সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য শুরু হলো কৈলাসের ক্যাম্পেন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো নোবেলজয়ী ভারতীয় কৈলাস সত্যার্থীর ক্যাম্পেইন। রবিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ‘হানড্রেড মিলিয়ন ফর হানড্রেড মিলিয়ন’ নামের এ ক্যাম্পেইনের নানা দিক তুলে ধরেন শান্তিতে নোবেল বিজয়ী মানবাধিকারকর্র্মী কৈলাস সত্যার্থী। ‘১০ কোটি শিক্ষা বঞ্চিত মানুষের জন্য আমরা ১০ কোটি, আমাদের ভবিষ্যত আমরাই গড়বো’Ñ সেøাগানে এ ক্যাম্পেইন চলবে। ক্যাম্পেইনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে গণসাক্ষরতা অভিযান। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেনÑ গণসাক্ষরতা অভিযানের নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ। শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ও কৈলাশ সত্যার্থী সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের ঝুঁকিপূর্ণ শ্রম ও পাচার থেকে শুরু করে সকল নির্যাতন থেকে রক্ষা করতেই কয়েকটি দেশের সিভিল সোসাইটি নিয়ে হানড্রেড মিলিয়ন ফর হানড্রেড মিলিয়ন ক্যাম্পেইনটি শুরু করেছি। ক্যাম্পেইনটি শুরুর আগে অনেক গবেষণা হয়েছে এবং সুনির্দিষ্টভাবে সমস্যাগুলোকে বুঝতে চেষ্টা করা হয়েছে। সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়ার প্রায় সকল বিষয়গুলোকে কাজে লাগানোর চেষ্টাও করা হবে। ফলে এ ক্যাম্পেইনে শতভাগ সফলতার আশা রয়েছে। কৈলাস সত্যার্থী বলেন, বর্তমান বিশ্বে ২৫ বছরের কম বয়সী মানুষ বা যুব সম্প্রদায়ের সংখ্যা প্রায় ৩০০ কোটি। যাদের বড় অংশই সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত এবং তারা মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। ১০০ মিলিয়নের বেশি শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে জড়িত যার মধ্যে ৫ মিলিয়ন শ্রমদাস হিসেবে কাজ করছে। এর মধ্যে অন্যতম বঞ্চিত রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা। তিনি আরও বলেন, এখনও বিশ্বব্যাপী ১০০ মিলিয়নের বেশি শিক্ষার্থী রয়ে গেছে স্কুলের বাইরে। গত ১০ বছরে ২ মিলিয়ন শিশু মারা গেছে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও সহিংসতার কারণে। মেয়ে শিশু ও নারীর ওপর নির্যাতনের হারও বাড়ছে প্রতিনিয়ত। এসব বিবেচনায় আমাদের এই ক্যাম্পেইনে ১০টি দেশকে আমরা একত্র করেছি। এছাড়া ভবিষ্যত প্রজন্মকে যারা নেতৃত্ব দেবে সেই যুব সম্প্রদায়ের ১০০ মিলিয়ন সদস্যকে সম্পৃক্ত করে সুবিধাবঞ্চিত ১০০ মিলিয়ন শিশু-কিশোর-যুবদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করবে এই ক্যাম্পেইন। বাংলাদেশে গণসাক্ষরতা অভিযান এই ক্যাম্পেইনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করায় গণসাক্ষরতা অভিযানকে তিনি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান। এক প্রশ্নে কৈলাস সত্যার্থী বলেন, বিশ্বের মধ্যে বাংলাদেশ কারও চেয়ে পিছিয়ে নেই। বাংলাদেশ আমার সেকেন্ড হোম। এই ক্যাম্পেইন প্রথমে ভারতে শুরু হয়। এবার বাংলাদেশে শুরু হলো। কিছু শিশু সুবিধাবঞ্চিত আর কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত। আমরা এসব বৈষম্য কাম্য করি না। সকলের মৌলিক অধিকার আদায়ে এই ক্যাম্পেইন কাজ করে যাবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বাংলাদেশ থেকে সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের সুস্থ জীবনে ও শিক্ষায় ফিরিয়ে আনা, নারীর প্রতি সহিসংতা ও নিরক্ষরতা দূরীকরণসহ বেশ কয়েকটি উদ্দেশ্য রয়েছে এই ক্যাম্পেইনের। এর আগে গত রবিবার ঢাকায় সেন্ট জোসেফ স্কুলে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়। মঙ্গলবার থেকে বাংলাদেশে এর আনুষ্ঠানিক ক্যাম্পেইন শুরু হলো।