ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১

বসন্তে ফুলের গহনা

কারিমুন্নেছা হক

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

বসন্তে ফুলের গহনা

বসন্তে ফুলের গহনা

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নুসরাত জাহান। স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীন এক সুদর্শন যুবকের প্রেমে পড়েন। নুসরাত চার বছর ধরে ভালোবাসার মানুষটিকে নিয়ে বুনছে নানান স্বপ্ন। কিছুদিনের মধ্যেই তার সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেবে। প্রকৃতির নিয়মে আগমন ঘটেছে ঋতুরাজ বসন্তের। চারদিকে ফাল্গুনের এই নির্মল আবেশে চাইছে তার বিয়ের আয়োজন করতে। নুসরাতের পছন্দ তাজা ফুলের গহনা। তাই আগেই অর্ডার দিয়েছে শাহবাগের এক ফুলের দোকানে।

সদ্য স্নাতকোত্তর শেষ করা নুসরাত বিশেষ মুহূর্তকে স্মরণীয় করে রাখতে গোলাপ ও জারবারা ফুলের পাড়সহ গাঁজরা ফুলের ওড়না পরার পরিকল্পনা করেছেন। নুসরাতের মতো অনেক মেয়েই বিয়ের সাজে বেছে নিচ্ছেন তাজা ফুলের গহনা। বর্তমানে শহর ও গ্রামের অধিকাংশ গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে বউ সাজানো হয় তাজা ফুলের গহনায়।

অনেকে আবার প্লাস্টিক ফুল দিয়ে তৈরি গহনাও পরেন। স্মৃতি হিসেবে গহনা রেখে দেওয়ার জন্য। তবে কৃত্রিমতার থেকে প্রাকৃতিক জিনিসে মানুষের আকর্ষণ থাকে বেশি। আর তাজা ফুল সৌন্দর্য বর্ধন করায় দেশে ফুলের চাহিদা বিগত কয়েক বছর যাবত বেড়েছে বহুগুণ।
বিশুদ্ধতার প্রতীক ফুল। আর ফুলের প্রতি মানব প্রেম চিরন্তন। গ্রামের বাড়িতে দেখা যায় ঘরের কোণে ছোট ছোট ফুলের বাগান। শখের বশে এসব বাগান করছে শুধু দেখতে ভালো লাগে তাই। আবার শহরের ছোট ছোট বারান্দায় সুসজ্জিত করে রাখা হয় ফুলের টব। ফুলকে কে না ভালোবাসে! এ জন্যই ফুল শুধু গাছেই শোভা পাচ্ছে না, তরুণীদের সৌন্দর্য বর্ধনে সাজসজ্জার অন্যতম অনুষঙ্গে পরিণত হয়েছে।

বিয়ের কনের চুলের সাজ ফুল ছাড়া কখনো সম্পন্ন হয় না। তেমনি অনুষ্ঠানের অতিথি তরুণীরাও খোঁপায় ও বেণিতে ফুল দিয়ে নিজেকে করে অনন্যা। প্রতিনিয়ত ফুল দিয়ে সাজার প্রবণতা বাড়ছে। ফুলের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কৃত্রিম ফুলের বাজারও তৈরি হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক ফুলের সুবাস ও মুগ্ধতা মানুষকে বরাবরই আকর্ষিত করছে। তাই তো প্রেমিক যুবকরা ঘুরতে গেলেও প্রেমিকার মাথায় ফুল গুঁজে দিয়ে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। কেননা ভালোবাসার মানুষটির বাড়তি সৌন্দর্য তাকে মুগ্ধ করে।

ফুল ফুটুক আর না ফুটুক সত্যিই বসন্ত এসে গেছে। ব্যস্ত নগরী রাজধানীর হাতিরঝিলে ফুটপাতসংলগ্ন পলাশ গাছগুলো ফুল দিয়ে আপনমনে সাজিয়ে রেখেছে রাস্তাগুলো। যেন শুধু বসন্ত নয় সমগ্র মানবকুলকে রঙিন করে দেওয়ার পাঁয়তারা। শুভ্রতার আলো ছড়িয়ে দেয় ঋতুরাজ বসন্ত। নতুন পত্র-পল্লবে গাছে গাছে নব উন্মাদনা। আমের মুকুলে ভরে গেছে আম গাছ। মাসব্যাপী আয়োজিত অমর একুশে বইমেলাও বসন্ত বরণ উৎসবকে দেয় ভিন্ন মাত্রা।

মেলায় প্রতিদিনই লোকে লোকারণ্য থাকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে পাওয়া যায় প্রাণের স্পন্দন। তাই মনের খোরাক মেটাতে বইপ্রেমীরা ছুটে যায় বইমেলায়। তবে ঘর থেকে কোথায় যাওয়ার আগে অবশ্যই প্রস্তুতি প্রয়োজন। যদি হয় বসন্তকালীন ঘোরাফেরা সেক্ষেত্রে নিজেকে আরও যত্ন নিয়ে গোছানো প্রয়োজন। অনেকেই প্রকৃতির বসন্ত বরণ দেখতে ছুটে যান কোনো প্রাকৃতিক পরিবেশে। তবে যেখানেই যান না কেন এ সময়ের সাজে ব্যবহার করতে পারেন তাজা ফুল। প্রকৃতিপ্রেমী বাঙালি রমণীদের মাথায়, গলায়, কানে ও হাতে ফুলের গহনা শোভা পায় বিভিন্ন রূপে।

×