নিজস্ব সংবাদদাতা, ঠাকুরগাঁও, ১৬ জানুয়ারি ॥ দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছেন, যাদের জমি আছে, কিন্তু বাড়ি করার সামর্থ নেই, কুড়েঘর ও বাঁশের ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন এবং বন্যায় যাদের বাড়িঘর নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে সেসব দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে সরকার নিজের অর্থায়নে ঘর নির্মাণ করে দেবে। এজন্য সরকার ৩১৬ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
মন্ত্রী বুধবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন জায়গায় নিম্নমানের কম্বল বিতরণের বিষয়ে আমরা অভিযোগ শুনেছি। এই কম্বলের ক্রয় প্রক্রিয়ার সঙ্গে যারা জড়িত ছিল তাদের বিষয়ে সচিব ও ডিজি মহোদয়কে ডেকে একটি কমিটি করে দেয়া হয়েছে। তারা তদন্ত করবেন। যদি কোন অনিয়ম হয়ে থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী ইশতেহার ছিল এদেশে কেউ গৃহহীন থাকবে না। তারই পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এ বছর ফেব্রুয়ারি থেকে জুন মাসের মধ্যে সারাদেশের ৬৪ জেলায় ৫শ’ করে ঘর নির্মাণ করে দেবে এবং পরবর্তীতে আরও ৩২ হাজার ঘর নির্মাণ করে দেবে। জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের এমপি জাহিদুর রহমান জাহিদ, দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদফতরের মহাপরিচালক আবু সৈয়দ মোহাম্মদ হাসিম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাদেক কুরাইশি প্রমুখ। অনুষ্ঠানের শুরুতে ঠাকুরগাঁও-১ আসনের এমপি ও সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন অনুষ্ঠানে পৌঁছেই প্রতিমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসনের প্রতি নাখোশ হন। তাকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে আগে অবগত না করায় তিনি প্রতিমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন,‘আমি যদি আমার এলাকায় ঢুকতে না দিতাম।’
অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসনের পক্ষে শীত বস্ত্র সংক্রান্ত তথ্য, পেপার কাটিং ও প্রশাসনের শীতবস্ত্র বিতরণের তথ্য তুলে ধরা হলেও ভিজিডি, ভিজিএফ, দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তসহ অন্য বিষয়ের তথ্য ও হিসাব-নিকাশ এবং বিভিন্ন প্রকল্পের নাম না থাকায় প্রতিমন্ত্রীর সফরসঙ্গী দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল অসন্তোষ প্রকাশ করেন। সেই সঙ্গে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন না করায় জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে উন্মুক্ত সভায় ভর্ৎসনা করেন। এসময় সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন এমপি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যস্ততা এবং কর্মকর্তাদের বেশিরভাগই নতুন হওয়ায় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্পন্ন না হওয়ায় মেয়াদ শেষ হলেও আরও সময় দেয়ার অনুরোধ জানান। পরে মন্ত্রী অসহায় দুই হাজার শীতার্ত মানুষের মাঝে একটি করে কম্বল ও চাল-ডাল-তেলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করেন।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: