ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই ॥ এবার ঘরের মাঠে ফিলিস্তিনের বিপক্ষে হার বাংলাদেশের

কাহিনী আগের মতোই হার

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:০১, ২৭ মার্চ ২০২৪

কাহিনী আগের মতোই হার

বসুন্ধরা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ফিলিস্তিন ম্যাচের একটি আক্রমণের দৃশ্য

ফুটবল আলট্রাস সমর্থকগোষ্ঠী গ্যালারিতে একটি বড় আকারের ব্যানার নিয়ে এসেছিল। তাতে লেখা ছিল ‘স্বাধীনতা, সংগ্রাম ও ফুটবল’। তাদের আশা ছিল, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে না জিতুক, অন্তত হারবে না বাংলাদেশ। আরেকটা আশা জাগানিয়া ব্যাপারও ছিল। এই ভেন্যুতে আগের চার ম্যাচের একটিতেও হারেনি বাংলাদেশ। কিন্তু মঙ্গলবার সেই ‘পয়মন্ত ভেন্যু’ই লাল-সবুজ বাহিনীর জন্য হয়ে দাঁড়াল হারের-ব্যর্থতার ভেন্যু।

কেননা এদিন ঢাকার বসুন্ধরা কিংস এ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ফিফা বিশ^কাপ ও এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে ফিলিস্তিনের সঙ্গে দারুণ খেলেও শেষ মুহূর্তে ১-০ গোলে হেরে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। প্রথম লেগে গত ২১ মার্চ কুয়েতে ফিলিস্তিনের কাছে ৫-০ গোলে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাদের বিরুদ্ধে মোট ৮ ম্যাচ খেলে টানা সপ্তমবার হারল বাংলাদেশ। 
বিশ^কাপ বাছাইপর্বে ৪ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে বিশ^কাপ বাছাইয়ের ‘আই’ গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে আছে ৯৭ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী ফিলিস্তিন। পক্ষান্তরে সমান ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে চার দলের মধ্যে তলানিতেই আছে ১৮৩ ফিফা র‌্যাঙ্কিংধারী বাংলাদেশ। বাংলাদেশের পরবর্তী ম্যাচ আগামী ৬ জুন, প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া।

মঙ্গলবারের ম্যাচে বাংলাদেশ দলের একাদশে দুটি পরিবর্তন আনেন কোচ। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়েন মিডফিল্ডার সোহেল রানা জুনিয়র ও ডিফেন্ডার ইসা ফয়সাল। এই দুজনের জায়গায় একাদশে ঢোকেন ডিফেন্ডার শাকিল হোসেন ও মিডফিল্ডার সোহেল রানা সিনিয়র। মূলত সোহেল রানা হলুদ কার্ডের নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে এই ম্যাচে খেলতে নামেন।  

প্রথমার্ধে বাংলাদেশ গোলরক্ষক মিতুল অসাধারণভাবে তিনটি বল সেভ করেন। ডিফেন্ডাররা ছিলেন সতর্ক। এই অর্ধে ফিলিস্তিনেরই বেশি আধ্যিপত্য-আক্রমণ ছিল। তবে বাংলাদেশও চমৎকার একটি গোলের সুযোগ পেয়েছিল। 
কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি। ১২ মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে ফিলিস্তিনের রশিদের সেট পিস ঠিকমতো ফেরাতে পারেননি গোলরক্ষক মিতুল। ৩৯ মিনিটে দারুণ সেভ করেন মিতুল। বক্সের বাইরে থেকে মুসাব বাত্তাতির ফ্রি কিকে শেহাব কুমবোরের হেড দারুণভাবে ফেরান বাংলাদেশ গোলরক্ষক। ৪৪ মিনিটে সেরা সুযোগটি নষ্ট করেন ফাহিম।

সতীর্থের কাছ থেকে বল পেয়ে জামাল মধ্যমাঠ থেকে দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে দারুণ থ্রু পাস দেন। বক্সের মধ্যে বল পান ফাহিম। তার সামনে ছিলেন শুধুই ফিলিস্তিন গোলরক্ষক। কিন্তু এ ফরোয়ার্ডের শট প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের গায়ে লেগে প্রতিহত হয়। 
৪৮ মিনিটে শাকিলের ব্যাকপাস থেকে গোলরক্ষক মিতুল সতীর্থকে পাস দিতে গেলে বল চলে যায় প্রথম লেগের হ্যাটট্রিকম্যান দাব্বাঘের পায়ে। দাব্বাগ মিতুলকে কাটিয়ে ফাঁকা নেট পেয়েও অবিশ^াস্য মিস করে জালের বাইরে পাঠান! বেঁচে যায় বাংলাদেশ। ৫৩ মিনিটে সতীর্থর কাছ থেকে ক্রস পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে জনির বা পায়ের শট পোস্টের ওপর দিয়ে চলে যায়।

৫৭ মিনিটে বা প্রান্তে ফিলিস্তিনের বদলি ধাঁধার উড়ন্ত ক্রস থেকে দাব্বাঘের হেড গোলরক্ষক মিতুল ফিস্ট করে কর্নারে রক্ষা করেন। ৭৪ মিনিটে ফিলিস্তিনের আক্রমণ। অধিনায়ক মুসাব বালাত মিস করেন। ৭৫ মিনিটে ধাঁধার কর্নার থেকে ফিলিস্তিনের উদয়ের শট মিতুল ঝাঁপিয়ে পড়ে ফিরিয়ে দেন। ৮৩ মিনিটে ইনজুরিতে পড়ে মাঠ ছাড়েন মিতুল।

সংযুক্তি সময়ে (৯০+৩ মিনিটে) বাংলাদেশের বদলি ইসার থ্রু পাস বক্সের ভেতরে রাকিব বল কানেক্ট করতে পারেননি ফিলিস্তিন গোলরক্ষকের কারণে। এ সময় ফিলিস্তিন মিডফিল্ডার আহমেদ মাহাজনেহ তাজিক রেফারি কাবিরভের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পর পর দুটি হলুদ কার্ড পেয়ে বহিষ্কৃত হন। এতে উল্লাসে ফেটে পড়ে বাংলাদেশ শিবির।

কিন্তু তার পরের মিনিটেই (৯০+৪ মিনিটে) সেই আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়। উল্টো ১০ জন নিয়ে খেলে গোল করে বসে ফিলিস্তিন! বক্সের ভেতরে ধাঁধার ক্রস থেকে অরক্ষিত মাইকেল তারমানিনি গড়ানো প্লেসিং শটে গোল করে হৃদয় ভেঙে দেন বাংলাদেশ সমর্থকদের।       
বাংলাদেশ ॥ মিতুল মারমা (মেহেদী হাসান শ্রাবণ), তপু বর্মণ, বিশ্বনাথ ঘোষ, সাদ উদ্দিন, শাকিল হোসেন, মো. হৃদয়, মজিবর রহমান জনি (ইসা ফয়সাল), সোহেল রানা, জামাল ভুঁইয়া (সোহেল রানা জুনিয়র), রাকিব হোসেন, ফয়সাল আহমেদ ফাহিম (রফিকুল ইসলাম)।

×