ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৭ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আদমদীঘিতে খালের কাদা কেটে টাকা লোপাট

প্রকাশিত: ১৬:১৪, ২ মার্চ ২০২১

আদমদীঘিতে খালের কাদা কেটে টাকা লোপাট

নিজস্ব সংবাদদাতা, সান্তাহার ॥ আদমদীঘিতে খাল খনন কাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ মিলেছে। মাটির বদলে কাদা কেটে বরাদ্দের অধিকাংশ টাকা লোপাট করার আয়োজন করা হয়েছে। জানা গেছে, এল.জি.ই.ডি এবং জাইকা’র যৌথ অর্থায়নে উপজেলার ছাতিয়ানগ্রাম ইউনিয়নে আমইল-ইন্দইল নামক ৬ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন প্রকল্পে ৫৫ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। কাজ শুরু হয়েছে ১৫ ফেব্রুয়ারি। ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি ও নির্দেশ অনুযায়ী এপ্রকল্পের কাজ করবেন পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির সভাপতি, সম্পাদক এবং একজন নারী সদস্যসহ ৫সদস্যের বাস্তবায়ন কমিটি। কিন্তু ডিসেম্বর/২০২০-এ পাবসস কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। আইন অনুয়ায়ী উপজেলা সমবায় অফিসারকে আহবায়ক করে ৩ সদস্যের পাবসস আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটির মেয়াদ আগামী ৮ এপ্রিল নির্বাচন না পর্যন্ত। আইন মোতাবেক পাবসসের আহবায়ক কমিটি একাজ করতে পারে না। কিন্তু কাজ চলছে। তবে আহবায়ক কমিটির প্রধান কিছুই জানে না। উপজেলা প্রকৌশলী কে বা কাকে দিয়ে কাজ করাচ্ছেন। খাল খননের প্রধানতম উদ্দেশ্য হল এলাকার দরীদ্র জনগোষ্টির আপদকালিন কর্মসংস্থান। অর্থাৎ শ্রমিক দিয়ে কোদালে কেটে কাজ করতে হবে। উপজেলা প্রকৌশলী নিজেদের করা চুক্তি ও নির্দেশ পদদলিত করে এস্কেভেটর মেশিন দিয়ে খনন কাজ করাচ্ছেন। অথচ, পারিশ্রমিক বিল লেন-দেন হচ্ছে ৩ শ’ শ্রমিকের নামে। এই শ্রমিকগুলো কারা সেটা একমাত্র উপজেলা প্রকৌশলী ছাড়া কেউ জানে না। পক্ষান্তরে কাগজে-কলমে ৩ শ’ শ্রমিকের ১২ দল গঠন এবং দলপতির নামে ব্যাংক হিসাব খোলা হয়েছে নিজ উপজেলা বাদ দিয়ে দুপচাঁচিয়ায় উপজেলায়। ইতিমধ্যে ১০ ভাগ হারে ৩ শ’ শ্রমিকের নামে পারিশ্রমিক বিল প্রদান করা হয়েছে। এই কাজে এলাকার দরীদ্র জনগোষ্টি বিশেষ করে ছিন্নমুল, বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, স্বামী পরিত্যক্তা ও দুস্থমহিলাগণ অগ্রাধিকার পান তা নিশ্চিত করতে হবে মর্মে চুক্তি ও নির্দেশ রয়েছে। কিন্তু এর কোন কিছুই মানা হচ্ছে না। শুরু থেকে মেশিন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে অবাধে। পানি ভর্তি খাল থেকে সেচ দিয়ে কাদা কেটে তোলা হচ্ছে। মেশিন দিয়ে কাটা কাদা গুলোর অধিকাংশ খালের গায়ে দেওয়া হচ্ছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির তোপে খুলে ফের খালে এসে পড়বে এবং দ্রুত ভরাট হয়ে যাবে, এমন আশংকা এলাকাবাসীর। এই খাল খননের আরো উদ্দেশ্য হচ্ছে শুস্ক মৌসুমে ৬০০ হেক্টর জমিতে সেচ দেওয়া। যার সাথে ৫টি গ্রামের অন্তত সাড়ে ৪শ’ অধিক উপকারভোগী খানা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। কিন্তু নালার মত খালের পানিতে ওই পরিমানের অর্ধেক জমিতেও সেচ দেওয়ার পানি মিলবে না, এমনটা দাবি করছেন অভিঙ্গজনরা। খাল কাটার নামে এমন অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছেন সাধারণ মানুষ। কিন্তু প্রকাশ্যে প্রতিবাদ করার সাহস পাচ্ছে না প্রভাবশালীদের হামলা-মামলার ভয়ে। এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী সাজেদুর রহমান, ৭০ভাগ কাজ মেশিনে করা যাবে বলে দাবি করেন। তাহলে ৩শ’ শ্রমিকের নামে বিল দেয়া-নেয়া হচ্ছে কেন এই প্রশ্নের সদুত্তোর দিতে পারেনি। পাবসস এর নির্বাচিত কমিটি না থাকা সত্বেও খনন কাজ চলা ব্যাপারে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বলেন, শুনেছি খাল খনন চলছে। তবে আমাকে কেউ কিছু জানায়নি। এলজিইডি কি ভাবে কাজ চালাচ্ছেন সেটা তারাই ভাল জানেন।
×