ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার্লিনে ম্যাক্রোঁ ও মেরকেলের বৈঠক

ঐক্যবদ্ধ ইউরোপ চাই

প্রকাশিত: ০৪:২৬, ২০ নভেম্বর ২০১৮

ঐক্যবদ্ধ ইউরোপ চাই

নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে ইউরোপকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। রবিবার বার্লিনে জার্মান চ্যান্সেলর এ্যাঞ্জেলা মেরকেলের সঙ্গে বৈঠককালে তিনি এই আহ্বান জানান। ম্যাক্রোঁ তার দেশের সঙ্গে জার্মানির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, ‘বিশ্বকে নৈরাজ্যের দিকে চলতে দেয়া যায় না।’ এএফপি ও বিবিসি। ম্যাক্রোঁ ও মেরকেলের বৈঠকে প্রতিরক্ষা, অভিবাসন, ডিজিটাল কোম্পানিগুলোর ওপর করারোপ ও ইউরোজোনসহ নানা বিষয় উঠে আসে। তারা ফ্রাঙ্কো-জার্মান সম্পর্ককে শক্তিশালী ইউরোপের ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করেন। ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘বিশ্বকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেয়া যায় না, বরং শান্তির পথেই একে পরিচালিত করতে হবে, এই বাধ্যবাধকতা থেকে ফ্রান্স ও জার্মানি একসঙ্গে কাজ করতে পারে।’ তিনি বলেন, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ইউরোপের দেশগুলোকে নিজেদের দায়িত্ব নিজেদের বুঝে নিতে হবে। ম্যাক্রোঁ জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা সবাই যেন ঐক্যবদ্ধ হতে পারি সেই লক্ষ্যে আগামী বছরের মে মাসের মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছানো যেতে পরে। মেরকেল বলেন, শক্তিশালী ইউরোপ গড়তে ফ্রান্স ও জার্মানির সম্পর্ক অবশ্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। তিনি বলেন, ইউরোপ এখন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছে। বাকি বিশ্বের সামনে এই মহাদেশ কিভাবে নিজেকে উপস্থাপন করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় এখনই। বিশ্বযুদ্ধে নিহত জার্মানদের স্মরণে ‘গণ শোকদিবস’ পালন উপলক্ষে ম্যাক্রোঁ জার্মাানি সফর করেন। দুই নেতা সোমবার ইউরো গ্রুপ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এই বৈঠকে তারা একক মুদ্রা ব্যবহারকারী দেশগুলোর জোট ইউরোজোনের বাজেট নিয়ে আলোচনা করেন। এরপর ইইউ নেতৃবৃন্দ বিশেষ ব্রেক্সিট শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন। ম্যাক্রোঁ ও মেরকেল ইউরোপের দেশগুলোকে নিজেদের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব নেয়ার আহ্বান জানান। ইউরো মুদ্রা নিয়ে আগামী মাসে একটি ইউরোপীয় শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দুই নেতার কেউই গুগল ও আমাজনের মতো ডিজিটাল কোম্পানির ওপর কর আরোপ করতে রাজি হননি। ফ্রান্স ও ইউরোপীয় কমিশন বলেছে এ ধরনের কর আরোপ করার বিষয়ে ৩৬ সদস্যবিশিষ্ট অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন এ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওনসিডি) ঠিক করবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ফ্রান্স ও জার্মানি ইউরোপের দুটি বৃহৎ দেশ। এই দুই দেশ একটি বৃহৎ শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে। তবে এই দুই নেতারই নিজ নিজ দেশে জনসমর্থনের ঘাটতি রয়েছে। জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রবিবার ফ্রান্সের কয়েকটি শহরে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়। এসব বিক্ষোভে আড়াই লাখের বেশি মানুষ অংশ নেয়। অন্যদিকে মেরকেল কয়েক দফা চ্যান্সেলর থাকার পর এখন শেষবারের মতো এই পদে আছেন। আনুষ্ঠানিক বৈঠকে দুই নেতার মধ্যে সম্পর্কে উষ্ণতা প্রকাশ পেলেও ইউরোপীয় অর্থনৈতিক ইসু্যুতে ফ্রান্স ও জার্মানির মতপার্থক্য গোপন থাকেনি। মেরকেল ম্যাক্রোঁর ইউরোপীয় সেনাবাহিনী গঠনের প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। তারা দুজনই এ বিষয়টির ওপর গুরুত্বারোপ করেন যে, নিজেদের নিরাপত্তার জন্য ইউরোপের দেশগুলোর এখন যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কোন বাইরের শক্তির ওপর নির্ভরশীলতা কমানো উচিত। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্র্রাম্প সম্প্রতি এক টুইটে মন্তব্য করেছেন যে, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলোর উচিত জোটের জন্য আরও বেশি অর্থ ব্যয় করা। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে থেকেই ট্রাম্প অবশ্য এ ধরনের কথা বলে এসেছেন।
×