ্বকাপের আগে ২০১৭ ও ২০২১ সালে আইসিসির নারী বিশ্বকাপ, ২০১৮ সালে নারী টি২০ বিশ্বকাপে দায়িত্ব পালন করেন সৈকত। দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা এবং সম্প্রতিই এলিট প্যানেলের মারাইস ইরাসমাস অবসর নেওয়াতে তার সামনে দ্বার উন্মুক্ত হয়েছে।

আইসিসির আন্তর্জাতিক প্যানেল থেকে এবার এলিট প্যানেলে আম্পায়ার নির্বাচন করার জন্য যে নির্বাচক কমিটি কাজ করেছে তাতে ছিলেন আইসিসির ক্রিকেট মহাব্যবস্থাপক ওয়াসিম খান, সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার সঞ্জয় মাঞ্জেরেকার, সাবেক আম্পায়ার টনি হিল এবং বিশেষজ্ঞ পরামর্শক মাইক রাইলি। সৈকতকে অভিনন্দন জানিয়ে আইসিসির সিইও অ্যালারডাইস বলেছেন, ‘আইসিসি এলিট প্যানেলের আম্পায়ার হওয়ায় শরফুদ্দোউলাকে অভিনন্দন।

বাংলাদেশের প্রথম আম্পায়ার হিসেবে এ প্যানেলে আসার অর্জনের স্বীকৃতি দিতে চাই। অনেক বছর ধরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও আইসিসি টুর্নামেন্টে ধারাবাহিক পারফর্ম্যান্সের জন্য এটি তার প্রাপ্য পুরস্কার।’ এলিট প্যানেলে আছেন ১২ আম্পায়ার। ইংল্যান্ডের ৩, অস্ট্রেলিয়ার ২ জন করে এবং ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে একজন করে আম্পায়ার এই এলিট প্যানেলে আছেন। তাই উচ্ছ্বসিত সৈকত বলেছেন, ‘আইসিসির এলিট প্যানেলে নাম আসাটা দারুণ সম্মানের। আমাদের দেশের প্রথম ব্যক্তি বলে এটি আরও বিশেষ ব্যাপার। আমার ওপর যে আস্থা রাখা হয়েছে, তার প্রতিদান দিতে উন্মুখ হয়ে আছি।’

×