ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে অনিয়মের অভিযোগে শোকজ

প্রকাশিত: ১১:৪৬, ২০ আগস্ট ২০১৯

 মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে অনিয়মের অভিযোগে শোকজ

নিজস্ব সংবাদদাতা, ভৈরব, ১৯ আগস্ট ॥ ভৈরবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও আটক বাণিজ্যের অভিযোগ ওঠেছে। ফলে সার্কেল ইন্সপেক্টর মাসুদুর রহমানসহ সিপাহীকে শোকজ করা করা হয়েছে। তাদের আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে। এছাড়াও সেন্টু রঞ্জন নাথ নামে একজন সাব ইন্সপেক্টরকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক মোঃ হাবীব তৌহিদ ইমাম। জানা গেছে, জেলার ১৩টি উপজেলার মধ্যে ছয়টি উপজেলা নিয়ে ভৈরব মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিস। এই সার্কেল অফিস থেকে ভৈরবসহ কুলিয়ারচর, বাজিতপুর, নিকলী, অষ্টগ্রাম ও কটিয়াদী উপজেলায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভৈরবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিস থাকলেও শহরের কমলপুর, পঞ্চবটি, চন্ডিবের, কালিপুরসহ উপজেলার শ্রীনগর, আগানগর, সাদেকপুর, গজারিয়া, শিবপুর, শিমুলকান্দি ও কালিকাপ্রসাদ ইউনিয়নের পাড়া-মহল্লায় মাদকের ছড়াছড়ি। ফলে হাত বাড়ালেই মেলে মরণ নেশা শুধু তাই নয়, শহরের পাওয়ার হাউসের হরিজন কলোনি এবং চান্দানি টিলায় প্রতিদিন শত শত লিটার চোলাই মদ তৈরি হলেও নজর নেই সার্কেল অফিসের। এমনকি শহরের আমলাপাড়ায় খোদ সার্কেল অফিসের চারপাশে মাদকের ছড়াছড়ি থাকলে যেন দেখার কেউ নেই। ফলে নির্বিঘ্নে মাদক কারবার করছে। আর মাদকের টাকা জোগাড় করতে শহরে বাড়ছে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা। ফলে প্রায়ই ঘটছে হতাহতের ঘটনাও। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কয়েক মাস চাকরির সুবাদেই মাদক বিক্রেতাদের সঙ্গে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সার্কেল অফিসের লোকজনের সখ্যতা গড়ে ওঠে। ফলে প্রতি মাসে হাতিয়ে নেয় তারা মাসোহারা। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেও দেখা যায়, চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীদের না ধরে গাঁজাসেবীদের আটক করে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে দু’একজনকে সাজা দেয়া হয়েছে। আবার কখনও কখনও চিহ্নিত মাদক বিক্রেতাদের কেউ আটক হলেও মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, গেল তিনমাস আগে শিবপুর ইউনিয়নের শম্ভুপুর গ্রামের কালা মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালায় সার্কেল অফিসের লোকজন। এ সময় কালা মিয়াকে না পেয়ে ঘরের ভেতরে তল্লাশি করার সময় আলমিরাতে রাখা তার মেয়ের বেতনের দশ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠে সাব ইন্সপেক্টর সেন্টু রঞ্জন নাথ ও তার সহকর্মী সিপাহীদের বিরুদ্ধে। এ ঘটনার পরদিন কালা মিয়ার মেয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অধিদফতর বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি হয়েছে কি না- এ বিষয়ে জানেন না কেউ। এছাড়াও রেলস্টেশন এলাকা থেকে হাতকড়া পরিয়ে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগও রয়েছে এ সার্কেল অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে।
×