ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

একদিকে মিথ্যাচার অপরদিকে কিছু রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার ভাঁওতাবাজি

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭

একদিকে মিথ্যাচার অপরদিকে কিছু রোহিঙ্গা ফিরিয়ে নেয়ার ভাঁওতাবাজি

চট্টগ্রাম অফিস/কক্সবাজার প্রতিনিধি ॥ রোহিঙ্গাদের গণহারে হত্যা, ঘরবাড়িতে আগুন দিয়ে বিতাড়ন প্রক্রিয়া নিয়ে বিশ্বজুড়ে যখন সোচ্চার ভূমিকা লক্ষণীয় তখন মিথ্যাচারে লিপ্ত মিয়ানমার সরকার শনিবার বাংলাদেশ থেকে কিছু রোহিঙ্গা শরণার্থী ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে। সে দেশের ক্ষমতাসীন দল এনএলডি নেত্রী আউং সান সুচি গণমাধ্যমকে বলেছেন, তার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া কিছু শরণার্থীকে যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে ফিরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া শুরু করতে তার সরকার প্রস্তুত রয়েছে। এ প্রক্রিয়া যে কোন সময় শুরু হতে পারে বলেও তিনি ঘোষণা দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর বর্বরোচিত কায়দায় নির্যাতন দীর্ঘ সময়ের। তবে গত ২৫ আগস্ট রাত থেকে রোহিঙ্গা বিরোধী যে সামরিক অভিযান শুরু হয়েছে তা শতাব্দীর ইতিহাসে একটি রেকর্ড হিসেবে ইতোমধ্যে চিহ্নিত হয়েছে। বিশ্ব হয়েছে সোচ্চার। জাতিসংঘ রয়েছে তৎপর। এ অবস্থায় আউং সান সুচির পক্ষে রোহিঙ্গাদের পালিয়ে যাওয়ার কারণ খঁজে বের করা এবং তাদেরকে যাচাই-বাছাই করে ফিরিয়ে নিতে তার দেশ প্রস্তুত হয়েছে বলে জানান দিলেন। সুচি এও বলেছেন, গত ৫ সেপ্টেম্বরের পর থেকে মিয়ানমার রাখাইন রাজ্যে সেনা অভিযান হয়নি। কিন্তু স্যাটেলাইটসহ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রোহিঙ্গা নিধনের যে নৃসংশ চিত্র প্রকাশ হয়েছে এবং এ ধরনের ঘটনা এখনও চলছে তা নিয়ে সুচি তা অস্বীকার করার অবস্থানেই রয়ে গেছেন। সঙ্গত কারণে প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে সুচি রাখাইন রাজ্যে কোন সেনা অভিযান শুরু হয়নি বলে দাবি করছেন সেখানে পালিযে যাওয়া রোহিঙ্গাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে ফিরিয়ে নেয়ার কথা কিভাবে আসে। মূলত মিয়ানমার সরকার তাদের বাণিজ্যিক স্বার্থকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলমান অধ্যুষিত এলাকায় গণহত্যা চালিয়েছে। গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। এর ফলে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে সীমান্ত অতিক্রম করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটি বর্তমানে বিশ্বজুড়ে অন্যতম একটি ভয়ানক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতিসংঘের চলমান অধিবেশনে বাংলাদেশের পক্ষে এ ব্যাপারে সোচ্চার ভূমিকা রাখা হয়েছে। সারা বিশ্বকে আহবান জানানো হয়েছে রোহিঙ্গা ইস্যুতে এগিয়ে আসার জন্য। এ অবস্থায় নিরাপত্তা পরিষদে রোহিঙ্গা ইস্যুটি দ্বিতীয় দফায় উত্থাপিত হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে। ইতোমধ্যে বার্তা সংস্থা এএফপির খবর অনুযায়ী, নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ৭ সদস্য যথাক্রমে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, মিসর, কাজাখস্তান, সুইডেন এবং সেনেগাল জাতিসংঘ মহাসচিবকে এ বিষয়ে দ্বিতীয় দফায় আলোচনার আহবান জানিয়েছে।
×