ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়েছে ওরা

প্রকাশিত: ১৮:৫৯, ২১ জানুয়ারি ২০২১

চাকরির ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়েছে ওরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ নির্মাণ প্রকল্পে চাকরি দেয়ার নামে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে মূলহোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ-সিআইডি। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে, দর্পণ গ্রুপ অব কোম্পানির চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম সোহাগ (৫২), ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেনা জহির (৫০) ও মিল্টন রায় (২৮)। বৃহস্পতিবার দুপুরে সিআইডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ ওমর ফারুক। তিনি জানান, গত ১৯ জানুয়ারি ভুক্তভোগীদের অভিযোগ পেয়ে অভিযান চালিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সরকার মার্কেটের তৃতীয় তলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, এই চক্রটি দীর্ঘ দিন ধরে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টার্মিনাল-৩ এ চাকরি দেয়ার নামে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় অফিস খুলে লোকজনকে ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে ‘টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানান, তারা স্যামসাং গ্রুপের নামে একটি ভুয়া ওয়ার্ক অর্ডার তৈরি করে বিমানবন্দরে দক্ষ ও অদক্ষ লেবার এবং সুপারভাইজার নিয়োগ দেয়া হবে মর্মে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে রাখে। শর্ত থাকে লেবার প্রতি ৫০ হাজার এবং সুপারভাইজার প্রতি এক লাখ টাকা দিতে হবে। তাদের কথায় আশ্বস্ত হয়ে শ্রমিক ও সুপারভাইজার পদে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রায় দেড়শ লোক টাকা দিয়ে আবেদন করলে তাদেরকে চাকরিতে যোগদানের জন্য নিয়োগপত্র প্রদান করে। ভুক্তভোগীরা কাজে যোগদানের বিষয়ে আলাপ করলে তারা অপেক্ষা করতে বলে ঘুরাতে থাকে। পরবর্তীতে আসামিদের দেয়া নিয়োগপত্রের বিষয়ে ভুক্তভোগীরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারে যে, শাহজালাল আন্তজার্তিক বিমানবন্দর টার্মিনাল-৩ এ চাকরি দেয়ার জন্য দর্পণ গ্রুপ অব কোম্পানি অথবা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানকে স্যামসাং কোম্পানি কোনো ওয়ার্ক অর্ডার দেয়নি। এ ঘটনায় পরে ভুক্তোভোগীরা প্রতারণার অভিযোগ এনে ভাটারা থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযান চালিয়ে এই তিন প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়। এই চক্রের অন্য সদস্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তোভোগী চাঁদপুরের সুজন বলেন, যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে দিয়ে যাওয়ার পথে সরকার মার্কেটের তিন তলায় ডিজিটাল ব্যানার লাগানো দেখেন তিনি। এতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া ছিল। আগ্রহী হয়ে কথা বলতে যান তিনি। দর্পণ নামে ওই অফিস থেকে জানানো হয়, সুপারভাইজার পদে এক লাখ, অদক্ষ শ্রমিকের ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা দিলেই কেবল চাকরি হবে। আগ্রহ প্রকাশ করলে দুদিন পর ভাইভা নেয়, নবেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে তিনজনকে নিয়োগ দেয়ার কথা বলে হাতে নিয়োগপত্র ধরিয়ে দিয়ে নেয় আড়াই লাখ টাকা। এরপর ঘোরাতে থাকে। নবেম্বর মাস পেরিয়ে গেলেও চাকরি হয় না। প্রতারকরা করোনা টেস্টের কথা বলে আরও পাঁচ হাজার করে টাকা নেয়। আবারও জয়েন ডেট গিতে ঘোরাতে থাকে। তাদের সন্দেহ হলে সবাই বিমানবন্দরে যান। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এ ধরনের কোনও প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ক পারমিট পায়নি। পুরোটাই প্রতারণা।
×