সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান
চলতি অর্থবছরের দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) ক্রমাগতভাবে পণ্য রফতানি ক্রয়াদেশ কমেছে। আগামী মাসগুলোতে এটি আরও কমতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করছে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)। শনিবার রাজধানীর উত্তরায় সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। এ সময় সহ-সভাপতি শহীদুল্লাহ আজিমসহ পরিচালকরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান বলেন, আমরা দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত পোশাকশিল্পে টানা প্রবৃদ্ধি হয়েছে। প্রবৃদ্ধি হলেও গত দুই মাসে আমরা উদ্যোগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি ক্রমাগতভাবে ক্রয়াদেশ কমছে। আমাদের অন্যতম রফতানি বাজার ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে মূল্যস্ফীতি এবং মন্দার কারণে আগামী মৌসুমের জন্য গত দুই মাসে কার্যাদেশ প্রায় ২০-৩০ শতাংশ কমেছে।
তিনি বলেন, খুচরা বিক্রেতারা ক্রমবর্ধমানভাবে মুদ্রাস্ফীতির বিশ্ববাজারের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে সংগ্রাম করছেন। অনেক ব্র্যান্ডের পণ্যের খুচরা বিক্রি কমেছে। এতে তাদের অবিক্রীত পণ্য বেড়ে যাচ্ছে। এসব বিবেচনা করে আগামী মাসগুলোতে আমাদের রফতানি আরো কমতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বিশ্বজুড়ে জ্বালানি সঙ্কট চলছে। স্থানীয় পর্যায়ে গ্যাস-বিদ্যুতের সঙ্কটের প্রভাব আমাদের পোশাক শিল্পেও পড়ছে। এতে করে শিল্পে ব্যয় বাড়ছে দুভাবে। বিদ্যুতের অপ্রতুলতার কারণে কারখানাগুলোতে ডিজেল দিয়ে জেনারেটর চালানো হচ্ছে। অন্যভাবে অধিক সময় জেনারেটর চালানোর কারণে এগুলো দ্রুত বিকল হচ্ছে।
এতে করে শিল্পে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। এসময় তিনি সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, রফতানিমুখী শিল্পকারখানাগুলোতে বিশেষ ব্যবস্থায় চাহিদা অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত ও গ্যাস সরবরাহ করা হোক। একই সঙ্গে আরেকটি অনুরোধ হলো আমাদের উৎসে কর যা এ বছরে ১ শতাংশ করা হয়েছে, সেটি পূর্ববর্তী বছরের মতো একই পর্যায়ে রাখা হোক।
সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, আগামী ১২ নবেম্বর থেকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিস) ‘মেইড ইন বাংলাদেশ উইক’ অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন ১৩ নবেম্বর এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যার পর্দা নামবে আগামী ১৮ নবেম্বর। তিনি বলেন, ১৫ ও ১৬ নবেম্বর বসুন্ধরার ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি হল-১ এ দুদিনব্যাপী ঢাকা এ্যাপারেল সামিট অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা এ্যাপারেল সামিটের ৩য় সংস্করণটি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সব অংশীজনদের একই ছাদের নিচে নিয়ে আসবে, যেখানে তারা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পকে পরবর্তী স্তরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করবেন। তৈরি পোশাক মালিক ও রফতানিকারক সমিতি বিজিএমইএর উদ্যোগে বাংলাদেশ এ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের (বিএই) সার্বিক সহযোগিতায় সপ্তাহব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ঢাকা এ্যাপারেল সামিটে সরকারী, বেসরকারী খাত, দাতা সংস্থা, ব্র্যান্ড, শ্রমিক সংগঠন সবার সম্মিলিত প্রয়াসে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে ৯টি সেশনের আয়োজন করা হয়েছে।
এই সেশনগুলোতে আলোচনার বিষয়বস্তুর ওপর প্রবন্ধ, ভার্চুয়াল উপস্থাপন, শিল্পের অগ্রগতি এবং আগামী দিনে করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সহ-সভাপতি শহিদুল্লাহ আজিমসহ পোশাক শিল্প উদ্যোক্তারা।