ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

আরও এক দফা শৈত্যপ্রবাহ আজ থেকেই

প্রকাশিত: ২২:৫০, ২২ জানুয়ারি ২০২১

আরও এক দফা শৈত্যপ্রবাহ আজ থেকেই

স্টাফ রিপোর্টার ॥ আরও এক দফায় আসছে শৈত্যপ্রবাহ। আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন, পশ্চিমা লঘুচাপ দুর্বল হয়ে পড়ায় আজ থেকে উত্তরের শীতল হাওয়া সক্রিয় হয়ে পড়বে। ফলে তাপমাত্রা কমে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তা কয়েকদিন মাত্র স্থায়ী হতে পারে। এরপরই আবারও পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে যাবে। ফলে মাঘের বাকি সময়টা শীত ওঠানামার মধ্যেই পার হবে। এরপরেই বাতাসে বসন্তের আবহ চলে আসতে পারে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বিভিন্ন স্থানে দুদিন হাল্কা ও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে ফের তাপমাত্রা কমতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর থেকেই শীত আমেজ ফিরতে শুরু করেছে। আজ শুক্রবার থেকে দেশের উত্তরাঞ্চলের ওপর দিয়ে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তাপমাত্রা নেমে আসবে ১০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের নিচে। সেই সঙ্গে সারাদেশে শীতের আমেজ বাড়বে। তবে আগামী সপ্তাহে আবারও তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ইতোমধ্যে শীত শুরু হওয়ার পর তিন দফায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রথম দফায় মাঝারি মাত্রায় রূপ নেয়। তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রীর নিচে নেমে যায়। কয়েকদিন স্থায়ী হওয়ার পর পশ্চিমা লঘুচাপের কারণে তা দুর্বল হয়ে যায়। দ্বিতীয় দফায়ও ডিসেম্বর শেষ থেকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তৃতীয় দফায় গত ১২ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়ে তা ১৮ জানুয়ারি পর্যস্ত স্থায়ী হয়। সারাদেশে ব্যাপক শীত অনুভূত হতে থাকে। কিন্তু হঠাৎই পশ্চিমা লঘুচাপ এবং পূবালী হাওয়ার সংমিশ্রণে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টির দেখা মেলে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দেশের আকাশ থেকে মেঘলাভাব কেটে গেছে। আজ থেকে আবহাওয়া পরিষ্কার হবে। রোদের দেখা মিললেও ঠাণ্ডার অনুভূতি বাড়বে। আজ শুরুবার থেকে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। তা দেশের অন্য এলাকায়ও বিস্তার ঘটবে। বৃহস্পতিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। যা আগের দিনের চেয়ে প্রায় এক ডিগ্রী কমেছে। অপরদিকে ঢাকায় তাপমাত্রা একদিনের ব্যবধানে বেড়েছে প্রায় ৩ ডিগ্রী। এদিন ঢাকায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৬ ডিগ্রী সেলসিয়াসে, যা আগের দিন ছিল ১৩ ডিগ্রী সেলসিয়াসের মধ্যে। আবহাওয়াবিদদের মতে, এই জানুয়ারিতে সর্বনিম্ন স্বাভাবিক তাপমাত্রা হলো ১২.২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে রাজধানীতে আগের দিন বুধবার সারাদিন মেঘে ঢাকা থাকলেও বৃহস্পতিবার আবহাওয়া অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। সকাল থেকেই রোদের দেখা মেলে। কুয়াশাও কেটে যায়। তবে এদিন দেশের অন্যান্য অঞ্চলে সকাল থেকে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। তবে আজ থেকে দেশের কোথাও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বলে তারা জানায়। তবে আজ থেকে চতুর্থ দফায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলেও তা কয়েকদিন স্থায়ী হতে পারে। এরপর থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। প্রকৃতিতে এখন চলছে মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহ। মাঘের পরেই আসবে বসন্তকাল। শুরু হবে দখিনা হাওয়া। কিন্তু বসন্ত আসার আগেই প্রকৃতিতে বসন্তের আবহ শুরু হয়। সেক্ষেত্রে মধ্য মাঘ পার হলে ফাল্গুনের টান শুরু হবে। আবহাওয়াবিদরা জানান, আজ থেকে তাপমাত্রা আরও কমে শীতের আমেজ ফিরলেও তা বেশি স্থায়ী হবে না। আগামী সপ্তাহে ফের তাপমাত্রা বাড়বে। তারা জানান, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ার জন্য বৃহস্পতিবার সকালের দিকে আকাশ কিছুটা মেঘলা ছিল। এই কারণে কুয়াশার দেখা মেলে। গত দুই দিনের পশ্চিমা লঘুচাপের সঙ্গে পূবালী হাওয়া বঙ্গোপসাগর থেকে বেশি পরিমাণে জলীয় বাষ্প টেনে এনেছে। দুদিন বৃষ্টির কারণে জলীয় বাষ্পের প্রভাব কমে উত্তুরে হাওয়া ফের সক্রিয় হতে শুরু করেছে। এর প্রভাব চলতি সপ্তাহ নাগাদ চলতে পারে। এই সময়ের মধ্যে শীতের আমেজ ফিরে আসবে। তবে দিন দুয়েকের মধ্যে আবারও পশ্চিমা লঘুচাপ সক্রিয় হবে। ফলে ফের উত্তরের হাওয়া দুর্বল হয়ে পড়বে। একই সঙ্গে আরও এক দফায় তাপমাত্রা বেড়ে শীত কমবে। মাঘের বাকি সময়টা শীতের ওঠা-নামার মধ্য দিয়ে পার হবে। তবে শৈত্যপ্রবাহের মধ্যে শীত কতটা জেঁকে বসবে তা নির্ভর করছে পরবর্তী পর্যবেক্ষণের ওপর। আবহাওয়াবিদ শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস কমতে পারে। আজ থেকে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের কিছু কিছু জায়গায় শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে। পরবর্তী সময়ে তা হয়ত দেশের অন্যান্য অংশে বিস্তার লাভ করার সম্ভাবনা আছে। এদিকে পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের দুয়েক জায়গায় হাল্কা বা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে। দেশের অন্যত্র আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। এ সময়ে সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা এক থেকে ২ ডিগ্রী সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়তে পারে। আবহাওয়া বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে নিকলি ও খেপুপাড়ায়, এই দুটি স্থানে ৪ মিলিমিটার করে বৃষ্টি হয়েছে। এ সময়ে ঢাকা, গোপালগঞ্জ, কুমিল্লা, সিলেট ও বরিশালে সামান্য বৃষ্টি হয়েছে।
×