ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা

আবদুল্লাহ আল মামুন

প্রকাশিত: ০১:০৪, ৩১ মার্চ ২০২৪

বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

বাঙালি জাতির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এক অবিস্মরণীয় নাম। বাংলাদেশের স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল দ্রষ্টা তিনি। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা আন্দোলন সর্বত্রই তিনি ছিলেন অগ্রনায়ক। তাঁর দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বের জন্য বাঙালি জাতি পেয়েছে একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র। ১৭ মার্চ এই মহান ব্যক্তির জন্মদিন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে তরুণ প্রজন্মের ভাবনাগুলো তুলে ধরেছেন- আবদুল্লাহ আল মামুন

মুজিব মানে অনুপ্রেরণা
প্রতিটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পেছনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকে কোনো না কোনো মহানায়কের নাম। তেমনিভাবে বাংলাদেশ নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বীরত্বে গাঁথা অকুতোভয়, নির্ভীক এক মহানায়কের নাম। তিনি হলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। দীর্ঘ নয়মাস লাখো মানুষের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীনতা। আর যাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বে বাংলাদোশের স্বাধীনতার পটভূমি রচিত হয়েছে, তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তাঁর ৭ মার্চের ভাষণে উজ্জীবিত হয়েছিল বাংলার প্রতিটা মানুষ। দেখেছিল বাংলাদেশের মুক্তির সোনালি স্বপ্ন। সে স্বপ্নকে মনেপ্রাণে ধারণ করে, বাংলাদেশকে ভালোবেসে, নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে অন্যায়-নির্যাতনকে মাটিচাপা দিতে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এদেশের সূর্য সন্তানরা। ঘাতকের বুলেটের সামনে বিলিয়ে দেয় বুকের তাজা রক্ত। সে সাহস, অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে বঙ্গবন্ধু।
মাহফুজ শুভ্র
অর্থনীতি বিভাগ, চট্টগ্রাম বিশ্বিবদ্যালয়

বাংলাদেশের পথচলার অনুপ্রেরণা বঙ্গবন্ধু
প্রাকৃতিক সম্পদে আশীর্বাদপুষ্ট বাংলা অঞ্চল বহু বহির্শক্তির আক্রমণে জর্জরিত হয়েছে বারবার। শাসন ও শোষণে বরাবরই অভিশাপপ্রাপ্ত ছিল বঙ্গ নামক এই নিরীহ কন্যা। ব্রিটিশ শাসনামলের পর নতুন উদীয়মান সূর্য বাংলার আকাশকে আলোকিত করলেও ঝলসে দিয়েছিল বঙ্গবাসীর ভাগ্যকে। আর এই ভাগ্য বদলানোর ইতিহাস বাংলায় ঝরিয়েছে বহু রক্ত। ১৯৪৮ থেকে ১৯৭১-এর বাংলার রক্তাক্ত, শোষিত ও নিপীড়িত ইতিহাস এবং স্বাধীনতার রঙিন আলোতে বাংলাকে আলোকিত করার ক্ষেত্রে যেই নামটি বঙ্গ আকাশে ঝলঝল করছে, তা হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

টুঙ্গিপাড়ার খোকা থেকে জাতির জনক হয়ে ওঠার সফর শেখ মুজিবের জন্য ছিল কণ্টকাকীর্ণ। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় কাটিয়ে দিয়েছে জেলের অন্ধকারে বাংলার স্বাধীনতার জন্য। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ জন্ম নেওয়া বাবা মায়ের তৃতীয় সন্তান শেখ মুজিবের যেন জন্মই হয়েছে বাংলাকে তার প্রাপ্য সম্মান এনে দেওয়ার জন্য। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার লড়াই, সবখানেই বঙ্গবন্ধু ছিল এক অকুতোভয় যোদ্ধা। যাঁর প্রাণসঞ্চারে দীপ্ত হয়ে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বাধীনতার জন্য। 
জান্নাত মেহবুবা
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গবন্ধু একটা উজ্জ্বল নক্ষত্র
স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের ইতিহাসে যার নামটি উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো দীপ্তমান, তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর আদর্শ ও চিন্তাভাবনা তরুণ প্রজন্মের জন্য এক অনুপ্রেরণার উৎস।
বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে লালন করে তারুণ্যের মেধা, যোগ্যতা, দুর্ভেদ্য শক্তিমত্তা ও অভিনবত্ব সর্বকালে প্রশংসিত। অসম্ভবকে সম্ভব করতে ঝুঁকি নিতে পারে শুধু তারুণ্য। একটি সমাজ, সভ্যতা ও জাতিসত্তার বিকাশে তারুণ্যের ভূমিকা অপরিসীম প্রশংসিত ও তাৎপর্যপূর্ণ।
তরুণ প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু নিঃসন্দেহে একজন দেশপ্রেমিক ও আদর্শ মহামানব। বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে তরুণ প্রজন্ম অসীম সাহসিকতায় পথ পাড়ি দিতে, অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে, মানবতার সেবা করতে, মাথা নত না করে ন্যায়ের পথে চলতে আর আত্মবিশ্বাসী ও আত্মপ্রত্যয়ী হতে শিখে। বঙ্গবন্ধুর পথচলা তরুণদের অসাম্প্রদায়িকতা ও দুর্নীতিমুক্ত মানুষ হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে উৎসাহিত করে। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে হোক দেশপ্রেমের শিক্ষা।

