ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

টাঙ্গাইলে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সস্ত্রীক শিক্ষকের লাশ উদ্ধার

প্রকাশিত: ০৫:৫০, ২৮ জুলাই ২০১৭

টাঙ্গাইলে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে সস্ত্রীক শিক্ষকের লাশ উদ্ধার

নিজস্ব সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল, ২৭ জুলাই ॥ সদর থানার রসুলপুরে এক স্কুল শিক্ষক ও তার স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে সেপটিক ট্যাঙ্কের (একটি কুয়ার) মধ্যে ফেলে দেয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নিজ বাড়ির কুয়া থেকে লাশ দুটি উদ্ধার করা হয়। নিহতদের নাম অনিল কুমার দাস (৬৫) ও তার স্ত্রী কল্পনা রানী দাস (৫৫)। অনিল কুমার দাস রসুলপুর বাছিরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ছিলেন। বাছিরুন্নেছা উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনেই অনিল কুমার দাসের বাড়ি। তার দুই ছেলে মেয়ে। ছেলে নির্মল কুমার দাস ব্যাংকের কর্মকর্তা। মেয়ে অঞ্জনা রানী দাস উচ্চ শিক্ষা নিয়ে স্বামীর সঙ্গে আমেরিকায় বসবাস করছেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা পেশা শেষ করে বাড়িতেই অবসর জীবন যাপন করছিলেন তিনি। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই ওই বাড়িতে থাকেন। বুধবার রাতে তার সঙ্গে কথা হয়েছে বলে জানান রবি দাস নামের স্থানীয় এক লোক। এদিকে শিক্ষক অনিল কুমার দাস ও কল্পনা রানী দাসের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। হত্যার খবর পাওয়া মাত্রই তাদের লাশ একনজর দেখার জন্য বাড়িতে শত শত মানুষ ছুটে আসেন। রসুলপুর গ্রামের আবুল হোসেন নামের এক ব্যক্তি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন আমাদের স্যার অনিল দাস অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। তাদের এই হত্যা মেনে নেয়া যায় না। আমরা হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। নিহতের ভাই স্বপন সৌমিত্র দাস বলেন, দাদা বাড়িতে দালান নির্মাণ করছিলেন। রাতে তার দাদা ও বৌদি ঘুমিয়েছিলেন। সকালে রাজমিস্ত্রী বাসায় কাজের জন্য আসেন। এসে বাসার দরজা খোলা পান। পরে বাসায় কাউকে দেখতে না পেলে ডাকাডাকি শুরু করেন। প্রতিবেশীরাও এসে বাড়িতে কাউকে দেখতে না পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে টাঙ্গাইল সদর থানা পুলিশ ওই বাাড়িতে এসে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। পরে দেখতে পান বাড়ির ভেতরে শ্বাসরোধে হত্যা করে বস্তাভর্তি ইট গলায় বেঁধে সেপটিক ট্যাঙ্কের (একটি কুয়ার) ফেলে দেয়া হয়েছে। আমার দাদা ও বৌদি অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। তাদের হত্যা করতে পারে এমন কোন শত্রু আমার জানামতে নেই। গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রাজকুমার সরকার বলেন, খবর পেয়ে আমি ওই বাড়িতে গিয়ে পুলিশকে খবর দেই। পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে। স্যার ও তার স্ত্রী অত্যন্ত ভাল মানুষ ছিলেন। শিক্ষকতা জীবনে তার কোন শত্রু ছিল এমন কেউ বলতে পারবে না। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোবিন্দ চন্দ্র পাল, টাঙ্গাইল সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম। সদর থানার ওসি নাজমুল হক ভূইয়া বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে শ্বাসরোধ করে পরিকল্পিতভাবে হত্যাকা-টি ঘটানো হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য টাঙ্গাইল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
×