(গতকালের চতুরঙ্গ পাতার পর)
জিয়া এরশাদ খালেদার আমলে কিন্তু এমনটি দেখানো যাবে না। শুধু তাই নয়, আওয়ামী লীগ আমলেই গরিবরা কিন্তু কিছু পায়। এখানে গরিবদের জন্য বর্তমান আমলে যে বিশাল কর্মযজ্ঞ তার ফিরিস্তি আমি দেব না। ফিরিস্তি দিলে এ প্রবন্ধের পরিধি বেড়ে যাবে। এ দেশটি স্বাধীন করেছিল গরিবরা, এ রাষ্ট্রে গরিবদেরই প্রাধান্য পাওয়ার কথা। ১৯৭৫ পরবর্তী শাসকরা গরিবদের পক্ষে ছিলেন না। আওয়ামী লীগ নির্বাচনী ইশতেহার করার সময় শুধু এ বিষয়টি মনে রাখে না, কার্যকর করারও চেষ্টা করে।
আওয়ামী লীগে সমষ্টিগত নেতৃত্বে থাকলেও কর্তৃত্ব সভাপতির হাতেই থেকেছে। শাহরিয়ার কবির লিখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে এক সভায় বাংলাদেশে নিযুক্ত ভূতপূর্ব রাষ্ট্রদূত মাইলাম বলেছেন, জামায়াত ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন রাজনৈতিক দলে স্বচ্ছতা নেই, নির্বাচন নেই। তিনি খোলাখুলি জামায়াতের সাপোর্টার অনেক দিন থেকে। তার এবং তার মতো মানুষজনের কারণেই মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ মনে করত, জামায়াত গণতন্ত্রমনা দল। শাহরিয়ার অবশ্য এর যোগ্য জবাব দিয়েছেন।
[দৃষ্টব্য ইউটিউব]। মাইলাম নয়, এখানেও সুশীল সমাজের অনেকে তাই বলেন। কিন্তু এটি ঠিক নয়। সব দলই কম বেশি কাউন্সিল করে। আওয়ামী লীগ সবসময়ই তা করেছে একেবারে নির্দিষ্ট সময়ে না হলেও। নির্বাচনের ব্যাপারও আছে। কিন্তু কাউন্সিলররা সব দায়িত্ব সভাপতির ওপরই ন্যস্ত করেন। কাউন্সিলে এক বিতর্ক হয় না বা কার্যনির্বাহী সভায় প্রশ্ন উত্থাপন করা হয় না তাও নয়। তবে, শেষ কথা সভাপতিরই। এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলের ঐতিহ্য। সংস্কৃতি আমরা যারা এর সমালোচনা করি, তা করি, পাশ্চাত্যের নিরিখে। কিন্তু, উপমহাদেশের এই ঐতিহ্য পাশ্চাত্য ভাবধারা নষ্ট করতে পারেনি। আমি বিষয়টিকে অন্যভাবে দেখি। আওয়ামী লীগ যারা করেন তারা ঠিক করবেন তাদের দল কিভাবে চলবে। আমি আপনি সেখানে ডিকটাট করার কে? আমার বা আপনার সংসার কিভাবে চলবে সে বিষয়ে রাজনৈতিক দল তো ডিকটাট করে না। তবে, তারা কী করল, তাদের কর্মসূচী অবশ্যই আমাদের সমালোচনার বিষয় এবং আমরা তা করেও থাকি।
আওয়ামী লীগ শুরু থেকেই একটি ক্ষেত্রে সৌভাগ্যবান। ১৯৪৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত সব সময় তারা বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্য সংস্কৃতিসেবীদের সমর্থন পেয়েছে। বাংলাদেশের অন্য কোন দল এ সমর্থন পায়নি। এ দেশে সাহিত্য সংস্কৃতি কর্মীদের এক ধরনের প্রভাব আছে, সেটি অস্বীকার করতে পারেন, কিন্তু আছে। ১৯৫২ থেকে এ পর্যন্ত, প্রতিটি রাজনৈতিক আন্দোলনে সংস্কৃতি কর্মী, সাংবাদিকরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। পরে রাজনৈতিক দল যোগ দিয়েছে। সংস্কৃতি কর্মীদের এ ভূমিকা হয়ত তেমন মূল্যায়িত হয়নি কিন্তু এটি সত্যি। এবং এতে আওয়ামী লীগ সব সময় লাভবান হয়েছে। এ মুনাফা অতি বেশি এ কারণে যে এখানে লেনদেনের কোন সম্পর্ক নেই যেটি আছে অন্যান্য সব সেক্টরে। বিএনপি-জামায়াত আমলে যে সংস্কৃতি কর্মীদের, সাংবাদিকদের জেলে নেয়া হয়েছিল, অত্যাচার করা হয়েছিল তার একটি কারণ সংস্কৃতিসেবীদের ভূমিকা। সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি খালেদা-নিজামী ফখরুলদের নিপীড়ন তাদের পতন ত্বরান্বিত করেছিল এবং এ ফ্রন্ট থেকে তারা কোন সমর্থন ভবিষ্যতে পাবে না। দু’একজন গায়ক গায়িকা বা সংস্কৃতিকর্মী ব্যক্তিগতভাবে পাকিস্তানীদের সমর্থক হতে পারে সেটি তেমন কোন বিষয় না। চলবে...
শীর্ষ সংবাদ: