ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

মধ্যপ্রাচ্য সংকট এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি

ড. মো. মোরশেদুল আলম

প্রকাশিত: ২৩:৪০, ২৫ মে ২০২৪

মধ্যপ্রাচ্য সংকট এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি

.

মধ্যপ্রাচ্য এমন একটি ভৌগোলিক অঞ্চল- যা এশিয়া এবং আফ্রিকার সংযোগস্থলে বিস্তৃত। এটি বিশ্বে মধ্যস্থলে অবস্থিত। অঞ্চলটি তার জটিল ইতিহাস, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য এবং উল্লেখযোগ্য ভূ-রাজনৈতিক গুরুত্বের জন্য বিশেষভাবে পরিচিত। ভৌগোলিক পরিপ্রেক্ষিতে, মধ্যপ্রাচ্য ভূমধ্যসাগর, পারস্য উপসাগর এবং লোহিত সাগরের মাঝখানে অবস্থিত দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। ইসলাম, খ্রিস্টান এবং ইহুদি ধর্মের মতো প্রধান একেশ্বরবাদী ধর্মের জন্মের মতো ঘটনাগুলোর সঙ্গে সংযোগের কারণে অঞ্চলটি ঐতিহাসিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়াও তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত অঞ্চলটি বৈশি^ অর্থনীতিতেও প্রভাব রেখেছে। এটি প্রায়ই জটিল রাজনৈতিক সমস্যা, দ্বন্দ্ব রাজনৈতিক উত্তেজনার সঙ্গে যুক্ত থাকে; যার বিপুল আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ভূ-কৌশলগত অবস্থান এবং প্রাকৃতিক সম্পদের কারণে বিশ্বব্যাপী এর গুরুত্ব রয়েছে।

বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতির নতুন রূপান্তর ঘটেছে। যখন মধ্যপ্রাচ্যে দীর্ঘদিন প্রভাব বিস্তার করা যুক্তরাষ্ট্রকে পাশ কাটিয়ে চীন-রাশিয়ার নজর পড়ে অঞ্চলটিতে। তবে, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর নতুন মোড় নিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতি। বিশ্লেষকরা মনে করেন, আরব রাষ্ট্রগুলোর ব্যর্থতা, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব, ধর্মীয় মতাদর্শগত পার্থক্য, বিভিন্ন রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক দ্বন্দ্ব, স্বৈরতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা মধ্যপ্রাচ্যের দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে। মধ্যপ্রাচ্য সংকটের পশ্চাতে সেখানকার অভ্যন্তরীণ ভূরাজনৈতিক বিরোধ গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক হিসেবে কাজ করে।

২০২৩ সালের অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার পর থেকে ফিলিস্তিনের গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে ইসরাইল। ইরাক সিরিয়ার ৮৫টি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। এর ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল রূপ পরিগ্রহ করে। জর্দানে মার্কিন ঘাঁটিতে হামলায় সেনা নিহতের প্রতিশোধে যুক্তরাষ্ট্র এই হামলা চালিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ- এসব স্থানে মার্কিনবিরোধী এবং গাজায় হামাস সমর্থক কয়েকটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর ঘাঁটি রয়েছে, যাদের সহযোগিতা করছে ইরান। ইরানও পাল্টা হুমকি দিয়ে সমুচিত জবাব দেওয়ার কথা বলেছে। ফলে মধ্যপ্রাচ্যে বহুমুখী সংঘাত-সংঘর্ষ এমনকি যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সংকট আরও তীব্র হলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এই হামলার শুরু থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ তার মিত্ররা ইসরাইলের পাশে ছিল। ইসরাইল হামাসের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়াটা মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে অস্থির সময়ের সূচনার ইঙ্গিত দেয়। এই যুদ্ধ ছাড়াও অঞ্চলটিতে বিভিন্ন সংঘাত দেখা দিয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- লেবাননে ইসরাইল হিজবুল্লাহর মধ্যকার সংঘর্ষ, ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহী পশ্চিমা মিত্রগুলোর মধ্যে হামলা-পাল্টাহামলা; ইরাক, সিরিয়া পাকিস্তানকে লক্ষ্য করে ইরানের অভিযান এবং ইরানপন্থি কিছু সশস্ত্রগোষ্ঠী কর্তৃক যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইল এবং তাদের মিত্রদের টার্গেট করে অভিযান।

একদিকে আরব বিশ্ব  ইসরাইলের মধ্যকার দ্বন্দ্ব এবং অন্যদিকে শিয়া সুন্নিদের মধ্যকার দ্বন্দ্বÑ যার নেতৃত্বে রয়েছে ইরান সৌদি আরব। সৌদি আরব ইরানের মধ্যকার বৈরী সম্পর্ক মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। দুই দেশের ভূরাজনৈতিক আঞ্চলিক দ্বন্দ্বের জেরে এখানকার রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। বর্তমানে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিভক্তির তুলনায় এই অঞ্চল রাজনীতি সামরিক জোটের কারণে বেশি উত্তেজিত।

