ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৫ মে ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার চারপাশে চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল করা হবে

প্রকাশিত: ২২:৪১, ২৪ ডিসেম্বর ২০২০

ঢাকার চারপাশে চার আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর ভেতরে আন্তঃজেলা থেকে আসা বাস প্রবেশ বন্ধের মাধ্যমে রাজধানীর গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে ঢাকার চারপাশে চারটি আন্তঃজেলা টার্মিনাল করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস। তবে বর্তমানে থাকা মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদকে সিটি টার্মিনাল হিসেবে রাখা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে শহরের বাস শহরেই থাকবে ও বাইরের বাস শহরে ঢুকতে না দিতেই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মোঃ আতিকুল ইসলাম। বুধবার গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরানো এবং যানজট নিরসনে গঠিত বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির কার্যক্রম বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সাভারের ভাটুলিয়া ও বিরুলিয়া এলাকা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র। মেয়র তাপস বলেন, ঢাকার পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থাকে একটা শৃঙ্খলার মধ্যে আনতে চাই। সে লক্ষ্যে কাজ আরম্ভ করেছি। আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য কমিটির গত সভায় দশটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে থেকে আমরা চারটি জায়গা পরিদর্শন করেছি। সেখান থেকে তালিকা কমিয়ে এনেছি। আমরা মনে করেছি চারটি গ্রহণযোগ্য হতে পারে। সেই প্রেক্ষিতে আমরা সরেজমিন পরিদর্শনে এসেছি। হেমায়েতপুর ও বিরুলিয়ায় পরিপূর্ণভাবে টার্মিনাল বাস্তবায়ন হবে। এগুলোর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের ভিত্তিতে আমরা কাজ শুরু করব। আগামীবছর থেকে যদি আমরা বাস্তবায়নে যেতে পারি তাহলে অচিরেই এটার সুফল পাবে ঢাকাবাসী। গণপরিবহন ব্যবস্থা একটি শৃঙ্খলায় আসবে। শেখ তাপস বলেন, প্রথমে ভাটুলিয়া-বিরুলিয়া এলাকা পরিদর্শন করেছি। সরেজমিনে দেখতে চাই এটা কতটা কার্যকর হবে। এরপর হেমায়েতপুরে আরেকটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানে যাব। কাঁচপুর এবং কেরানীগঞ্জে দুটি জায়গা নির্ধারণ করা হয়েছে। এগুলো দেখে আগামী জানুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।মন্ত্রণালয়ে পাঠাব। আমাদের লক্ষ্য হল ঢাকা শহরের ভেতর থেকে চাপটা কমিয়ে আনা। ডিএসসিসি মেয়র বলেন, সিটি বাস টার্মিনাল আমাদের কার্যকর নেই। তার মানে যত্রতত্রভাবে সিটি বাসগুলো রাস্তার ওপরে থেকে যানজট, বিশৃঙ্খল পরিবেশের সৃষ্টি করে। সবকিছু মিলিয়ে সামগ্রিকভাবে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য আমাদের এই কার্যক্রম। আগামী বছর সুনির্দিষ্ট রূপরেখা একটা আসতে পারে এবং কাজগুলো আরম্ভ করতে পারি। ফজলে নূর তাপস বলেন, আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বিশেষজ্ঞরা প্রাথমিকভাবে দশটি জায়গা নির্ধারণ করেছেন। আমরা সেখান থেকে কমিয়ে চারটি ঠিক করেছি। বাকি জায়গাগুলো অনেক দূরে হয়ে যায়। বাস্তবিকভাবে প্রয়োগযোগ্য হবে না। এজন্য আমরা সেটিকে সংক্ষিপ্ত করে চারটি নির্ধারণ করেছি। এই চারটি জায়গা যদি সকলের মতামতের ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট করতে পারি তাহলে আগামী বছর থেকে টার্মিনাল নির্মাণের কাজ আরম্ভ করব। যারা আন্তঃজেলা বাস ব্যবহার করবে তারা চাইলে মেট্রোরেল ব্যবহার করবে, না হয় অন্য পরিবহন ব্যবহার করবে। গাবতলী, মহাখালী এবং সায়েদাবাদ সিটি টার্মিনাল হিসেবে পরিচালিত হবে। এখন দেখা যাচ্ছে সিটি বাসগুলো সেই জায়গাটাকে টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করতে পারছে না। আন্তঃজেলা বাসগুলো সেগুলোকে টার্মিনাল হিসেবে ব্যবহার করছে। এই অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ সময় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ঘাটারচর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত রুটে আগে ১৬০টি বাস ২৯টি বেশি কোম্পানির মাধ্যমে পরিচালিত হতো। তারা প্রতিযোগিতা করে সড়কে চলত। সেটিকে আমরা একটি কোম্পানির মাধ্যমে নিয়ে আসার উদ্যোগ নিয়েছি। আমাদের সঙ্গে বাস মালিক-শ্রমিকদের কথা হয়েছে। আমরা সবাই চাই শৃঙ্খলা আনতে। মেয়র আতিক বলেন, শহরের বাস শহরের মধ্যে চলবে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আগামী পহেলা এপ্রিল ঘাটারচর থেকে মতিঝিলে বাস চালু করছি। আর বিভিন্ন জেলার বাস ঢাকার আশপাশে একটি জায়গায় এসে থেমে যাবে। তারা শহরের ভেতরে ঢুকতে পারবে না। শহরের বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা, আন্তঃজেলা বাসের মধ্যে প্রতিযোগিতা হচ্ছে। এতে আমাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে, ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে।
×