আবু ছালেহ সোয়েব 
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া কল্পনা করা যায় না
স্বাধীনতা আর বঙ্গবন্ধু শব্দ দুটি একে অপরের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কেননা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি ব্যক্তির নাম নয়, বরং এটি একটি ইতিহাসের নাম, আদর্শ রাজনীতি বাহকের নাম, তারুণ্যের পথপ্রদর্শকের নাম এবং এই নামই সংগ্রামের প্রতীক। ইতিহাস সাক্ষী অবিসংবেদিত নেতা জাতির পিতা  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পৃথিবীর মানচিত্রে যিনি এঁকে দিয়েছেন লাল-সবুজের নিশান।

তিনি শুধু একজন নেতা নন, তিনি একজন দার্শনিকও বটে। তিনি মুক্তিযুদ্ধের ২০ বছর আগে থেকেই স্বাধীন বাংলাদেশ দেখেছেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে তাঁর দৃঢ় এবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে আমাদের দিয়ে গেছেন স্বাধীন বাংলাদেশ। যিনি ৭ মার্চের আঠারো মিনিটের ভাষণে এক আঙুল উঁচিয়ে বাঙালিকে শিখিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ, স্বপ্ন দেখিয়েছেন স্বাধীনতার। সেই স্বপ্নের পথ ধরে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন মুক্তিযুদ্ধে, দীর্ঘ নয় মাস তরুণরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে লিখেছেন স্বাধীনতা। দেশ যখন চরম দুর্দশায় পতিত ছিল, দরকার ছিল বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ বজ্রধ্বনির নেতৃত্ব ও প্রেরণা। আমরা বাঙালিরা অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, আমরা তাঁকে পেয়েছি। স্বাধীনতা শব্দটা যেন বঙ্গবন্ধু ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। 

তামান্না আক্তার নূরা
ইংরেজি বিভাগ, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গবন্ধু বাঙালির মুক্তির কা-ারি
স্বাধীনতা যে কোনো জাতির সবচেয়ে বড় অর্জন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু ও বাঙালির স্বাধীনতা শব্দ দুটি একে অপরের পরিপূরক। বঙ্গবন্ধু তাঁর নেতৃত্বের এক সম্মোহনী শক্তি ও জাদুস্পর্শে বাঙালি জাতিকে জাগিয়ে তুলেছেন স্বাধীনতার মন্ত্রে। তাঁর বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মধ্য দিয়ে রক্তস্নাত পথে হেঁটে মানুষ দেশ স্বাধীন করেন। 
পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পরপরই এর রাজনীতির নিয়ন্ত্রণ চলে যায় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের হাতে। পূর্ব বাংলা অর্থনীতির কাঁচামাল জোগান দাতা হয়েও পাকিস্তানের একটি কলোনিতে পরিণত হয়। পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও বৈষম্য রোধে ১৯৬৬ সালে পূর্ব পাকিস্তানের বাঁচার দাবি ঐতিহাসিক ৬ দফা পেশ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। এর মধ্য দিয়েই মুজিব নির্ভীক ও আপোসহীন নেতায় পরিণত হন। ছয় দফা বাস্তবায়ন নিয়ে  পূর্ব পাকিস্তানজুড়ে আন্দোলন শুরু হয়, যেটি পরে গণজোয়ার তৈরি করে। 

মোজাহিদ হোসেন
ইতিহাস বিভাগ, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

×