ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফায় স্বচ্ছতা ফেরানোর স্বপ্ন ম্যারাডোনার

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১ আগস্ট ২০১৫

ফিফায় স্বচ্ছতা ফেরানোর  স্বপ্ন ম্যারাডোনার

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ফিফার প্রকাশ্য সমালোচক হিসেবে দিয়াগো ম্যারাডোনার নাম চলে আসে সর্বাগ্রে। আর্জেন্টাইন এই কিংবদন্তি হরহামেশাই সমালোচনা করেন ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থার। অনেক সময় তার কথাতে খুব একটা গুরুত্ব দেয়া হয় না! কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে ফিফায় দুর্নীতি কেলেঙ্কারির পর ম্যারাডোনা বলেছেন, আমার সব অভিযোগ সত্য। ফিফায় কোন স্বচ্ছতা নেই। তার মতে, ফিফার মুখোশ উন্মোচিত হয়েছে। বিশ্বকাপজয়ী এই তারকা ফিফার টালমাটাল অবস্থার পরই সংস্থাটিতে প্রবেশের স্বপ্ন দেখছেন। এক্ষেত্রে অবশ্য বিভিন্ন সময় নানারকম কথা বলছেন ৫৪ বছর বয়সী এই কিংবদন্তি। এর আগে সাক্ষাতকারে বলেছেন, ফিফার সভাপতি হতে চান। আরেকবার বলেন, সহসভাপতি হতে চান। এবার আরেকবার বললেন, সভাপতি হয়ে ফিফার দুর্নীতির অবসান ঘটাতে চান। বিশেষ কংগ্রেসের সময় ঘোষণার পর থেকেই ফিফার পরবর্তী সভাপতি কে হচ্ছেন তা নিয়ে সরগরম ফুটবলবিশ্ব। ইতোমধ্যে মিশেল প্লাতিনি জানিয়েছেন তিনি প্রার্থী হচ্ছেন। ব্রাজিলের গ্রেট জিকোও লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। এ জন্য পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের সমর্থনও পেয়েছেন তিনি। আর্জেন্টাইন গ্রেট ম্যারাডোনাও অভিন্ন স্বপ্ন বুনছেন। সম্প্রতি এক সাক্ষাতকারে ফিফার দুর্নীতিবাজদের মাফিয়া হিসেবে উল্লেখ করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করার ঘোষণা দিয়েছেন ম্যারাডোনা। ১৯৮৬ সালের বিশ্বকাপজয়ী কিংবদন্তি বলেন, ফিফার ভেতরে এখনও থেকে যাওয়া মাফিয়াদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে আমাকে। দীর্ঘ সময় ধরে ফিফায় যারা চুরি করছে, তাদের বিরুদ্ধে আমার লড়াই করতে হবে। ফিফার সভাপতি হওয়ার জন্য লড়বেন কিনাÑ এমন প্রশ্নে সরাসরি কিছু না বললেও কৌশলে ম্যারাডোনা বলেন, সত্যি আমি ফিফায় থাকতে চাই। পরবর্তী নির্বাচনে ম্যারাডোনা লড়বেন বলে কিছু দিন আগে জানিয়েছিলেন উরুগুইয়ান সাংবাদিক ভিক্টর হুগো মোরালেস। ব্রাজিল বিশ্বকাপের ফাইনাল চলাকালে একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানে উপস্থাপকের ভূমিকায় ছিলেন ম্যারাডোনা। তার সহ-উপস্থাপকের দায়িত্ব পালন করেন মোরালেস। সেখানেই ম্যারাডোনা ফিফা সভাপতি নির্বাচনে অংশ নেয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন বলে জানান মোরালেস। নির্বাচনে লড়ার আগ্রহ জানিয়ে ম্যারাডোনা বলেন, আমি সভাপতি হলে ফুটবলাররা আমার কাছ থেকে সবধরনের সমর্থন পাবে। আর ফুটবলাররা আমাকে সমর্থন দেবে বলে বিশ্বাস করছি। যারা ফিফার অনিয়মের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে আমি যুদ্ধ ঘোষণা করব। ফিফার দুর্নীতি নিয়ে সমালোচনা করা ম্যারাডোনা আরও বলেন, সত্যিই যদি সেখানে (ফিফা) যেতে পারি তাহলে মাফিয়াদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটির সবকিছু লুটে খাচ্ছে। সকল আর্জেন্টাইনদের বলছি, ফিফায় গিয়ে ব্যর্থ হব না, কারণ এখনও আমি যথেষ্ট শক্তি ধরে রেখেছি। কঠিন সময়েও আমি নিজের শক্তি ধরে রাখতে পারি। এদিকে সভাপতি নির্বাচনে জিকোর পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ব্রাজিলের ফুটবল কনফেডারেশন (সিবিএফ)। তবে ব্রাজিলের সাবেক ফুটবল তারকাকে আরও চারটি ফেডারেশনের সমর্থন নিশ্চিত করতে হবে বলে শর্তও জুড়ে দিয়েছে তারা। জিকো বৃহস্পতিবার রিও ডি জেনেইরোতে সিবিএফের সভাপতি মার্কো পোলো ডেল নেরোর সঙ্গে দেখা করেন। পরে এক বিবৃতিতে সিবিএফ প্রধান বলেন, ফিফা নির্বাচনে প্রার্থিতার ক্ষেত্রে জিকোর প্রতি আমাদের সমর্থন আছে। সে যদি আরও চারটি সই পায় তাহলে সিবিএফ তাকে সমর্থন করবে। শর্তসাপেক্ষে সমর্থন পেলেও খুশি জিকো। তিনি বলেন, একজন ব্রাজিলিয়ান হিসেবে আমার কনফেডারেশনের মতামত ছাড়া আমি এটা শুরু করতে পারি না। তাদের সমর্থন আমাদের এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেয়। সেপ ব্লাটারের উত্তরসূরি বাছাইয়ের জন্য আগামী বছরের ২৬ ফেব্রুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জুরিখে ফিফার বিশেষ কংগ্রেস বসবে। সেই কংগ্রেসেই ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় নতুন সভাপতি নির্বাচন করা হবে। তার আগ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করে যাবেন ব্লাটার। নিয়মানুযায়ী ব্লাটারের উত্তরসূরি হওয়ার জন্য নির্বাচন করতে হলে অবশ্যই একজন প্রার্থীর পাঁচটি দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থার সমর্থন থাকতে হবে। এরপর নির্বাচনের চার মাস আগে তারা নিজেদের প্রার্থিতা ২৬ অক্টোবরের মধ্যে দাখিল করবেন। এ লক্ষ্যেই এখন এগিয়ে চলেছেন প্লাতিনি, ম্যারাডোনা, জিকোরা।
×