ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

মীরসরাইয়ে ১৭ মাসের শিশুকে ধর্ষণ, ধর্ষক মুয়াজ্জিন গ্রেফতার

প্রকাশিত: ১০:২১, ১১ আগস্ট ২০১৯

 মীরসরাইয়ে ১৭ মাসের শিশুকে ধর্ষণ, ধর্ষক মুয়াজ্জিন গ্রেফতার

নিজস্ব সংবাদদাতা, মীরসরাই, চট্টগ্রাম, ১০ আগস্ট ॥ মীরসরাইয়ে মাত্র ১৭ মাস বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত মোঃ শিহাব উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (৯ আগস্ট) রাতে নেয়াখালী জেলা সদর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে ঘটনার আটদিন পর শুক্রবার বিকেলে মোঃ শিহাবের বিরুদ্ধে ওই শিশুর বাবা বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত শিহাব উদ্দিন উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের আবুরহাট বাজারের মোঃ আশরাফ উদ্দিন জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন হিসেবে কর্মরত ছিল। সে নোয়াখালী জেলা সদরের মোঃ ওজিউল্যার ছেলে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উক্ত ধর্ষণের ঘটনার পর স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল এই ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য গত শনিবার (৩ আগস্ট) সকাল ১০টায় শালিসের নামে ভুক্তভোগী শিশুটির বাবার সঙ্গে ধর্ষকের কোলাকুলি করে মীমাংসা করে দেন। এরপর ওই শিশুর বাবা শিশুটিকে (৪ আগস্ট) মস্তাননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার এই ঘটনাকে ধর্ষণের ঘটনা উল্লেখ করে শিশুটিকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার নিয়ে যাওয়ার জন্য পরামর্শ দেন। এই ব্যাপারে ভুক্তভোগী শিশুর মা বলেন, গত শুক্রবার দুপুর ২টায় আমার ভাতিজীর কাছ থেকে আমার পাশের বাসার ভাড়াটিয়া শিহাব উদ্দিন আমার শিশুটিকে চকোলেটের লোভ দেখিয়ে তার বাসায় নিয়ে যায়। এসময় আমি গোসল করার জন্য বাইরে ছিলাম। কিছুক্ষণ পর শিশুটি শিহাব উদ্দিনের বাসায় জোরে কান্নাকাটি শুরু করলে পাশের বাসার এক মেয়ে শিশুটিকে শিহাব উদ্দিনের ঘর থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে আমি গোসল করে ফিরে আসার পর দেখি শিশুটি মাত্রাতিরিক্ত কান্না করছিল এবং শিশুটি দাঁড়াতে ও বসতে পারছে না। এরপর আমি শিশুটির পরণের প্যান্ট খুলে দেখি শিশুটির যৌনাঙ্গ ক্ষতবিক্ষত হয়ে আছে। আমার স্বামী রাতে বাসায় ফিরলে বিষয়টি আমি তাকে জানাই। ভুক্তভোগী শিশুর বাবা বলেন, আমি অত্যন্ত দরিদ্র মানুষ, তাই আমি শিশুটিকে পরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যেতে পারিনি। পরে আবুরহাট বাজারের একটি হোমিওপ্যাথি ওষুধের দোকান থেকে সামান্য ওষুধ কিনে খাওয়াই। ঘটনার পর টাকার অভাবে ও ভয়ে তাৎক্ষণিকভাবে থানায় গিয়ে অভিযোগ করতে পারিনি। তাই শুক্রবার ৯ আগস্ট আমি ন্যায়বিচারের আশায় জোরারগঞ্জ থানায় মামলা করতে এসেছি। এই ব্যাপারে অভিযুক্ত শিহাব উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে তার প্রকৃত ঠিকানা ও ধর্ষণের ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসকের দেয়া রিপোর্টকে ভুল বলে মন্তব্য করেন। জোরারগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, শুক্রবার (৯আগস্ট) মোঃ শিহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে ওই শিশুর বাবা মামলা দায়ের করেন। এরপর রাতে অভিযান চালিয়ে নোয়াখালী সদর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকাবাসী এই ঘটনার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে এবং অবিলম্বে ধর্ষকসহ যারা বিচারের নামে মীমাংসার প্রহসন তৈরি করেছে তাদেরকেও বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে।
×