স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের অসমাপ্ত বক্তব্য উপস্থাপনের জন্য নতুন তারিখ ঠিক করেছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার আগামী ৫ জানুয়ারি এ তারিখ ধার্য করেন। একই আদালতে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরার জন্য দিন ধার্য ছিল। ওই মামলায়ও সময়ের আবেদন করা হলে আদালত ৫ জানুয়ারি তারিখ ধার্য করেন। বকশীবাজারে কারা অধিদফতরের প্যারেড মাঠে বিশেষ জজ আদালতের এই অস্থায়ী এজলাসে খালেদার বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি ও অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার চলছে। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া বৃহস্পতিবার ১০টা ৩৫ মিনিটে তার গুলশানের বাসা থেকে রওনা হয়ে ছেটে ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর বড় মেয়ে জাফিয়া রহমানকে নিয়ে এগারোটা ৩৫ মিনিটে আদালতে পৌঁছান।
বৃহস্পতিবার ঢাকার বকশীবাজারের তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদারের আদালতে তদন্ত কর্মকর্তাকে জেরা করেন আসামি শরফুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী। এ দিন বেগম খালেদা জিয়া এ মামলায় হাজিরা প্রদান করেন। মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে তদন্ত কর্মকর্তার জেরা শেষ করেছেন আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন, এ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া, তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জমিরুদ্দিন সরকার, এ জে মোহাম্মদ আলী ও আব্দুর রেজাক খান। অন্যদিকে অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল।
জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের তিন কোটি ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের এ মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে আদালতের কাছে সুবিচার চান তিনি। এরপর মামলার কার্যক্রম স্থগিতের জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন বিএনপির চেয়ারপার্সন। শপথ আইন ‘না মানার’ কারণ দেখিয়ে ৩২ জনের সাক্ষ্য নতুন করে নেয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয় ওই আবেদনে। ১৫ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার পক্ষে সাফাই সাক্ষী দেয়ার জন্য ২২৫ জনের তালিকা আদালতে জমা দেয়া হয়। কিন্তু খালেদা উপস্থিত না হওয়ায় তার অসমাপ্ত আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানি পিছিয়ে যায়। খালেদা জিয়ার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন হাইকোর্টে করা ওই আবেদনের কথা তুলে ধরে সময়ের আবেদন করেন। তিনি বলেন, এ মামলার বাদী সাক্ষ্য দেয়ার শপথ নেয়ার সময় সৃষ্টিকর্তার নাম নেননি, যার ফলে শপথ আইন ভঙ্গ হয়েছে। অন্যদিকে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল এর বিরোধিতা করে বলেন, এদিন আত্মপক্ষ সমর্থন করার কথা। অন্য কোন বক্তব্য আসামিপক্ষ দিতে পারে না। তাছাড়া আসামিপক্ষের আবেদনে হাইকোর্ট যেহেতু স্থগিতাদেশ দেয়নি, সেহেতু মামলা চলতে কোন বাধা নেই বলে যুক্তি দেন কাজল।
শুনানি শেষে বিচারক খালেদার সময়ের আবেদন মঞ্জুর করে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের বাকি বক্তব্য শোনার জন্য ৫ জানুয়ারি নতুন দিন ঠিক করে দেন। জিয়া দাতব্য ট্রাস্টের নামে আসা তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। খালেদা জিয়া ছাড়া অভিযুক্ত অপর আসামিরা হলেন বিগত চারদলীয় জোট সরকার আমলে খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব বর্তমানে বিআইডব্লিউটিএর নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।