ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

ঋষিজের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল সুকান্তজয়ন্তী উদযাপন

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২৩ জুলাই ২০১৯

ঋষিজের আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল সুকান্তজয়ন্তী উদযাপন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা সাহিত্যের বিকাশ এবং তাকে বিশ্ব সভায় মেলে ধরেছেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। সুরের পথিক কাজী নজরুল ইসলাম ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে স্বাধীনতাকামী মানুষের অন্তরে ছড়িয়েছেন উদ্দীপনা। অন্যদিকে সাহিত্যে গণমানুষের কথা বলেছেন সুকান্ত ভট্টাচার্য। বাংলা সাহিত্যের এই তিন মহীরুহের জন্মজয়ন্তী উদযাপিত হলো এক আয়োজনে। বাংলা সাহিত্যের কালজয়ী তিন কবির প্রতি ভালবাসা জানালো সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। সোমবার বিকেলে জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে রবীন্দ্র-নজরুল ও সুকান্তজয়ন্তী শীর্ষক অনুষ্ঠানে সম্মাননা জানানো হয় অধ্যাপক আফসার আহমদ, রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী তপন মাহমুদ ও রোকাইয়া হাসিনা নেলীকে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। প্রধান বক্তা ছিলেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ। সভাপতিত্ব করেন ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর সভাপতি ফকির আলমগীর। সুরের আশ্রয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। ঋষিজের শিল্পীরা গেয়ে শোনান ‘হিমালয় থেকে সুন্দরবন’, ‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর’ ও ‘আগুন জ্বালো’ গানগুলো গেয়ে শোনান। আলোচনা পর্বে খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, কিছুদিন ধরে আমরা দেশব্যাপী সামাজিক অবক্ষয় লক্ষ্য করছি। গুজব ছড়িয়ে, নানা চক্রান্ত করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু এটা বাংলাদেশ। এদেশের মানুষ ৫২ সালে হারেনি ৭১ সালেও হারেনি। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ পেয়েছি এবং বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত দেশের পথে যাত্রা শুরু করেছি। সুতরাং আমাদের পরাজিত করার সুযোগ নেই। জয় আমাদের নিশ্চিত। সাহিত্যিকত্রয়ী প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তারা প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক। এই প্রাসঙ্গিকতা ধারণ করেই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা এগিয়ে চলেছি। কোন কিছুই আমাদের কাছে প্রতিবন্ধক নয়। বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, আমরা পেছনের দিকে যাত্রা করছি। ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনি দিয়ে মানুষকে মারা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর জন্য মানুষের মাথা লাগার মতো গুঞ্জন সৃষ্টি হয়েছে। এটা আমাদের বাংলাদেশ নয়। বাংলাদেশকে নতুন করে গঠন করতে হবে। প্রয়োজনে ধ্বংস করে নতুনের জয়গান গেয়ে যেতে হবে। আলোচনা ও সম্মাননা পর্ব শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করেন আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত বিদ্যানিকেতন, আনন্দন, সমস্বর ও পঞ্চভাস্বরের শিল্পীরা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন ইকবাল খোরশেদ, রফিকুল ইসলাম, ফয়জুল আলম পাপ্্পু ও অনন্যা লাবনী পুতুল। একক কণ্ঠে সঙ্গীত পরিবেশন করের তপন মাহমুদ, ফকির আলমগীর, ফাহিম হোসেন চৌধুরী, সমর বড়ুয়া ও বিমান চন্দ্র বিশ্বাস। পিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল শুরু ॥ আকারে ছোট। তবে বার্তাগুলো বড়। সেলুলয়েডের পর্দায় বর্ণিত হলো সম্প্রীতির কথা ও শান্তির বার্তা। সেই বার্তায় সোমবার থেকে শুরু হলো দুই দিনের পিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। শান্তির অন্বেষায় চলচ্চিত্র নিয়ে উদ্যোগে ফিল্মস ফর পিস ফাউন্ডেশন এ উৎসবের আয়োজন করেছে। সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান স্মৃতি মিলনায়তনে উৎসবের উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এমপি। সংগঠনের পরিচালক রোকেয়া প্রাচীর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের পরিচালক শাহীন আনাম, অধ্যাপক সি আর আবরার, চলচ্চিত্র নির্মাতা কাওসার আহমেদ চৌধুরী এবং সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক পারভেজ সিদ্দিকী। হাছান মাহমুদ বলেন, জঙ্গীবাদ-উগ্রবাদ নিরসন এবং শান্তি ও মানবিকতা সংরক্ষণে চলচ্চিত্র অনবদ্য ভূমিকা রাখতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যাপ্তির এ যুগেও মানবিকতার বিকাশ ঘটাতে ও সমাজকে শান্তির পথে এগিয়ে নিতে চলচ্চিত্রের বিকল্প নেই। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রটিয়ে দেয়া পদ্মা সেতুতে বলিদানের গুজব আর সেই থেকে ছেলেধরা আতঙ্ক এবং অসহিষ্ণু মানুষের গণপিটুনিতে নির্দোষ প্রাণের মৃত্যু- এসব রুখতে প্রয়োজন সহিষ্ণুতা আর শান্তির পক্ষে সচেতনতা। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে তথ্যপ্রবাহের ক্যানভাস আমূল বদলে গেছে। আগে মানুষ তার মতামত-অভিযোগ জানাতে পত্রিকার আশ্রয় নিতে হতো, আর এখন কেউ চাইলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে লাখ লাখ মানুষের কাছে তার কথা পৌঁছাতে পারে। মানবিকতাবোধ আর শান্তি রক্ষার শপথে বলীয়ান থাকলেই কেবল অশান্তি-হানাহানি এড়ানো সম্ভব। উদ্বোধনী আনুষ্ঠানিকতা শেষে শুরু হয় চলচ্চিত্র প্রদর্শনী। উদ্বোধনী দিনে ১৫টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়।
×