২০২৩ সালের এপ্রিল সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ইরানের কনস্যুলেটে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইসরাইল। হামলায় কযেক সামরিক কর্মকর্তা নিহত হয়। এতে করে ইরান ইসরাইলে শত শত ড্রোন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। ইসরাইলে ইরান হামলা চালানোর পর মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা আরও বেড়েছে। প্রায় আট মাস ধরে ফিলিস্তিনের গাজায় সামরিক অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। সেখানে ইসরাইল বাহিনীর হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৭ হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং আহত হয়েছে আরও ৮০ হাজার মানুষ। গত দুই সপ্তাহে লাখের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক বাস্তুচ্যুত হয়েছে; যা গাজার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৪০ শতাংশ। লেবানন সীমান্তেও বড় পরিসরে সংঘাত চলছে। ইসরাইলের হামলার প্রতিশোধ নিতে গত ডিসেম্বরে লোহিত সাগরে জাহাজে হামলা শুরু করে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা। এতে মিসরসহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে বেশ কিছু দেশ। হামলার শিকার হচ্ছে সেখানে অবস্থান করা পশ্চিমা যুদ্ধজাহাজও। মধ্যপ্রাচ্য অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে থাকা সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য হুতিদের ওপর হামলা করেছে। ফলে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল ব্যাপকভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এর ফলে বড় শিপিং লাইনগুলোর বেশিরভাগ জাহাজ আফ্রিকার উত্তমাশা অন্তরিপ ঘুরে সাগর পাড়ি দিচ্ছে। এতে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ইউরোপ যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পরিবহনে আগের তুলনায় সময় বেশি নিচ্ছে। লোহিত সাগরের এই অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে যদি যথাযথভাবে মোকাবিলা করা না যায়, তাহলে এই উত্তেজনা মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য জায়গায়ও ছড়িয়ে পড়তে পারে। এমনকি সুয়েজ খালে জাহাজ চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে জড়ালে বিশ^ আরেকটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়বে বলে শঙ্কা জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকটের কারণে তেলের দাম বাড়তে পারে। যার প্রভাব পড়বে সবক্ষেত্রে। বিশ^ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই বছরে ক্রমাগত উচ্চ ভূরাজনৈতিক উদ্বেগ তেল এবং অন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। বৈশি^ প্রবৃদ্ধির গতিও মন্থর হয়ে গেছে। মধ্যপ্রাচ্য সংকটে তেল সরবরাহে বিঘœ ঘটলে বছরই আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যটির গড়মূল্য ব্যারেল প্রতি ৯২ ডলারে উন্নীত হতে পারে। সংকট ভয়াবহ আকার ধারণ করলে তেলের দাম ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। মূল্যস্ফীতির হার বাড়তে পারে এক শতাংশ পয়েন্টের কাছাকাছি। মধ্যপ্রাচ্য সংকট আরও প্রবল হলে প্রাকৃতিক গ্যাস, সার খাদ্যের দামও বাড়তে পারে। গ্যাস সরবরাহে অঞ্চলের গুরুত্ব অপরিসীম। বৈশি^ প্রাকৃতিক তরল গ্যাস বাণিজ্যের প্রায় ২০ শতাংশ হয় হরমুজ প্রণালি দিয়ে। হরমুজ প্রণালিতে জাহাজ চলাচল বাধাগ্রস্ত হলে মধ্যপ্রাচ্যের বড় অংশে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি খাতে প্রভাব পড়বে। কারণ, সৌদি আরবের একাংশ, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন সংযুক্ত আরব আমিরাতে পণ্য আনা-নেওয়ার জন্য হরমুজ প্রণালি হয়ে যেতে হয়। এলএনজি সরবরাহ ব্যাহত হলে সারের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। তাতে দেশের জ্বালানি প্রাপ্যতা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে।

পণ্য আমদানি-রপ্তানিও ব্যাহত হবে। অঞ্চলটিতে অস্থিরতা বাড়লে পণ্যবাহী জাহাজের সময় খরচ আরও বৃদ্ধি পাবে। এর প্রভাব পড়বে খাদ্যমূল্যে। পাশাপাশি জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাবে। মধ্যপ্রাচ্যের চলমান সংকট আরও ঘনীভূত দীর্ঘায়িত হলে তা দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলতে পারে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি এক্সচেঞ্জ অব বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাশরুর রিয়াজ বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ এক বছরের বেশি সময় ধরে চললে সংকট আরও বাড়বে। অঞ্চলের সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইনের মতো দেশ বাংলাদেশের বড় শ্রমবাজার। দেশগুলো যুদ্ধে না জড়ালেও তাদের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তখন বাংলাদেশ থেকে নতুন শ্রমশক্তি যাওয়া কমে যাবে।

