ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৭ জুন ২০২৪, ৩ আষাঢ় ১৪৩১

মন্ত্রীর দৃঢ়তায় ফিরবে কি সড়কের শৃঙ্খলা

ওবায়দুল কবির

প্রকাশিত: ২৩:২৫, ২৫ মে ২০২৪

মন্ত্রীর দৃঢ়তায় ফিরবে কি সড়কের শৃঙ্খলা

.

আর মাত্র পাঁচদিন পর অর্থাৎ পহেলা জুন থেকে রাজধানীতে রংচটা লক্কড়-ঝক্কড় বাস চলবে না। তথ্যটি বেশ রোমাঞ্চকর। বদলে যাবে ঢাকা মহানগরীর চিরচেনা দৃশ্য। ভাবতেই ভালো লাগছে। ঢাকা বাংলাদেশের রাজধানী। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়। স্বল্পোন্নত দেশের কাতার ছেড়ে এখন শামিল হয়েছে উন্নয়নশীল দেশের সারিতে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গত পনেরো বছর নিরলস পরিশ্রম করে দেশকে নিয়ে গেছে এই পর্যায়ে। নির্মিত হয়েছে পদ্মা সেতু, চালু হয়েছে মেট্রোরেল, নদীর নিচে ট্যানেল পথ কিংবা আন্তর্জাতিকমানের বিমানবন্দর। উন্নয়নের এই অগ্রযাত্রায় রাজধানীর পাবলিক পরিবহন ব্যবস্থা খুবই বেমানান। ঢাকার রাস্তায় চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসগুলোকে দেশের উন্নয়নের সঙ্গে মিলানো যায় না। ডিজিটাল বাংলাদেশ ছাড়িয়ে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে। কালো ধোঁয়া নির্গমনকারী, ছালবাকল ওঠা, লক্কড়-ঝক্কড় বাস সার্ভিস এবং স্বল্প গতির রিক্সা চালু রেখে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা একেবারেই অবম্ভব।

রাজধানীতে চলাচলকারী অধিকাংশ বাসই দৃশ্যত লক্কড়-ঝক্কড়, রংচটা ভাঙাচোরা। পত্রিকায় প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী এসব বাসের মেয়াদ চলে গেছে একযুগ আগে। প্রচলিত আইনে ২০ বছরের পুরনো বাস ২৫ বছরের পুরনো ট্রাক চলাচল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এই আইন মানছে না কেউই। বিআরটিএর হিসাব অনুযায়ী সারাদেশে চলাচলকারী ৮১ হাজার ৮৪৭টি বাস-মিনিবাসের মধ্যে ৪১ শতাংশের বয়স ২০ বছরের বেশি। এর সঙ্গে একযুগ যোগ করলে বাসগুলোর বয়স দাঁড়ায় ৩০ বছর। বিশে^ কোথাও এটি কল্পনাও করা যায় না। অতীতে বেশ কয়েকবার রাজধানীর লক্কড়-ঝক্কড় বাস অপসারণের কথা বলা হয়েছে। এক শ্রেণির পরিবহন মালিক শ্রমিকের অসহযোগিতার কারণে কোনো উদ্যোগই সফল হয়নি। এমনকি রাস্তা থেকে সরানো যায়নি ফিটনেসবিহীন গাড়ি। এসব যানবাহন নগরীর পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ঘটাচ্ছে দুর্ঘটনা। রাজধানীতে ফিটনেসবিহীন একটি ট্রাকের ধাক্কায় কয়েকটি যানবাহনের অন্তত জন যাত্রী নিহত হওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন আরও অসংখ্যা ঘটনা ঘটছে প্রতিদিন। সম্প্রতি আমি নিজেও নিয়ন্ত্রণহীনতুরাগকোম্পানির একটি লক্কড়-ঝক্কড় বাসের ধাক্কায় মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়েছিলাম। ভাগ্য সুপ্রসন্ন থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছি আমি এবং আমার স্ত্রী। এমন অনেক ঘটনা প্রকাশ পায়, অনেক থেকে যায় আড়ালে।

