ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি মিলেছে

প্রকাশিত: ২২:৪২, ১৯ এপ্রিল ২০২১

সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি মিলেছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সঙ্কট কেটেছে সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনার। শনিবার দিনভর ঢাকা ও রিয়াদের মধ্যেকার দেনদরবারে শেষ পর্যন্ত সৌদি আরবে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি মেলে। এতে বাতিল হওয়া দুটো ফ্লাইট ঢাকা ছেড়ে গেছে। এ ছাড়া রবিবার বিমানের রিয়াদ ও দাম্মাম ফ্লাইট সিডিঊল মতো ঢাকা ছেড়েছে। এদিকে দেশে চলমান বিধিনিষেধের মেয়াদ আরও সাত দিন বাড়ানো হতে পারে। সেই দিনগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করতে চায় বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে এ প্রস্তাব দেবে বেবিচক। ্এ ছাড়া প্রবাসী কর্মীদের জন্য রবিবার থেকে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশের বিশেষ ফ্লাইটের সংখ্যাও বাড়ানো হয়। এ তালিকায় রয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, সৌদি এয়ারলাইন্স, ইমিরেটস এয়ারলাইন্স, ইত্তিহাদ ও ফ্লাই দুবাইসহ একাধিক এয়ারলাইন্স। করোনা সংক্রমণের হার ও মৃত্যুর বেশি থাকায় করোনা নিয়ন্ত্রণে সরকার গঠিত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও টানা দুই সপ্তাহ বিধিনিষেধ দেয়ার সুপারিশ দিয়েছে। তাই ধারণা করা হচ্ছে বিধিনিষেধের মেয়াদ ২১ এপ্রিল থেকে বাড়ানো হতে পারে। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই সোমবার বৈঠকে বসবে আন্তঃমন্ত্রণালয়। বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী মোঃ মাহবুব আলী, বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিব, বেবিচক চেয়ারম্যান, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান বলেন, আমি এবং বেবিচক সবসময় চাই যেন ফ্লাইট চালু থাকে। আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে পাঁচ দেশের ফ্লাইট চালু হয়েছে। সোমবারের আন্তঃমন্ত্রণালয়ের বৈঠকে আমি স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব করব। কেননা ফ্লাইট বন্ধের কারণে এই খাত অনেক আক্রান্ত হচ্ছে। তাই অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক উভয় রুটেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইট চালুর প্রস্তাব করব আমরা। প্রয়োজনে যাত্রী ও এয়ারলাইন্স সংশ্লিষ্টদের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। তারপরও আমরা চাই ফ্লাইট চলুক। জানা গেছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও এয়ার এ্যারাবিয়ার বিশেষ ফ্লাইটযোগে রবিবার ৪৭৬ জন প্রবাসীকর্মী সৌদি আরব ও ওমান গেলেন। তাদের মধ্যে বিমানে ২৭১ জন ও এয়ার এ্যারাবিয়ায় ২০৫ জন। এদিকে রবিবার দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত আরও নয়টি ফ্লাইটে দেড় সহস্রাধিক যাত্রীর বিভিন্ন দেশে যাওয়ার সিডিউল রয়েছে। বিমানের মহাব্যবস্থাপক জানান, এখন থেকে আর কোন সঙ্কট নেই। সব ফ্লাইট ঢাকা থেকে যথারীতি পাঁচ দেশের গন্তব্যে যাবে। এদিকে আটকে পড়া যাত্রীরা নতুন আশায় হাজির হচ্ছেন সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের অফিসের সামনে। রবিবার রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইনসের অফিসের সামনে সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকেন প্রবাসীরা। সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শনিবার থেকেই টিকিট রি-ইস্যু করা হচ্ছে। ১৪ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত যাদের টিকেট ছিল, তাদের নতুন টিকেট দেয়া হচ্ছে। ২০ এপ্রিলের পরের টিকেটধারীদের বিষয়ে পরে জানানো হবে। টিকেট রি-ইস্যু করতে অতিরিক্ত টাকা নেয়া হচ্ছে না। তবে যাদের ১৪ থেকে ১৭ এপ্রিল পর্যন্ত যাদের টিকেট আছে, তারা সহজেই টিকেট পাচ্ছেন। জামিল হোসেনের ফ্লাইট ছিল ১৫ এপ্রিলের। তিনি পেয়েছেন ১৯ এপ্রিলের ফ্লাইটের টিকেট। জামিল হোসেন বলেন, ‘বেশ ভোগান্তি হয়েছে ফ্লাইট বন্ধ করায়। তারপরও টিকেট পেয়েছি, এখন কাজে ফিরতে পারব। দিনাজপুরের জহির বলেন, আমার ২১ এপ্রিল ফ্লাইট, এখন আমি যেতে না পারলে বিপদে পড়ব। কারণ আমার ভিসার মেয়াদ ২৫ এপ্রিল শেষ হবে। তাই ঢাকায় এসেছি, কিন্তু এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানতে পারিনি। গত ১৬ এপ্রিল রাতে মন্ত্রী পর্যায়ের অনলাইন বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, ১৭ এপ্রিল থেকে ২০ এপ্রিল পাঁচটি দেশে ফ্লাইট প্রবাসীদের কাজে ফেরাতে ফ্লাইট পরিচালনা করবে ১২টি এয়ারলাইন্স। এই পাঁচটি দেশ হচ্ছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, কাতার ও সিঙ্গাপুর। ১২টি এয়ারলাইন্স হচ্ছে- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স, সৌদি এ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স, ওমান এয়ার, সালাম এয়ার, কাতার এয়ারওয়েজ, এমিরেটস, ইতিহাদ, এয়ার এ্যারাবিয়া, এয়ার এ্যারাবিয়া আবুধাবি, ফ্লাইট দুবাই এবং সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স। তবে ২০ তারিখের পরে যাদের ফ্লাইট তারাও অনিশ্চয়তায় হাজির হচ্ছেন এয়ারলাইন্সের অফিসে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন বলেন, সোমবার কেবিনেট সচিব মহোদয়ের সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে এসব বিষয়ে আলোচনা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত হবে।
×