ছাড়া অস্থিরতা দীর্ঘস্থায়ী হলে বিনিয়োগের সম্ভাবনাও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের বড় বাজার হলেও মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশেও রপ্তানি বাড়ছে। পোশাক রপ্তানির শীর্ষ ১০ নতুন বাজারের দুটি হচ্ছে সংযুক্ত আরব আমিরাত সৌদি আরব। চলতি অর্থবছরের প্রথম আট মাসে দেশ দুটিতে তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে যথাক্রমে ৩৭ ৪৭ শতাংশ। যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়লে এর প্রভাব তৈরি পোশাক শিল্পে পড়বে। ছাড়া দুবাই থেকে আফ্রিকার দেশগুলোতেও বাংলাদেশী পোশাক যায়। সেখানেও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

এদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি এমন এক সময়ে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হলেন, যখন ইতিহাসের ভয়াবহতম সংকটকাল পার করছে মধ্যপ্রাচ্য। এই প্রভাবশালী নেতার মৃত্যুতে অঞ্চল কি আরও সংকটাপন্ন হবে- এমন প্রশ্ন ডালপালা মেলছে ভূরাজনৈতিক পরিমন্ডলে। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট øাদিমির পুতিন এই মৃত্যুকে বিরাট ক্ষতি বলে অভিহিত করেছেন। রাইসির মৃত্যুর ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রকে দায়ী করেছেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। যদিও যুক্তরাষ্ট্র দায় অস্বীকার করেছে। ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত রয়েছে এমন প্রমাণিত হলে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি ভিন্ন দিকে মোড় নেবে- যা বিশ্ব রাজনীতিকে প্রভাবিত করবে। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যমআল জাজিরা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিভিন্ন সময়ে বিশ্বে ১৪৩টি দেশ ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। তবে আশার কথা হচ্ছে, যুদ্ধবিরতিসহ শান্তি আলোচনায় একসঙ্গে কাজ করছে সৌদি আরব, মিসর, কাতার, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনের হাতে আটক জিম্মিদের মুক্তির বিনিময়ে ইসরাইলের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের নিরাপত্তার গ্যারান্টি চায়। কারণ ইরাক, সিরিয়া জর্দানে তাদের কয়েকটি সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। ইসরাইল-হামাস সংঘর্ষে বর্তমান প্রেক্ষাপটও পরিবর্তিত হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততাও কমছে। তাছাড়া ইউরোপ তেল আবিবকে সহযোগিতা করবে এমন কোনো লক্ষণ সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে না।

কারণ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাব লোহিত সাগর অঞ্চলে পড়ায় ইউরোপের অর্থনৈতিক অবস্থাও মন্দার দিকে। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেছেন, গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসন যুদ্ধাপরাধের শামিল। মধ্যপ্রাচ্য প্রসঙ্গে চীন রাশিয়ার অবস্থানও ইসরাইলের বিপক্ষে। ফলে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জটিল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়ে পড়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্য বিশ্বরাজনীতি অর্থনীতির জন্য বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে মধ্যপ্রাচ্য সংকটের মূল কারণ খুঁজে বের করে তা সমাধানে আন্তরিক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে হবে। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো নিজেদের মধ্যকার বিভেদ দূর করতে পারলে তাদের অভ্যন্তরীণ সংকট নিরসন সম্ভব। একই সঙ্গে বৈশ্বি মেরুকরণকে পাশ কাটিয়ে আঞ্চলিক ঐক্য অখন্ডতাকে গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নিলে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার সমাধান সম্ভব। শান্তি প্রতিষ্ঠার রোডম্যাপ প্রণয়নসহ মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রক্রিয়ার দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সকল পক্ষের সঙ্গে জাতিসংঘকে আরও নিবিড়ভাবে সংশ্লিষ্ট হতে হবে। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা ছাড়া সংকট নিরসন সম্ভব নয়। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যকে স্থায়ী সমাধানে পৌঁছতে হবে। ফিলিস্তিন সমস্যার চূড়ান্ত সমাধান তথা স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা মধ্যপ্রাচ্যে স্থায়ী শান্তি স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে পারে। ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর উপসাগরীয় দেশ এবং সৌদি আরব একসঙ্গে কাজ করছে এটিও একটি ইতিবাচক দিক। মধ্যপ্রাচ্যের সবাই মনে করে যে, শান্তিই একমাত্র সমাধান।

লেখক : অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

×