স্টাফ রিপোর্টার ॥ ২০০০ সালের ২০ জুলাই গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বোমা পুঁতে রেখে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা চেষ্টা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামির ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ) ও আপীল আবেদনের ওপর শুনানি অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তী দিন ১ ফেব্রুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে। ওই দিনে মামলার শুনানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। অন্যদিকে রাজধানীর নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের বিষয়ে দুর্নীতির মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সিলেটের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কারা উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিকের আবেদন (রিভিশন) উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছে হাইকোর্ট। এদিকে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও টাকা পাচারের অভিযোগের মামলায় কুয়েতে গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের স্ত্রী-কন্যার জামিন আবেদনে নথি জালিয়াতি হয়েছিল কিনা, সে বিষয়ে ১১ ফেব্রুয়ারি রায়ের দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চগুলো এ আদেশ প্রদান করেছে।
শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ১০ জঙ্গীর ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড) নিশ্চিতকরণ) এবং আসামিদের আপীলের ওপর রাষ্ট্রপক্ষের শুনানির জন্য আগামী ১ ফেব্রুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছে হাইকোর্ট। সোমবার বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি মোঃ বদরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন এ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও ডেপুটি এ্যাটর্নি জেনারেল ড. মোঃ বশির উল্লাহ ও সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল এমএমজি সারোয়ার পায়েল। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোঃ নাসির উদ্দিন ও মোহাম্মদ আহসান। পরে ড. মোঃ বশির উল্লাহ জানান, সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে মামলার পেপারবুক শুনানি করা হয়েছে। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ মামলার যুক্তিতর্ক ও বিভিন্ন মামলার নজির হাইকোর্টে লিখিতভাবে দাখিল করা হবে। একই দিনে মামলার শুনানি শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
২০১৭ সালের ২০ আগস্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মমতাজ বেগম ১০ জঙ্গীর সর্বোচ্চ শাস্তি দেন। গুলি করে প্রত্যেকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আদেশ দেয় আদালত। এছাড়া চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড প্রদান করে। মামলায় নিম্ন আদালতের রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তরা হলো ওয়াশিম আখতার ওরফে তারেক হোসেন, মোঃ রাশেদ ড্রাইভার ওরফে আবুল কালাম, মোঃ ইউসুফ ওরফে আবু মুসা হারুন, শেখ ফরিদ ওরফে মাওলানা শওকত ওসমান, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বক্কর, হাফেজ মাওলানা ইয়াহিয়া, মুফতি শফিকুর রহমান, মুফতি আবদুল হাই ও মাওলানা আবদুর রউফ ওরফে আবু ওমর।
পাশাপাশি আসামি মেহেদি হাসান ওরফে আবদুল ওয়াদুদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। আসামি আনিসুল ওরফে আনিস, মোঃ মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান এবং সরোয়ার হোসেন মিয়াকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অনাদায়ে আরও এক বছরের দণ্ড দেয়া হয়। পরে এ মামলার রায়সহ সব নথি ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট হাইকোর্টে পাঠানো হয়। এরপর প্রধান বিচারপতির কাছে নথি উপস্থাপন করা হলে তিনি জরুরী ভিত্তিতে এ মামলার পেপারবুক তৈরির নির্দেশ দেন। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এরই মধ্যে পেপারবুক তৈরি হলে হাইকোর্টে আসামিদের ডেথ রেফারেন্স ও আপীলের ওপর শুনানি শুরু হয়। কিন্তু হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ কয়েকবার পুনর্গঠন হওয়ায় মামলাটির শুনানি পিছিয়ে যায়।