ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

তিন ফুটবলারের বিরুদ্ধে বাফুফেতে অভিযোগ

প্রকাশিত: ১১:৪৯, ৬ নভেম্বর ২০১৯

তিন ফুটবলারের বিরুদ্ধে বাফুফেতে অভিযোগ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ লোভ নিয়ে দুটি প্রবাদ সবারই কম বেশি জানা। একটি হলো, ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু।’ আরেকটি হলো ‘অতি লোভে তাঁতি নষ্ট।’ ফুটবলাররাও মানুষ। তারাও ভুল করতে পারেন। লোভের ফাঁদে পা দিতে পারেন এবং দিয়েছেনও। আসন্ন নতুন ফুটবল মৌসুম শুরুর আগেই নিয়ম বহির্ভূতভাবে দুই বা একাধিক ক্লাব থেকেই অর্থ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। তবে সবাই এমনটা করেননি। সংখ্যাটা আপাতত তিন। এ নিয়ে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র অভিযোগ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে)। ইতোমধ্যেই আইনী নোটিস দেয়া হয়েছে তিন ফুটবলার রায়হান হাসান ও দুই সোহেল রানাকে। চুক্তি না হওয়ায় আপাতত কিছু করার নেই বলে জানিয়েছে বাফুফে। ঘরোয়া ফুটবলের সেই জৌলুস নেই। ফুটবলার কাড়াকাড়ির সর্বশেষ উদাহরণটাও বছর তিনেক আগে। ২০১৬ সালে ফুটবল ভবনে ঘটেছিল সেই ঘটনা। যা গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। আর একাধিক ক্লাব থেকে অর্থ নেয়ার অভিযোগ আগেও ছিল। আছে এখনও। এবার শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র অভিযোগ এনেছে তিন ফুটবলারের বিরুদ্ধে। ‘ট্র্যাজিক বয়’ সোহেল রানা নগদ আট লাখ টাকা ও সমপরিমাণের অগ্রিম চেক, ডিফেন্ডার রায়হান হাসান ও মিডফিল্ডার সোহেল রানাও নগদ ১০ লাখ টাকার সঙ্গে সমপরিমাণ অর্থের চেক নিয়েছেনÑ এমন অভিযোগ শেখ রাসেলের। তিনজনই এবার খেলতে চলেছেন ঢাকা আবাহনীতে। শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক সালেহ জামান সেলিম বলেন, ‘এরকম প্রতিবছরই খেলোয়াড়রা করে। আমার সঙ্গে, শেখ রাসেলের সঙ্গে অনেকবার করেছে। আমরা বারবার খেলোয়াড়দের দিকে তাকিয়ে আইনের কাছে যাইনি। তাতে দেখছি দিনের পর দিন এটা বেড়েই চলছে। তাই এবার আমরা আইনের আশ্রয়ে নিতে বাধ্য হয়েছি।’ ইতোমধ্যেই এই তিন ফুটবলারকে উকিল নোটিস দিয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র। অর্থ গ্রহণের বিষয়টি উল্লেখ করে ক্লাবে যোগ দেয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে। এই ফুটবলারদের পেতে আত্মবিশ্বাসী ক্লাব কর্তা। কিন্তু ফুটবলারদের তরফ থেকে মেলেনি সাড়া। সালেহ জামান সেলিম বলেন, ‘ইতোমধ্যে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা চলে আসছে এবং তাতে স্পষ্ট বলা আছে যে ওই তিন খেলোয়াড় শেখ রাসেল ছাড়া অন্য কোন দলের হয়ে খেলায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। এখন যেহেতু আইনে আসছে, তাই আইনের বাইরে ফুটবল ফেডারেশন কিছু করতে পারবে না।’ বাফুফেকে এই তিন ফুটবলারের দলবদল কার্যক্রম স্থগিত করার আবেদন করলেও আপাতত ফেডারেশনের কিছু করার নেই বলে জানিয়েছেন বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগ। তিনি বলেন, দলবদল যেহেতু এখনও চলমান প্রক্রিয়ায় রয়েছে, তাই এটা শেষ না হওয়া পর্যন্ত আসলে আমাদের কিছু করার থাকে না। আমরা শুধু কিছু এ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ কিছু কাজ করে রাখতে পারি। যেহেতু আমরা কিছু অভিযোগ পেয়েছি সেই ভিত্তিতে। তিন ফুটবলারের দু’জন ব্যস্ত ওমানে জাতীয় দলের সঙ্গে। তবে ক্লাবের আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে আইনী প্রক্রিয়ায় জবাব দেয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন তারা। তবে এ ব্যাপারে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রের পরিচালক সালেহ জামান সেলিম বলেন, ‘তারা যে আমাদের কাছ থেকে টাকা হ্রহণ করেছে, চেক এবং ক্যাশ, এগুলোর সব ডক্যুমেন্ট আছে।’ উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৩ সালে ছয় ফুটবলারের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠেছিল। এরা হলেনÑ জাহিদ হোসেন, শাকিল আহমেদ, মামুন মিয়া, নাহিদুল ইসলাম, শরিফুল ইসলাম ও মিঠুন চৌধুরী। প্রথম চারজন শেখ রাসেলের ফুটবলার ছিলেন। মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই মোহামেডান থেকে ১০ লাখ টাকা অগ্রিম নিয়ে চুক্তিপত্রে সই করেছিলেন। মোহামেডানের শরিফুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিলÑ তিনি নিজ ক্লাব থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে যোগ দিয়েছেন আবাহনীতে। শেখ রাসেলের মিঠুনও ছিলেন রাসেলের ফুটবলার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল আবাহনীর সঙ্গে চুক্তি করে তাদের কাছ থেকে এক লাখ টাকা অগ্রিম নেয়া। অথচ টাকা অগ্রিম নেয়ার মাসখানেকের মধ্যেই শেখ রাসেলের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেন জাহিদ, নাহিদুল, শাকিল ও মামুন। দেখা যাক, এবার দুই সোহেল ও রায়হানের ভাগ্যে কি ঘটে।
×