পাবলিক পরিবহনের এই নৈরাজ্যজনক পরিস্থিতি নিরসনে উদ্যোগ নিয়েছে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান সংবাদ সম্মেলন করে ঘোষণা দিয়েছেন, আগামী পহেলা জুন থেকে ঢাকার সড়কে রংচটা, লক্কড়-ঝক্কড় মেয়াদ উত্তীর্ণ কোনো বাস চলাচল করতে পারবে না। একই সঙ্গে চালানো যাবে না ফিটনেসবিহীন, বায়ু দূষণকারী এবং রুট পারমিটবিহীন গাড়ি। পহেলা জুন থেকে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, মালিকেরা নিজ উদ্যোগে লক্কড়-ঝক্কড় গাড়ি অপসারণ করে দৃষ্টিনন্দন বাস উপহার দেবেন। এর আগে গত ৩১ মার্চ বন পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক মতবিনিময় সভায় মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী রাজধানীর বায়ুদূষণ রোধে ২০ বছরের পুরনো বাসের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছিলেন। এপ্রিলের মধ্যে তালিকা তৈরি করে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। ২০ এপ্রিলের মধ্যে ২০ বছরের বেশি বয়সী বাস প্রত্যাহারের পরিকল্পনা প্রদান করতে নির্দেশ দেন পরিবহন মালিক সমিতিকে। বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে কোনো আপোস করা হবে না বলেও তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।

পরিবেশমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্ত ইতিবাচক হিসেবে গ্রহণ করেছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়। এপ্রিলের মধ্যে তালিকা প্রদান করা হয়েছে কি না জানা না গেলেও নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান বিআরটিএ দ্রুত নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পরিবহন মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে নির্দেশ জারি করেছে রাস্তার লক্কড়-ঝক্কড় বাস সরানোর। পরে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ আইন ২০১৭-এর অধীনে গঠিত উপদেষ্টা পরিষদের প্রথম বৈঠকে নিয়ে ক্ষোভ জানান সড়ক পরিবহন সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি প্রশ্ন করেন, ২০ বছরের পুরনো বাস কিভাবে সড়কে চলাচল করছে? তিনি বলেন, ‘সড়কে শৃঙ্খলা না ফিরলে কখনোই দুর্ঘটনা কমবে না। দুর্ঘটনা হলে কথা শুনতে হয় আমাকে। এভাবে চলতে পারে না।তিনি কঠোর হাতে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে তিনি রাজধানী ঢাকা বন্দরনগরী চট্টগ্রামে ব্যাটারিচালিত অটোরিক্সা নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর করারও নির্দেশ দেন। বিষয়টি সম্পর্কে মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি আমাকে বলেন, ‘আমরা খুবই সিরিয়াস। ঢাকা শহরে ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কড় বাস চলতে দেওয়া হবে না। জুন থেকে অভিযান শুরু হবে। ফিটনেসবিহীন গাড়ি ডাম্প করে লাভ নেই। আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বের হয়ে আবারও চলে আসে রাস্তায়। এবার এগুলোকে ক্র্যাপ (ধ্বংস) করে দেওয়া হবে। এর মধ্যে আমরা রাজধানীতে মোটরবাইক চালকদের হেলমেট ব্যবহার, গাড়ি চালকদের বেল্ট বাঁধা নিশ্চিত করতে পেরেছি। এখন জেলা থানা পর্যায়ে এই নিয়ম কঠোরভাবে বাস্তবায়নের নির্দেশ দিয়েছি।অটোরিক্সার মালিকদের আন্দোলনের মুখে সড়কমন্ত্রীর এই নির্দেশ মানবিক কারণে প্রত্যাহার করে নেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একটি নীতিমালা প্রণয়ন করে শুধু নগরীর রাস্তায় অটোরিক্সা চালানোর নির্দেশ দেন তিনি।

