ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ তদন্ত করবে মিয়ানমারের সামরিক আদালত

প্রকাশিত: ১১:০২, ১৯ মার্চ ২০১৯

রোহিঙ্গা নিধনযজ্ঞ তদন্ত করবে মিয়ানমারের সামরিক আদালত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে হত্যাযজ্ঞ তদন্তে সামরিক আদালত গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। একজন মেজর জেনারেল ও দুই কর্নেল পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে গঠিত এই কমিটি রাখাইনে ২০১৭ সালে সংঘটিত রোহিঙ্গা নিধন নিয়ে তদন্ত করবে। খবর ওয়েবসাইটের ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনের কয়েকটি নিরাপত্তা চৌকিতে হামলার পর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। সন্ত্রাসবিরোধী শুদ্ধি অভিযানের নামে শুরু হয় নিধনযজ্ঞ। হত্যা-ধর্ষণসহ বিভিন্ন ধারার মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটিত হতে থাকে ধারাবাহিকভাবে। এমন বাস্তবতায় নিধনযজ্ঞের বলি হয়ে রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয় প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা। আগে থেকে উপস্থিত রোহিঙ্গাদের নিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সংখ্যা দাঁড়ায় প্রায় দশ লাখে। এসব রোহিঙ্গা বাংলাদেশের বিভিন্ন আশ্রয় শিবিরে বসবাস করছে। মিয়ানমার সেনাপ্রধান সিনিয়র জেনারেল মিন আউং হ্লাংয়ের ওয়েবসাইটে এক সামরিক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘ঘটনার সত্যতা উদ্ঘাটনে একটি তদন্ত আদালত গঠিত হয়েছে। জাতিসংঘ এবং এ্যামিনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও হিউম্যান রাইটস ওয়াচের মতো মানবাধিকার সংগঠনগুলোর অভিযোগ খতিয়ে দেখবে এই আদালত। গত বছর জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন অভিযোগ করেছিল, ‘গণহত্যার উদ্দেশ্য’ নিয়েই রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছিল সেনাবাহিনী। আন্তর্জাতিক আইনের গর্হিত লঙ্ঘন অভিযোগ করে তারা মিন আউং হ্লাংসহ আরও পাঁচজন জেনারেলের পরিবর্তনের সুপারিশ করে। তবে মিয়ানমার অভিযানে হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করে। সর্বশেষ গত মাসে মিন আউং বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েক সদস্য এই হত্যাকাণ্ডে যুক্ত থাকতে পারে। এর আগে ২০১৭ সালে সামরিক বাহিনীর এক তদন্ত প্রতিবেদনে সেনাবাহিনীকে নির্দোষ বলে অ্যাখ্যা দেয়া হয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক নিকোলাস বেকুইলিন বলেন, নতুন এই আদালত আরেকটি অশুভ বিশ্বাসের রণকৌশল। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের গর্হিততম লঙ্ঘনের অভিযোগ রয়েছে। তারপরও তারা কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সেনাবাহিনীর নিজেদের বিষয়ে তদন্ত করার এই পরিকল্পনা ভ্রান্তিকর ও বিপজ্জনক। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত এই সহিংসতার জন্য প্রথামিক তদন্ত কমিটি খুলেছে। ফিলিপিন্স কূটনীতিক রোজারিও মানালো এবং জাতিসংঘে নিযুক্ত সাবেক জাপানি রাষ্ট্রদূত কেনজো ওশিমাকে রয়েছেন এই কমিটিতে।
×