ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সবার আগে শেষ চারে ফিলিস্তিন

প্রকাশিত: ১১:৪৫, ১৮ জানুয়ারি ২০২০

সবার আগে শেষ চারে ফিলিস্তিন

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা শেষ। চতুর্থ অফিসিয়াল ভুটানের বীরেন্দ্র রায় ইলেকট্রনিক বোর্ড উঁচিয়ে ধরে সবাইকে দেখালেন ম্যাচের সংযুক্তি সময় ৬ মিনিট দেয়া হয়েছে। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে উপস্থিত দর্শকরা তখন বলাবলি করছে ফিলিস্তিন এত আক্রমণ আর এত চেষ্টা করেও কোন গোল করতে পারেনি, এখন আর এই ছয় মিনিটে কি আর গোল করবে? না, তাদের ধারণা ভুল ছিল। খেলা শেষ হওয়ার চার মিনিট আগে দু’দুটি গোল করে ফেললো ‘দ্য লায়ন্স অব ক্যানান’ খ্যাত ফিলিস্তিন। ছয় মিনিট পর মালয়েশিয়ান রেফারি তুয়ান মোঃ ইয়াসিন তুয়ান হানিফাহ্ খেলা শেষের বাঁশি বাজালে উল্লাসে ফেটে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির ফুটবলাররা। কেননা সবার আগে গ্রুপ (‘এ’) চ্যাম্পিয়ন হয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ আন্তর্জাতিক ফুটবল প্রতিযোতিার সেমিফাইনালে নাম যে লিখিয়েছে তারা। ম্যাচের প্রায় পুরোটা সময়ই ‘গোল্ডেন লায়ন’ খ্যাত শ্রীলঙ্কা নেতিবাচক ও রক্ষণাত্মক ফুটবল খেলে। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল এভাবে খেলেই অন্তত একটি পয়েন্ট হাসিল করা। আর সে লক্ষ্যে প্রায় পৌঁছেই গিয়েছিল তারা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তীরে এসে তরী ডুবিয়ে ফেলে তারা। শেষ মুহূর্তে জোড়া গোল হজম করে হতাশায় ভেঙ্গে পড়ে তারা। তাদের কোচ পাকির আলীর চেহারা দেখে মনে হচ্ছিল অধিক শোকে তিনি যেন পাথর বনে গেছেন। প্রথম ম্যাচে স্বাগতিক বাংলাদেশকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন। র‌্যাঙ্কিংয়ের বিচারে শ্রীলঙ্কার চেয়েও অনেক এগিয়ে তারা। ৯ মিনিটে দলীয় অধিনায়ক মিডফিল্ডার মোহাম্মদ আবু ওয়াদার পাসে বল পেয়ে ডান পায়ের শট নেন ফরোয়ার্ড মোসাব আবু সালেম। কিন্তু বল ফিরিয়ে দেন প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডার। ১৮ মিনিটে ফ্রি কিক থেকে বল পেয়ে বক্সে জোরালো হেড নিয়েছিলেন ফরোয়ার্ড রিবাল দাহামশি, কিন্তু বল চলে যায় বার ঘেঁষে। ৪০ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ওয়ারদার শট আটকে দেন এক ডিফেন্ডার। ৪৩ মিনিটে বক্সের খুব কাছেই লঙ্কান ফরোয়ার্ড রাজিক আহমেদকে বল নিয়ে যাবার মুহূর্তে ফেলে দেন ডিফেন্ডার ইয়াজান আইওয়াইয়ি। ফ্রি কিক পায় শ্রীলঙ্কা। রাজিকের ফ্রি কিক বারে লেগে ফেরত আসে। ফলে এগিয়ে যাবার সুযোগ হাতছাড়া হয় লঙ্কানদের। দ্বিতীয়ার্ধেও রক্ষণাত্মক খেলতে থাকে শ্রীলঙ্কা। ৫৬ মিনিটে বক্সের খুব কাছে আবু সালেমকে ফাউল করেন লঙ্কান ডিফেন্ডার। মিডফিল্ডার মোহামেদ দারউইশের ডান পায়ের ফ্রি কিক অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। পরের মিনিটেই বক্সে জটলার মধ্য থেকে জোরালো শট নেন আবু সালেম। বল ফিস্ট করেন গোলরক্ষক। ফিরতি বলে ফরোয়ার্ড রিবাল দাহামশি কোনাকুনি যে শটটি নেন সেটি বাঁ পোস্টে লেগে ফেরত আসায় নিশ্চিত গোল থেকে বঞ্চিত হয় টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ৭০ মিনিটে আরও একটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে ফিলিস্তিনের। একক প্রচেষ্টায় বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়ে ডান পায়ের গড়ানো শট নেন ফিলিস্তিনের মিডফিল্ডার দাউদ ইরাকি। কিন্তু গোলরক্ষক ফিস্ট করে কর্নারের বিনিময়ে এ যাত্রা দলকে রক্ষা করেন। ৮২ মিনিটে বক্সে বদলি ফরোয়ার্ড লাইথ খারুবের শট বাধাপ্রাপ্ত হয় লঙ্কার রক্ষণে। ইনজুরি টাইমে (৯০+২) কাক্সিক্ষত গোলের দেখা পায় ফিলিস্তিন। মিডফিল্ডার সামেহ মারাবার ক্রসে দারুণ হেডে লক্ষ্যভেদ করেন আবু ওয়ারদা (১-০)। কিছুক্ষণ পরই ৯৫ মিনিটে বল নিয়ে বক্সে ঢুকে পড়েন বদলি ফরোয়ার্ড খালেদ সালেম। এগিয়ে আসেন লঙ্কান গোলরক্ষক। ফাঁকা পোস্টে বল ঠেলে দিয়ে আনন্দে মাতেন খালেদ (২-০)।
×