ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চীনের টিকা বুধবারের মধ্যেই আসবে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ৬ মে ২০২১

চীনের টিকা বুধবারের মধ্যেই আসবে ॥ পররাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চীনের তৈরি করোনার টিকা আগামী বুধবারের আগেই বাংলাদেশে আসবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। এছাড়া রাশিয়ার সঙ্গে স্পুটনিক টিকা আনতে চুক্তিও করা হচ্ছে। একইসঙ্গে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা পেতে ভারত ছাড়াও সাতটি দেশের যাদের হাতে মজুদ রয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি এই তথ্য জানান। ভারতের করোনার পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার কারণে নিজের দেশের জনগণকে প্রাধান্য দিতে সব দেশে টিকা রফতানি বন্ধ রেখেছে ভারত। যার কারণে সেরামের টিকার বিকল্প হিসেবে গত ২৯ এপ্রিল চীনা কোম্পানি সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকা জরুরী ব্যবহারের অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ সরকার। সিনোফার্মের তৈরি করোনাভাইরাসের টিকার আনুষ্ঠানিক নাম বিবিআইবিপি-সিওরভি। এই টিকাও ২৮ দিনের ব্যবধানে দুই ডোজ করে নিতে হয়। পরীক্ষামূলক প্রয়োগে এ টিকা ৭৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ কার্যকারিতা দেখিয়েছে বলে উৎপাদনকারীদের দাবি। এর আগে মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন বলেন, ঈদ-উল-ফিতরের আগেই টিকা ডেলিভারি দিতে চীন সরকার কাজ শুরু করেছে। ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জিমিং সম্প্রতি জানিয়েছেন, টিকা ঈদের আগেই ঢাকায় আসা শুরু করবে। মূলত মে দিবস উপলক্ষে চীনে ৫ দিনের ছুটি থাকায় টিকা আনার প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলেও তিনি জানিয়েছিলেন। ১৪ লাখ ডোজ টিকার ঘাটতি ॥ দেশে চাহিদার বিপরীতে এই মুহূর্তে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ ডোজ টিকার ঘাটতি রয়েছে। অর্থাৎ সময় মতো টিকা না আসলে প্রথম ডোজ নেয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ জন দ্বিতীয় ডোজের টিকা পাবেন না। স্বাস্থ্য অধিদফতর আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডাঃ মোহাম্মদ রোবেদ আমিন এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দেশে করোনাভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচী শুরু হয়েছিল। তখন থেকে এ পর্যন্ত টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ৫৮ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৭ জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৩১ লাখ ৬ হাজার ৭০৯ জন। অর্থাৎ দুই ডোজ মিলিয়ে মোট ৮৯ লাখ ২৬ হাজার ৪৬৬ ডোজ ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছে। টিকার বর্তমান মজুদের সঙ্গে হিসাব মিলিয়ে দেখা গেছে, ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ ডোজের সঙ্কট রয়েছে। রোবেদ আমিন বলেন, টিকা সঙ্কটের কারণে গত ২৬ এপ্রিল থেকে প্রথম ডোজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এখনও দ্বিতীয় ডোজ নেয়া বাকি ২৭ লাখ ১৩ হাজার ৪৮ জনের। দেশে এখন মজুদ টিকা আছে ১২ লাখ ৭৩ হাজার ৫৩৪ ডোজ। এ কারণে টিকার দ্বিতীয় ডোজের অনিশ্চয়তায় পড়েছেন ১৪ লাখ ৩৯ হাজার ৫১৪ জন। তিনি বলেন, চীনের টিকা ছাড়াও রাশিয়ার যে স্পুটনিক টিকা বাংলাদেশে আসার ব্যাপারে আলোচনা চলছে, সেটি দেশে আনতে ছাড়পত্র প্রয়োজন, যা বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আছে। আমরা আশা করছি দ্রুত গতিতে ছাড়পত্র পেলে রাশিয়ার টিকা আনতে সক্ষম হব। তিনি আরও বলেন, আমাদের বাংলাদেশের রেনেটা ফার্মাসিউটিক্যালস মডার্নার টিকা আনার জন্য সরকারের কাছে আবেদন করেছে। এটি নিয়েও তাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা বিদ্যমান আছে। এছাড়াও দেশের তিনটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি ইতোমধ্যে সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে তারা বাংলাদেশী টিকা উৎপাদন করতে চায়। তারা এটি নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং তাদের সক্ষমতাও স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ইতোমধ্যে দেখা হয়েছে। এই তিনটি কোম্পানি এক বছরে দেড় কোটি ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে।
×