ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-রোম ফ্লাইট

-

প্রকাশিত: ২০:৩২, ২৭ মার্চ ২০২৪

ঢাকা-রোম ফ্লাইট

সম্পাদকীয়

দীর্ঘ ৯ বছর বন্ধ থাকার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে চালু হয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ঢাকা-রোম ফ্লাইট। এটি বিমানের ২৩তম রুট। ফ্লাইটটিকে আন্তর্জাতিক মানের সবধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন বিমান বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ। রোম পর্যন্ত ইকোনমি ক্লাসে সর্বনি¤œ একমুখী ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬৪ হাজার টাকা আর দ্বিমুখী ১ লাখ ৪ হাজার। ২০০৫ সালে ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বিমানের মোট ৩১টি রুট চালু ছিল।

তখন বেশিরভাগ উড়োজাহাজ ছিল ভাড়ায় চালিত। এখন বিমানে ১৬টি বোয়িংসহ ২১টি নতুন উড়োজাহাজ রয়েছে। তাই পর্যায়ক্রমে বিমানের নতুন রুটও চালু করা হচ্ছে। ইতালির রাজধানী রোমসহ মিলান, ভেনিসে বসবাস করছেন কমপক্ষে ২ লাখ বাংলাদেশী। বছরজুড়ে দেশটিতে যাচ্ছেন হাজারো বাংলাদেশী পর্যটক। ইতালি তো বটেই, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত অন্য কোনো দেশে বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক এয়ারলাইন্সগুলোই ছিল ভরসা।

এতে করে ট্রানজিট নিয়ে ১৫-১৬ ঘণ্টা লেগে যেত ইতালি পৌঁছাতে। এখন লাগবে দশ ঘণ্টার কম। বাংলাদেশ ও ইউরোপের মধ্যে বিমানের এই ফ্লাইটটি যোগাযোগ ও অর্থনীতিসহ নানা খাতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলেই প্রত্যাশা। রোম-ঢাকা রুট বাংলাদেশীদের জন্য যথেষ্ট ইতিবাচক। এটি ইউরোপের সঙ্গে বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি তৈরি করবে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরে ঢাকা-নিউইয়র্ক রুটে ফের ফ্লাইট চালুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বিমান। ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের আরও ছয়টি গন্তব্যে ফ্লাইট পরিচালনা করতে চায় সংস্থাটি। বছরের পর বছর অনিয়ম, ভোগান্তি আর বেশি ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে বিমানের বিরুদ্ধে। সঠিক ব্যবস্থাপনার অভাবে সরকার হারাচ্ছে কাক্সিক্ষত রাজস্ব। নানা সময়ে বিমানের সিডিউল বিপর্যয়ের ফলে  যাত্রীরা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন।

দুর্নীতি, অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোকসানের বোঝা নিয়ে চলছে বিমান বাংলাদেশ। দুর্নীতি-অনিয়মে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়ায় সংস্থাটি অভিযোগের গণ্ডি পার করতে পারছে না। নানা অনিয়মের পাশাপাশি উড়োজাহাজের সিট বাণিজ্যেও পিছিয়ে পড়ছে বাংলাদেশ বিমান। বাংলাদেশ বিমানের সেবা নিয়ে প্রবাসী রেমিটেন্স যোদ্ধাদের অসন্তুষ্টি বহুদিনের। 
দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যের গাঁথুনিকে পুঁজি করে বাংলাদেশ বিমান পেরিয়েছে পাঁচ দশক। কিন্তু এখনো বিমান যাত্রীবান্ধব সেবা থেকে পিছিয়ে রয়েছে বলে অভিযোগ করছেন প্রবাসীকর্মীরা। দেশের এয়ারলাইন্সগুলো থেকে দিগুণ ভাড়া নেওয়া এবং পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধার অভাবের কথা বিবেচনায় নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া একান্ত প্রয়োজন। বাংলাদেশভিত্তিক যাত্রী নির্ভরতা, টিকিট বাণিজ্যসহ নানা গাফিলতির কারণেই অনেক ফ্লাইটে মিলছে না কাক্সিক্ষত যাত্রী।

অন্য দেশের এয়ারলাইন্সগুলোতে যাত্রীর সংখ্যা কমে গেলে বা কোনো অনিয়ম হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহি করতে হয়। কিন্তু বাংলাদেশে সেই উদাহরণ নেই বললেই চলে। এতে বাড়ছে অনিয়মের মাত্রা। ফ্লাইট পরিচালনায় যে কোনো সিদ্ধান্তে বিচক্ষণতা না থাকায় বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনায় নানামুখী সংকট তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশের উন্নয়ন অভিযাত্রা এগিয়ে নিতে হলে এসব বিষয়ে সঠিক তদারকির মাধ্যমে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ সময়ের দাবি।

×