মানবিক কারণে প্রধানমন্ত্রী অটোরিক্সা নিষিদ্ধের নির্দেশ প্রত্যাহার করলেও রাজধানীর সড়কে রিক্সা চলচলের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। ট্রাফিক বিভাগ বারবার বলছে, স্বল্পগতির বাহন রিক্সার কারণে রাজধানীতে অটোসিগন্যাল ব্যবস্থা চালু করা যাচ্ছে না। কোনো আধুনিক শহরে ধরনের যানবাহন চলাচল করতে পারে না। রিক্সা চালু রেখে স্মার্ট নগরীর স্বপ্ন কোনোদিনই বাস্তবায়ন হবে না। মূল নগরী বাদ দিয়ে শহরতলি এলাকার অলিগলিতে মানবিক কারণে এই অটোরিক্সা চলচলের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। কোনোভাবেই পায়ে চালিত রিক্সা নয়, হতে হবে ব্যাটারিচালিতনিরাপদ ডিজাইনেরঅটোরিক্সা। এজন্য বিশেষজ্ঞদের দিয়ে নিরাপদ অটোরিক্সার ডিজাইন করে দিতে হবে। এই ডিজাইনের বাইরে কেউ কোনো ধরনের যানবাহন তৈরি বা আমদানি করতে পারবে না। এভাবে দ্রুত একটি নীতিমালা প্রণয়ন করা উচিত।     

শুধু লক্কড়-ঝক্কড় বাসই নয়, সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে গাড়ির গতি নির্দিষ্ট করে দিয়ে একটি বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে। এতে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেট কার, বাস মিনিবাসের গতিসীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটার, মোটরসাইকেল ৬০ কিলোমিটার এবং ট্রাক ৫০ কিলোমিটার। জাতীয় সড়কে (ক্যাটাগরি বি) গাড়ি, বাস মিনিবাসের গতিবেগ হবে ঘণ্টায় ৭০ কিলোমিটার, বাইকের জন্য ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার এবং ট্রাক আর্টিকুলেটেড লরির জন্য ৪৫ কিলোমিটার। জেলা সড়কে গাড়ি, বাস মিনিবাসের ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৬০ কিলোমিটার, বাইক ৫০ কিলোমিটার এবং ট্রাক আর্টিকুলেটেড লরির  ক্ষেত্রে ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার গতি নির্ধারণ করা হয়েছে। সিটি করপোরেশন, পৌরসভা জেলা শহরের ভেতরের রাস্তায় গাড়ি, বাস মিনিবাসের গতিসীমা হবে ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার এবং ট্রাক, মোটরসাইকেল আর্টিকুলেটেড লরিতে গতিসীমা থাকবে ৩০ কিলোমিটার।

বিধিমালায় বলা হয়, এক্সপ্রেসওয়ে জাতীয় সড়কে তিন চাকার যান চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে না। কেউ গতিসীমা লঙ্ঘন করলে কিংবা আইন অমান্য করলে তাদের বিরুদ্ধে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন অমান্যকারীকে তিন মাসের কারাদণ্ড বা ১০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা হতে পারে। সারাদেশে যানবাহনের গতিসীমা কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, সড়ক প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলো সড়কের পাশে গতিসীমা সংবলিত প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে রোড সাইন স্থাপন করবে। এগুলো দেখে মানুষ জানতে পারবে কোন রাস্তায় কত কিলোমিটার বেগে গাড়ি চালানো যাবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের দায়িত্ব চালক, সড়ক ব্যবহারকারীসহ সকলের। আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

২০ বছরের পুরনো বাস-ট্রাকের বিরুদ্ধে সরকার যে অভিযানের ঘোষণা দিয়েছে তা আদৌ বাস্তবায়ন হবে কি না নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেন, ‘আগেও এমন ঘোষণা এসেছিল; কিন্তু বাস মালিকদের চাপে তা কখনোই বাস্তবায়ন হয়নি। এছাড়া দুই সিটি মিলে অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে মাত্র দুটি রুটে কোম্পানির বাস চলাচলের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। পরিবহন মালিকদের কারসাজিতে মাত্র ছয় মাসের মধ্যে এই সিদ্ধান্ত মুখ থুবড়ে পড়েছে। ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে দেশের ২২টি গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কে তিন চাকার যান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা যায়নি। এবার বিআরটিএ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা বাস্তবায়ন করতে হলে আলাদা আলাদা রুট নির্ধারণ করে সেখানে সরকারি কিংবা ব্যক্তি উদ্যোগে ভালোমানের বাস দিতে হবে। চাহিদা অনুযায়ী বাস নামাতে পারলে আনফিট লক্কড়-ঝক্কড় বাসগুলো এমনিতেই উঠে যাবে। না হলে এবারের সিদ্ধান্তও হোঁচট খাবে। বাস মালিকরা খুবই শক্তিশালী। বল প্রয়োগ করে তাদের কাবু করা যাবে না। এজন্য গ্রহণ করতে হবে বিকল্প ব্যবস্থা।

সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় তিন দশকের। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশ^স্ত এবং অনুগত। ক্ষমতার দিক থেকে প্রধানমন্ত্রীর পরেই তাঁর স্থান। প্রধানমন্ত্রীর আস্থাও অনেক তাঁর ওপর। এই মুহূর্তে দলীয় প্রশাসন ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ওপর সবচেয়ে বেশি নির্ভর করেন। কারণেই ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগে লাগাতার তৃতীয়বারের মতো সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতে পেরেছেন তিনি। এর আগে বঙ্গবন্ধুর সময় একমাত্র তাজউদ্দীন আহমদ পরপর তিনবার দলটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হতে পেরেছিলেন। সড়ক পরিবহনমন্ত্রী হিসেবে তিনি শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জপদ্মা সেতুপ্রকল্প বাস্তবায়নে নেতৃত্ব দিয়ে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে এই দেশে স্থাপিত হয়েছে সর্বাধুনিক পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা মেট্রোরেল, নির্মিত হয়েছে কর্ণফুলী নদীর নিচ দিয়ে ট্যানেল পথ। বেশ কয়েকটি এক্সপ্রেসওয়েসহ সারাদেশে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন হয়েছে তাঁরই নেতৃত্বে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ‘এত সড়ক নির্মাণের পর যদি শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা না যায় তবে কোনো লাভ হবে না।

আওয়ামী লীগের মতো বড় রাজনৈতিক দল পরিচালনার কারণে ওবায়দুল কাদেরকে অনেক ব্যস্ত থাকতে হয়। পাশাপাশি তাঁকে চালাতে হয় সড়ক পরিবহনের মতো বড় একটি মন্ত্রণালয়। প্রধানমন্ত্রীর আস্থার জায়গায় থাকায় তিনি দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে পারেন। তিনি চাইলে অবশ্যই সড়কের শৃংখলা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলে আমি সেই দৃঢ়তার আভাস পেয়েছি। তবে কাজটি সহজ হবে না। এর মধ্যে প্রতিবাদ, প্রতিরোধ শুরু হয়ে গেছে। আন্দোলন করে অটোরিক্সার মালিকরা তাদের দাবি আদায় করে নিয়েছেন। শক্তিশালী পরিবহন মালিকরা এর মধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, এত অল্প সময়ে এত লক্কড়-ঝক্কড় বাস পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। এজন্য তাদেরকে সময় দিতে হবে। একযোগে এত বাস বন্ধ করে দিলে পরিবহন সেক্টরে সমস্যা তৈরি হবে। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তারাও। শত প্রতিবন্ধকতা থাকলেও অভিজ্ঞ রাজনৈতিক মন্ত্রী তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছবেন বলেই আমাদের বিশ্বাস।

লেখক : নির্বাহী সম্পাদক, জনকণ্ঠ

×