ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকা-বরিশাল নৌরুট সচল রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ

প্রকাশিত: ২২:০১, ১৯ জুন ২০২১

ঢাকা-বরিশাল নৌরুট সচল রাখতে সর্বাত্মক উদ্যোগ

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ ভরা বর্ষায় অথৈ জলে টইটুম্বুর বাংলার নদী। স্রোতের তোড়ে কূল ছাপিয়ে কোথাও কোথাও জনপদে বৃষ্টি ও বানের জল। প্রকৃতির এই বৈচিত্র্যই সৌন্দর্যময় করে তোলে নদীমাতৃক বাংলাদেশকে। তবে বর্ষা পরবর্তী সময়ে প্রতিবছরই ঢাকা-বরিশাল-পটুয়াখালী নৌপথের কয়েকটি জায়গা এবং মাওয়া ফেরিঘাটে সৃষ্টি হয় নাব্য সঙ্কট। স্রোতের তোড়ে হারিয়ে যায় পথ নির্দেশক বয়াবাতি। মূলত নদীভাঙ্গন ও উত্তরাঞ্চলের বন্যায় তৈরি হওয়া পলিমাটি পানির সঙ্গে নেমে আসার কারণেই এ সঙ্কট সৃষ্টি হয়। পূর্বাভাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর নদীভাঙ্গন ও নদীপথে নাব্য সঙ্কটের আশঙ্কা অনেক বেশি। ফলে নাব্য সঙ্কট দূর করে যেকোন মূল্যে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ চালু রাখার জন্য মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। পূর্বাভাসের পর নাব্য সঙ্কটের সমাধানে সরেজমিন পরিদর্শনে গত ১৭ জুন উত্তাল মেঘনা পাড়ি দিয়ে ঢাকা থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত নৌপথ যাত্রা করছেন নৌ-প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পরিদর্শনের সময় তারা নদীপথের কোথায় কত মিটার গভীরতা রয়েছে, তা আধুনিক যন্ত্র দিয়ে মেপে দেখছেন। সরেজমিন পরিদর্শন করে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নাব্য সঙ্কট দূর করতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে ঢাকা-বরিশাল রুটের মিয়ারচর, পটুয়াখালীর কারখানা চ্যানেল ও পদ্মার মাওয়া ঘাট চালু রাখা। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেক সাংবাদিকদের জানান, পটুয়াখালী প্রবেশের মুখে কারখানা নদীতে এলাকাবাসী খনন কাজে বাধা দেয়ায় ওখানকার নাব্য সঙ্কটের সমাধান করা যাচ্ছে না। এছাড়া বাকি সমস্যাগুলো প্রাকৃতিক। নৌ-প্রতিমন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, নাব্য সঙ্কট দূর করতে ড্রেজার সংখ্যা বাড়িয়ে ৪৫টি করা হয়েছে। যেকোন মূল্যে নাব্য সঙ্কট দূর করে ঢাকা-বরিশাল নৌরুট সচল রাখা হবে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ৩১টি রুটের দিকনির্দেশক করা হয়েছে। এটির ওপর ভিত্তি করে ড্রেজিং করা হবে। বর্তমানে যেসব নৌরুটে নৌযান চলাচল করছে সেগুলোরও ড্রেজিং কাজ অব্যাহত থাকবে। সূত্রমতে, দক্ষিণাঞ্চবাসীর রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সহজ যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম নৌপথ। রাত্রিকালীন নৌ-ভ্রমণ আরামদায়ক বিধায় নৌরুটের বিলাসবহুল লঞ্চগুলোতে যাত্রীদের পদচারণাও বেশি। কিন্তু প্রতিবছর বর্ষা পরবর্তী সময়ে নাব্য সঙ্কটের কারণে চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে ঢাকা-বরিশাল নৌপথ। ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের বিলাসবহুল যাত্রীবাহী লঞ্চ সার্ভিস এমভি সুন্দরবন-১১ লঞ্চের মাস্টার আলমগীর হোসেন জনকণ্ঠকে বলেন, ঢাকা-বরিশাল নৌরুটে বরিশাল নদী বন্দর থেকে চাঁদপুর পর্যন্ত কমপক্ষে ছয়টি পয়েন্ট নাব্যসঙ্কটের কারণে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠে। এসব পয়েন্ট হয়ে যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করতে গিয়ে কখনও কখনও দুর্ঘটনার শিকারও হতে হয়। তিনি আরও বলেন, নাব্য সঙ্কটের কারণে মিয়ারচর চ্যানেলটি বন্ধ হয়ে গেছে। এক বছর ধরে ওই চ্যানেল হয়ে লঞ্চ চলাচল করতে পারছে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, সম্প্রতি সময়ে মিয়ারচর চ্যানেলের প্রবেশমুখে একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। সেটি উদ্ধার না করায় চ্যানেলটির বিভিন্ন পয়েন্টে পলি মাটি জমে নদীর গভীরতা কমে গেছে। এ কারণে বিকল্প চ্যানেল মেঘনার উলানীয়া-কালিগঞ্জ হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। এতে করে গন্তব্যে পৌঁছতে দুই ঘণ্টা সময় বেশি লাগার পাশাপাশি কমপক্ষে তিন ব্যারেল (ছয়শ’ লিটার) জ্বালানি তেল বেশি লাগে। বর্তমানে বিকল্প ওই চ্যানেলটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এ চ্যানেলটিও বন্ধ হয়ে গেলে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটের লঞ্চগুলোকে চলাচল করতে হবে ভোলার ইলিশা হয়ে। এতে করে গন্তব্যে পৌঁছতে আরও এক ঘণ্টা সময় বেশি লাগার পাশাপাশি জ্বালানি খরচও বেড়ে যাবে। অপরদিকে ঢাকা-বরিশাল নৌরুটের বাউশিয়া-নলবুনিয়া চ্যানেলে পলি মাটি জমে নদীর গভীরতা কমে গেছে। একই অবস্থা বরিশাল শহরের উপকণ্ঠ শায়েস্তাবাদের কীর্তনখোলা ও আড়িয়াল খাঁসহ তিন নদীর মোহনায়। সেখানে পলি মাটি জমে চ্যানেলটি বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিআইডব্লিউটিএর দায়িত্বশীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে উজান থেকে ২.৪ বিলিয়ন টন পলি ভাটিতে আসে। এছাড়া নদীভাঙ্গনের ফলেও বিপুল পরিমাণ পলির সৃষ্টি হয়। যার ৭০ ভাগ বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পরে এবং ৩০ ভাগ বিভিন্ন নদীতে জমে ডুবোচরের সৃষ্টি হয়। এতে নৌ-চলাচল ব্যাহত হয়। অপরদিকে বরিশাল-ঢাকা নৌরুটে নাব্য সঙ্কট সৃষ্টির জন্য বিআইডব্লিউটিএর অপরিকল্পিত ড্রেজিং ব্যবস্থাকেই দায়ী করেছেন লঞ্চ মালিক এবং মাস্টাররা। এর কারণ উল্লেখ করে তারা বলেন, বিআইডব্লিউটিএর উদ্যোগে নদীতে ড্রেজিং করার বছর যেতে না যেতেই তাতে আবার পলি জমে নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে। কেননা ড্রেজিংয়ের বালু যেস্থান থেকে কাটা হচ্ছে তা আবার এক থেকে দেড়শ’ মিটার দূরেই ফেলা হয়। ড্রেজিংয়ের বালু নদীতে না ফেলে অন্যত্র সরিয়ে ফেলা হলে প্রতিবছর এ সমস্যার সৃষ্টি হতো না বলেও তারা (লঞ্চ মালিক ও স্টাফ) উল্লেখ করেন। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএর বরিশালের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ড্রেজিংয়ের বালু নদীতে ফেলা ছাড়া কোন উপায় নেই। কেননা যে পরিমাণ বালু কাটা হয় তা স্থলে ফালানোর মতো জায়গা নেই। এ কারণে বিগত বছরেও আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম কারোর নি¤œজমি থাকলে তা বিনামূল্যে ড্রেজিংয়ের বালু দিয়ে ভরাট করে দেয়া হবে। কিন্তু কেউ বালু না নেয়ায় নদীতে ফেলা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। তীব্র হতে পারে নদীভাঙ্গন ॥ খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের ট্রাস্টি প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্টাল এ্যান্ড জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (সিইজিআইএস) পূর্বাভাসে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার নদীভাঙ্গন তীব্র হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। নদীভাঙ্গনে ১৩ জেলার ২৮ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে ২৮ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়। নদীভাঙ্গন কবলিত মানুষের জানমাল রক্ষার্থে সংস্থাটি প্রতিবছর এ ধরনের পূর্বাভাস দিয়ে থাকেন। গত বছরের পূর্বাভাসে বলা হয়েছিল, প্রায় ২৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে। তবে তা আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করে গত বছর প্রায় ৩৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। মূলত কয়েক দফা বন্যার কবলে পড়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রধান তিনটি নদীকে ঘিরে পূর্বাভাস দেয়া হলেও বাস্তবে মেঘনা, সুরমা-কুশিয়ারাসহ অন্যসব নদীতেও প্রতি বছর তীব্র ভাঙ্গন দেখা দেয়। বর্ষা মৌসুম শেষে বা বন্যার পর বঙ্গোপসাগরে হু হু করে পানি নামতে থাকায় মেঘনার নি¤œাংশ বা চাঁদপুর থেকে একদিকে বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর। আরেকদিকে ভোলা, লক্ষ্মীপুরেও প্রতিবছর ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দেয়। বিশেষ করে তেঁতুলিয়া নদীর কারণে পটুয়াখালীর বাউফল ও ভোলার বিভিন্ন স্থানে। লোহালিয়ার কারণে বাউফলের কালিশুরী ও দুমকীর চরগরবদী। সন্ধ্যা, সুগন্ধা, কীর্তনখোলা ও আড়িয়াল খাঁ নদীর কারণে প্রতিবছর বরিশালে ভয়াবহ ভাঙ্গন দেখা দেয়। এনিয়ে আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা খুব কমই হয়। সিইজিআইএসও এনিয়ে কাজ না করায় প্রকৃত চিত্র হিসেবের বাহিরে থেকে যাচ্ছে। সিইজিআইএসের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা বলেন, বড় বন্যা মানেই বড় ভাঙ্গন। গত বছর দেশ কয়েক দফায় বন্যার কবলে পড়েছে। এ কারণে নদীভাঙ্গনও বেশি হয়েছে। তাদের সংস্থা কেবল গঙ্গা, পদ্মা, ব্রহ্মপুত্র ও যমুনা নদীর ভাঙ্গন নিয়ে কাজের ব্যাপারে এখতিয়ারপ্রাপ্ত। তাই ঘোষণা থাকলেও মেঘনাসহ অন্য নদীগুলো নিয়ে তারা কাজ শুরু করতে পারেননি। অপরদিকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী ও বরিশাল-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় পরিকল্পিতভাবে নদীরক্ষা প্রকল্পের কাজ শুরু করা হয়েছে। এছাড়া নদী শাসন ও স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প গ্রহণ করেও কাজ শুরু করেছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, ইতোমধ্যে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল ও দেশের বিভিন্ন এলাকার ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে স্ব-স্ব এলাকার জনপ্রতিনিধি, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে চলমান উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং নদী ভাঙ্গন স্থায়ীভাবে প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে পরামর্শ নেয়া হয়েছে। বিদেশী প্রযুক্তির মাধ্যমে টেকসই প্রকল্প ॥ পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি বলেন, কুয়াকাটা ও কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে সরকার। ইতোমধ্যে পাউবোর সচিব ও মহাপরিচলকসহ একটি প্রতিনিধি দল নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ করেছেন। সেখানকার জনগণের জন্য নদী ও সমুদ্র ভাঙ্গনরোধে যে ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। একইভাবে ওই দেশের প্রযুক্তি ব্যবহার করে টেকসই বেড়িবাঁধসহ স্থায়ীভাবে ভাঙ্গনরোধে প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এজন্য নদী ও সমুদ্রের চারিত্রিক বৈশিষ্ট নির্ণয় করে স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন প্রতিরোধে প্রকল্প তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। সেখানে সম্ভাব্যতা যাচাই বাছাই শেষে একনেকে পাঠানোর হবে। এছাড়া উপকূলীয় বেড়িবাঁধ উন্নয়নে একটি প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে বলেও প্রতিমন্ত্রী উল্লেখ করেন। নদী তীরের গাছগুলো কাটবেন না ॥ পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কর্নেল (অব.) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি বলেছেন, মেহেরবাণী করে নদীর তীরের গাছগুলো কেউ কাটবেন না। আমফানের পর আমরা সাতক্ষীরাতে দেখেছি যেখানে নদীর তীরে গাছ ছিল সেসব স্থানে ভাঙ্গন দেখা দেয়নি। আর যেসব জায়গায় গাছ ছিল না সেখানে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদীর ভাঙ্গন প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কাজ অন্যদের মতো নয়; একেক জায়গার নদীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য একেক রকম। এটাকে বিচার-বিবেচনা করে আমাদের টেকনিক্যাল কমিটি দেখে এবং পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিতে হয় কীভাবে কাজ করতে হবে। কোন জায়গায় বাঁধ নির্মাণ করতে হবে, আবার কোন জায়গায় ড্রেজিং করতে হবে। এজন্য সময় লাগে। আর সময় নিয়েই এবার ভাঙ্গন প্রতিরোধে স্থায়ী সমাধানের জন্য আমরা কাজ করছি। তিনি আরও বলেন, আমরা নদীতে ড্রেজিং করি, তীর রক্ষায় বাঁধ করি কিন্তু একশ্রেণীর অসাধু লোক এসে নদীর তীর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে, এতে নদীর তীর ভেঙ্গে যায়। আর আমরা বাঁধ নির্মাণ করলে তাও ভেঙ্গে যাবে। অসাধু বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নদী শাসনে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ ॥ পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম এমপি জনকণ্ঠকে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের সব নদী শাসন ও ড্রেজিং করতে নির্দেশ দিয়েছেন। নদী ভাঙ্গনের কারণ তুলে ধরে প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা ভাটির দেশের মানুষ, তাই উজানে বন্যার সৃষ্টি হয়। নদী ভাঙ্গনের ফলে পানির সঙ্গে পলি নেমে আসে। প্রতি বছর নদী ভরাট হয়ে চর জেগে উঠছে এবং নদীর গতিপথও পরিবর্তন করছে। প্রতি বছর ভাঙ্গন রোধে বাঁধ দেয়া হচ্ছে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাজ স্থায়ী করতে কিছুটা সময় লাগছে। স্থায়ী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নে কিছুটা বিলম্বও হবে। এজন্য ভাঙ্গন কবলিত এলাকার মানুষকে একটু ধৈর্য ধরতে হবে। তিনি বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয়েছে। বিগত সরকার নদী শাসনে তেমন কোন অর্থ ব্যয় করেনি। করোনার কারণে আমাদের কাজের অগ্রগতি কিছুটা ধীরগতি হয়েছে। এ পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রী দেশের সব নদী শাসন করতে নির্দেশ দিয়েছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর শেখ হাসিনার মতো প্রধানমন্ত্রী এ দেশের মানুষ কখনও পায়নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা না থাকলে দেশে নতুন করে আর কোন উন্নয়ন হবে না, চলমান প্রকল্পগুলোও থেমে যাবে।
×