ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সুশৃঙ্খল-স্মার্ট সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে’

প্রকাশিত: ২০:৩৮, ২০ ডিসেম্বর ২০২৩

‘স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সুশৃঙ্খল-স্মার্ট সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে’

বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান।

স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে বিজিবি’র প্রতিটি সদস্যকে সুশৃঙ্খল ও স্মার্ট সৈনিক হিসেবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান। 

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ দিবস-২০২৩’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিশেষ দরবারে সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের উদ্দেশ্যে একথা বলেন।

বিজিবি মহাপরিচালক বলেন, ‘আজ বাহিনীর সকল সদস্যের জন্য একটি বিশেষ দিন। গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যমন্ডিত এই বাহিনী আজ ২২৯ বছরে পদার্পণ করল। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই শুভদিনে বিজিবি মহাপরিচালক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ৭৫-এর ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণকারী তার পরিবারবর্গ, মহান মুক্তিযুদ্ধের সকল বীর শহীদ বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধে জীবন উৎসর্গকারী এ বাহিনীর দুই জন বীরশ্রেষ্ঠসহ ৮১৭ জন অকুতোভয় বীরযোদ্ধা এবং প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বাহিনীর উন্নয়ন-অগ্রগতি ও দেশমাতৃকার সীমান্তরক্ষা করতে গিয়ে বাহিনীর যে সকল সদস্য জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদেরকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিষ্ঠালাভের পর থেকে এ বাহিনী সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও অখন্ডতা রক্ষা এবং সীমান্ত সুরক্ষার পাশাপাশি চোরাচালান রোধ, নারী-শিশু ও মাদক পাচার রোধসহ যেকোনো আন্তঃসীমান্ত অপরাধ দমনে অত্যন্ত দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রেখে চলেছে। স্বাধীনতার পর দেশগঠন এবং দেশ মাতৃকার সেবায় এ বাহিনীর অবদান অনস্বীর্কার্য। দেশের অভ্যন্তরীণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাসহ যেকোনো দুর্যোগময় মুহুর্তে জনগণের সেবায় তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করেছে। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশের স্থানীয় ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিশ্বস্ততা ও সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে বিজিবি আজ দেশবাসীর আস্থা ও নির্ভরতার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে।’ 

মেজর জেনারেল নাজমুল হাসান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সানুগ্রহ পৃষ্ঠপোষকতা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতায় বিজিবি আজ একটি সুসংগঠিত, চৌকস, সুশৃঙ্খল, পেশাদার ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন অত্যাধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে পরিগণিত হয়েছে। ২০১০ সালে বাহিনী পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় কমান্ডস্তর বিকেন্দ্রীকরণ করে নতুন নতুন রিজিয়ন, সেক্টর, ব্যাটালিয়ন ও বিওপি স্থাপন ও প্রয়োজনীয় জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। উন্নয়নের ক্রমধারায় ৭৩টি আধুনিক কম্পোজিট বিওপি নির্মাণ এবং হেলিকপ্টার, এপিসি, এটিভি, এয়ার বোট, এটিজিডব্লিউ এবং এন্টি ট্যাংক এলোকেশন-১০০এম২ সহ অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি সংযোজনের মাধ্যমে বিজিবি একটি বিশ্বমানের আধুনিক ত্রিমাত্রিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে জল, স্থল ও আকাশপথে দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালনে সক্ষম। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন দুর্গম বিওপিসমূহকে যোগাযোগের আওতায় আনা হয়েছে। বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবি’র প্রতিটি সদস্য সততা, আনুগত্য, কর্তব্য নিষ্ঠা ও শৃঙ্খলা-এই চারটি গুণের সংমিশ্রণ ঘটিয়ে বিজিবিকে বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে আত্মপ্রকাশে গৃহিত সকল কার্যক্রমের সফল বাস্তবায়নে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।’

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার প্রত্যয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যাশিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে বিজিবি’র প্রতিটি সদস্য সুশৃঙ্খল ও স্মার্ট সৈনিক হিসেবে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে-আজকের দিনে এটাই প্রত্যাশা।’

এর আগে,আজ যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজিবি দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে দিবসের কর্মসূচি অনুযায়ী ফজরের নামাজের পর পিলখানাসহ সারাদেশে বিজিবি’র সকল ইউনিটের মসজিদে বিজিবি’র উত্তরোত্তর অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এরপর মহাপরিচালকের সচিবালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিজিবি’র রেজিমেন্টাল পতাকা উত্তোলন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পিলখানাস্থ ‘সীমান্ত গৌরব’-এ পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিজিবি মহাপরিচালক। এরপর পিলখানাস্থ সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে বিজিবি মহাপরিচালক বিজিবি সদস্যদের বিশেষ দরবার গ্রহণ করেন। দরবার শেষে পদোন্নতি প্রাপ্ত চার জনকে অনারারী সুবেদার মেজর হতে অনারারী সহকারী পরিচালক এবং দুই জনকে অনারারী সহকারী পরিচালক হতে অনারারী উপপরিচালক পদে র‍্যাংক ব্যাজ পরিধান করানো হয়। পরে পিলখানায় আয়োজিত প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে বিজিবি মহাপরিচালক সকল পর্যায়ের বিজিবি সদস্যদের সাথে প্রীতিভোজে অংশগ্রহণ করেন। এসময় বিজিবি’র সকল কর্মকর্তা, জুনিয়র কর্মকর্তা ও অন্যান্য পদবীর সৈনিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

 

এম হাসান

সম্পর্কিত বিষয়:

×