ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

কারেন চমক

প্রকাশিত: ০৬:৪৩, ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮

কারেন চমক

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্যারিস মাস্টার্সের শুরু থেকেই দুর্দান্ত পারফর্মেন্স উপহার দেন নোভাক জোকোভিচ। সেমিফাইনালে রজার ফেদেরারের বিপক্ষেও তিন ঘণ্টার লড়াই করে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করেন তিনি। যে কারণে শিরোপা জয়ের লড়াইয়ে ফেবারিটের তকমাটাও গায়ে মাখানো ছিল সার্বিয়ান তারকার। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। বরং জোকোভিচকে পরাজয়ের স্বাদ উপহার দিয়ে প্যারিস মাস্টার্সের শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেন কারেন খাচানোভ। সেই সঙ্গে ক্যারিয়ারের প্রথম মাস্টার্স ১০০০ পর্যায়ের শিরোপা জিতলেন রাশিয়ার খাচানোভ। রবিবার অখ্যাত এই খাচানোভ ৭-৫ এবং ৬-৪ গেমে পরাজিত করেন জোকোভিচকে। সেইসঙ্গে টানা ২২ ম্যাচে অপরাজিত থাকার রেকর্ডও থেমে যায় সার্বিয়ান তারকার। দীর্ঘদিন পর বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর স্থানটা পুনরুদ্ধার করা সার্বিয়ান তারকাকে হারাতে খাচানোভ এদিন সময় নেন মাত্র এক ঘণ্টা ৩৭ মিনিট। খাচানোভিচের ক্যারিয়ারে এটাই সবচেয়ে বড় শিরোপা। অন্যদিকে সুদীর্ঘ ক্যারিয়ারে ১৪টি গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের স্বাদ পেয়েছেন জোকোভিচ। শুধু তাই নয়, এ বছরেই দুটি মেজর টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেয়েছেন সার্বিয়ান তারকা। উইম্বলডন জয়ের পর মৌসুমের শেষ গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট ইউএস ওপেনের শিরোপাও উঁচিয়ে ধরেছেন তিনি। আর নোভাক জোকোভিচের মতো তারকাকে হারিয়ে আনন্দে আত্মহারা ২২ বছরের খাচানোভ। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে গিয়ে বিশ্ব টেনিস র‌্যাঙ্কিংয়ের ১৮ নম্বর থেকে ১১ নম্বরে উঠে আসা রাশিয়ান তারকা বলেন, ‘এই শিরোপা হাতে মানে বিশ্বটাই আমার কাছে। এখন পর্যন্ত জেতা এটাই আমার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় শিরোপা। মৌসুমটা এমনভাবে শেষ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। কেননা, জোকোভিচ বিশ্বের এক নম্বর খেলোয়াড়।’ প্যারিস মাস্টার্সের আগে গত মাসে ক্রেমলিন কাপের শিরোপাও নিজের করে নিয়েছিলেন খাচানোভ। এবার প্যারিসেও চ্যাম্পিয়ন। নিজের এমন পারফর্মেন্সে দারুণ খুশি রাশিয়ান টেনিসের এই প্রতিভাবান খেলোয়াড়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই শিরোপা জয়ের পর আমি হয়তো চোখ থেকে পানি বের করে কাঁদছি না কিন্তু দারুণ খুশি। যেভাবে খেলছি তাতে আমি খুব খুশি। আমি বুঝাতে চাচ্ছি ম্যাচ বাই ম্যাচ আমার পারফর্মেন্সের অগ্রগতি করছি। আমি মনে করি বিশ্বের শীর্ষ সারির ১০ জন খেলোয়াড়ের বিপক্ষে পারফর্ম করে দেখিয়েছি যে, কী করতে পারি। আমার কাছে এটাই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। দ্বিতীয়ত, বিশ্বের শীর্ষ সারির কিছু খেলোয়াড়দের কাছে হারের পর শিখেছি যে, আমাকে আরও কঠোর অনুশীলন করতে হবে।’ প্যারিস মাস্টার্সের শিরোপা জেতায় র‌্যাঙ্কিংয়ে ব্যাপক অগ্রগতি হয়েছে খাচানোভের। এক লাফে ১১ নম্বরে উঠে আসেন তিনি। তার আগে রাশিয়ার সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে মাস্টার্স ১০০০ পর্যায়ের শিরোপা জয়ের কীর্তি গড়েছিলেন নিকোলাই দেভিদেঙ্কো। প্রায় এক দশক আগে রাশিয়ার সর্বশেষ খেলোয়াড় হিসেবে প্যারিস মাস্টার্সের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন দেভিদেঙ্কো। ২০০৯ সালের পর সেই কীর্তি গড়লেন খাচানোভ। এদিকে, ফেদেরারের বিপক্ষে ম্যাচের ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই ফাইনাল খেলতে হয়েছে জোকোভিচকে। সেই দখল কাটিয়ে উঠতে কিছুটা সমস্যা হয়েছে তার। তবে ফাইনালে হেরে সেই অজুহাত দাঁড় করাননি তিনি। বরং প্রতিপক্ষকেই সকল কৃতিত্ব দিলেন সার্বিয়ান তারকা। এ প্রসঙ্গে ম্যাচের শেষে তিনি বলেন, ‘কারেন সত্যিই খুব ভাল খেলেছে এবং যোগ্য হিসেবেই ম্যাচটা জিতেছে। আমি সেই প্রসঙ্গটা (ফেদেরারের বিপক্ষে সেমিফাইনাল) মোটেও সামনে আনতে চাই না। বরং আমি বলতে চাই সপ্তাহের পুরোটা সময়ই সে কী দুর্দান্তই না খেলেছে। সব কৃতিত্বই তার। সে এর যোগ্য। সে বয়সে তরুণ, উদীয়মান খেলোয়াড়। কিন্তু ইতোমধ্যেই নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে নিয়েছে। আজও সে নিজের যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছে দারুণভাবে। সে দেখিয়েছে কেন তার ভবিষ্যত উজ্জ্বল।’
×