ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

হলে তল্লাশি ॥ অস্ত্রসহ আটক ৩

অন্তর্কোন্দল ॥ চবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৬ মে ২০১৭

অন্তর্কোন্দল ॥ চবি ছাত্রলীগের কার্যক্রম স্থগিত

চবি সংবাদদাতা ॥ একের পর এক অভ্যন্তরীণ কোন্দলই কাল হয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের। তেমনই এক সংঘর্ষের পর স্থগিত করা হয়েছে চবি ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম। বৃহস্পতিবার রাতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানায়। এছাড়া ওই রাতে চবির ৬টি ছাত্র আবাসিক হলে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে উদ্ধার করে ৩২ রাউন্ড গুলি এবং বিপুল পরিমাণ ধারালো দেশীয় অস্ত্র। আটক করা হয় এক বহিরাগতকে। পরদিন শুক্রবার চবির আশপাশে তল্লাশি চালিয়ে একটি শটগানসহ আটক করা হয় আরও তিনজনকে। তবে আটকদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। বিশ্ববিদ্যালয় ও পুলিশ সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার পূর্ব শত্রুতার জেরে দুপুর আড়াইটার দিকে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু এবং সাধারণ সম্পাদক ফজলে রাব্বী সুজনের অনুসারীরা। এতে উভয় গ্রুপের ৭ নেতাকর্মী আহত হন। বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হলেও সন্ধ্যার দিকে ফের সংঘর্ষে জড়ানোর চেষ্টা করে দুই পক্ষ। পরে রাত সাড়ে দশটার দিকে চবির শাহ আমানত ও শাহজালাল হলে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। এরপর চবির আবাসিক হল সোহরাওয়ার্দী, এ এফ রহমান, আলাওল, আব্দুর রব হলেও অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় হলগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ দেশীয় ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এসব অস্ত্রের মধ্যে ছিল রামদা, দা, রড কাটার মেশিন, রড, লাঠিসহ বিপুল পরিমাণ পাথর। এছাড়া আমানত হল থেকে উদ্ধার করা হয় ৩২ রাউন্ড গুলি। আটক করা হয় এক বহিরাগতকে। এছাড়া শুক্রবার দিনব্যাপী চবি ও এর আশপাশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ বিষয়ে চবি সহকারী প্রক্টর মিজানুর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার বেলা তিনটা পর্যন্ত পুলিশের অভিযান চলছিল। পুলিশ নিজেদের তথ্য অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাচ্ছে। মূলত মামলার আসামিদের ধরতেই এই অভিযান পরিচালিত হচ্ছে। এটি সম্পূর্ণ পুলিশের অভিযান।’ এদিকে চবিতে একের পর কোন্দল ও সংঘর্ষের ঘটনায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চবি শাখার বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত স্থগিত করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ সিদ্ধান্ত জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সংগঠনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং ঢেলে সাজাতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ বলেন, ‘চবি ইউনিটের যে বিশৃঙ্খলা তা দূর করতেই এমন সিদ্ধান্ত। এ সিদ্ধান্তের পর থেকে কেউ আর চবি ছাত্রলীগের পদ-পদবি ব্যবহার করে কোন ধরনের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত করতে পারবে না।’ কেন্দ্রের এমন সিদ্ধান্তে মিশ্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন চবি ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। একাধিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বললে তাদের কেউ কেউ জানান, ‘চবি ছাত্রলীগ একটি বড় ইউনিট। এখানে ছোটখাট ভুল বোঝাবুঝি থাকবে। আর এটিকে কেউ মাথাব্যথা বিবেচনা করে মাথা কেটে ফেলার মতো সিদ্ধান্ত নিলে তা হবে অযৌক্তিক।’ আবার ভিন্ন কাথাও বলছেন অনেকে। তারা বলছেন, ‘কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ আমাদের অভিভাবক। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটি আমাদের মেনে নিতে হবে। তারা কখনও আমাদের খারাপ চিন্তা করবেন না।’
×