ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল সীমান্তে অবৈধ বাণিজ্য

প্রকাশিত: ২৩:১৭, ২৯ মে ২০১৭

বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল সীমান্তে অবৈধ বাণিজ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার॥ বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল সীমান্তে বৈধ উপায়ের চেয়ে অবৈধ বাণিজ্যই হচ্ছে বেশি। আর পুরো দক্ষিণ এশিয়ায় তা মোট বাণিজ্যের ৭২ ভাগ। বিশেষ করে কৃষি উপকরণ ও কৃষিবীজ অধিকাংশেরই লেনদেন হয় অনানুষ্ঠানিক বা অবৈধ পথে। বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল সীমান্তের ৮টি পয়েন্টের ওপর চালানো জরিপে উঠে এসেছে এমন তথ্য। বিশ্লেষকরা বলছেন, পরীক্ষা নিরীক্ষা ছাড়া এসব বীজের অনুপ্রবেশ দীর্ঘমেয়াদে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য হুমকি। দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বন্ধু প্রতিম তিন দেশ বাংলাদেশ ভারত ও নেপাল। দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যিক সর্ম্পক যেমন বাড়ছে তেমনি সীমান্ত এলাকায় অনানুষ্ঠানিক বা অবৈধ পথে লেনদেনও কম নয়। বিশেষ করে কৃষি উপকরণ ও যন্ত্রাংশের অধিকাংশই কেনাবেচা হয় অনানুষ্ঠানিক বা অবৈধ পথে। এই যেমন ভারতের মালদা ও কোচবিহার সীমান্ত। এই দুই সীমান্ত দিয়ে বিআর-১১, সিডি পাম্প ও বিরি ২৮/২৯ এই কৃষি উপকরণগুলো বাংলাদেশ থেকে কিনেন ভারতীয় চাষীরা। একই ভাবে বাংলাদেশের রাজশাহী ও রংপুর সীমান্ত দিয়ে টমেটো বীজ, গুটি স্বর্ণা, ট্রাকটর এর যন্ত্রাংশ ও ডিএপি সার কেনেন বাংলাদেশের কৃষকরা। অন্যদিকে ভারত ও নেপালের ধানুসনা ও সুনসারি সীমান্ত দিয়ে ধান বীজ, সবজি বীজ ও বিভিন্ন রকমের স্প্রে মেশিন আদান প্রদান করেন দুই দেশের চাষীরা। তবে এই লেনদেন এর কোনো কিছুই হচ্ছেনা আনুষ্ঠানিক বা বৈধ কোনো পথে। কৃষকের কাছ থেকেই তা হাত বদল হয়ে যাচ্ছে দুই দেশের এজেন্ট ও ডিলার ও দালালদের কাছেও। সীমান্তের এই কৃষি উপকরনের ওপর সম্প্রতি জরিপ করেছে গবেষণা সংস্থা কাটস ইন্টারন্যাশনাল। তিন দেশের ৮টি বর্ডার অঞ্চলের ওপর চালানো হয় এ জরিপ। গবেষণা কাজে যুক্ত থাকা প্রতিষ্ঠান উন্নয়ন সমুন্নয় বলছে, উভয় দেশের জলবায়ুর মিল থাকায় এই পণ্যগুলোর চাহিদা তৈরি হয়েছে। তবে এসব বীজ উপকরণ কোনো পরীক্ষা-নিরীক্ষা ছাড়াই উৎপাদন করছেন চাষীরা। তাই এর খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা। গবেষণা পত্রে বলা হয়েছে, সীমান্ত এলাকার লোকদের সহজ প্রবেশাধিকার, সাংস্কৃতিক মেলবন্ধন এর সুযোগ নিয়ে চলছে এ লেনদেন। তবে মূল সমস্যা হিসেবে বলা হয়, আনুষ্ঠানিক পথে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ, ব্যাংক ও আর্থিক চ্যনেলগুলোতে বাড়তি খরচ, কাস্টমস পদ্ধতিতে জটিলতা, উচ্চ ট্যারিফ ও শুল্ক এমন বিষয়গুলো। মূলত আনুষ্ঠানিক পথে দ্রুত এবং কম মুল্যে পণ্য প্রাপ্তি নিশ্চিত হওয়ায় এমনটা হচ্ছে। গবেষণায় উঠে এসেছে গোটা দক্ষিণ এশিয়ার যে মোট বানিজ্য হয়, তার ৭২ ভাগ্য সম্পন্ন হয় অনানুষ্ঠানিক বা অবৈধ পথে।
×