ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

উত্তরে বেড়েছে শীতের দাপট, জনজীবন বিপর্যস্ত

প্রকাশিত: ২২:১১, ২১ ডিসেম্বর ২০২০

উত্তরে বেড়েছে শীতের দাপট, জনজীবন বিপর্যস্ত

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ কনকনে ঠান্ডায় কুড়িগ্রামে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে বাজার ও রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। রবিবার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এদিকে লালমনিরহাটে কুয়াশা ও শীতের দাপট বেড়েছে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকায় সারাদিন সূর্যের দেখা মেলে না। খড়কুটো জ্বালিয়ে স্বল্প আয়ের লোকজন শীত নিবারণের চেষ্টা করে। ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা আরও শোচনীয়। আর রাজশাহীতে তাপমাত্রা বাড়লেও কমেনি শীতের দাপট। রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার মধ্যে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। এছাড়া ঠান্ডাজনিত রোগবালাই বাড়ছে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। খবর স্টাফ রিপোর্টার ও নিজস্ব সংবাদদাতাদের। আবহাওয়া অফিস জানায়, কুড়িগ্রামে গত কয়েকদিন ধরে তাপমাত্রা ১০-১২ ডিগ্রী সেলসিয়াসে ওঠানামা করলেও রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস। মাঝারি শৈত্যপ্রবাহের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আরও কয়েকদিন এ অবস্থা চলতে পারে। এদিকে গরম কাপড়ের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্ন-আয়ের মানুষজন। তীব্র শীতে কষ্টে পড়েছে হতদরিদ্র পরিবারের শিশু-বৃদ্ধরা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন অনেকেই। এই সুযোগে বাজারে শীত বস্ত্রের দাম বেড়ে গেছে। দিনের বেলায় তাপমাত্রা সামান্য বাড়লেও সন্ধ্যার পর থেকে তাপমাত্রা কমতে থাকে। লালমনিরহাটে ছিন্নমূল মানুষ কাহিল ॥ কনকনে ঠান্ডাও মাঝারি শৈত্যপ্রবাহে লালমনিরহাটের ছিন্নমূল মানুষ ও স্বল্প-আয়ের মানুষ কাহিল হয়ে পড়েছে। তারা ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে খড়কুটো দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে শরীরে উষ্ণতা নিচ্ছে। ঠান্ডায় দিনমজুর, কৃষি শ্রমিক ও শ্রমজীবী মানুষ মাঠে কাজে যেতে না পেরে আরও বেকায়দায় পড়েছে। সারাদিন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে আকাশ। সূর্যের দেখা নেই। হিমালয়ের পাদদেশে হওয়ায় লালমনিরহাটে শীতের সময় ঠান্ডা একটু বেশিই। কুয়াশাও একটু বেশি পড়েছে। শীতের কারণে ঠা-াজনিত রোগবালাই দেখা দিয়েছে। শিশুরা একটুতেই ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এদিকে ঠান্ডায় সবচেয়ে বিপাকে পড়েছে স্বল্প-আয়ের মানুষ। ছিন্নমূল মানুষ রাতে শহরের মার্কেট বা দোকানঘরের বারান্দায় রাত কাটাচ্ছে। কুড়ানো কাগজে আগুন জ্বালিয়ে ঠান্ডা নিবারণ করছে তারা। শীত বাড়ায় এবার পুরান শীতবস্ত্রের দামও আগের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। রাজশাহীতে তাপমাত্রা বাড়লেও, কমেনি শীতের দাপট ॥ রাজশাহীতে তাপমাত্রা বাড়লেও শীতের দাপট কমেনি। রবিবার সকাল থেকে উত্তুরে ঠান্ডা বাতাস শীতের অনুভূতি দ্বিগুণ বাড়িয়েছে। ভোরে হালকা কুয়াশার চাদর ভেদ করে উঁকি দেয় সূর্য। তবে হিমেল হাওয়ার কারণে সূর্যের উত্তাপ শরীর উষ্ণ করতে পারছে না। ফলে রৌদ্রোজ্জ্বল আবহাওয়ার মধ্যেও কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। শনিবার থেকেই রাজশাহী ও আশপাশের অঞ্চলে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রবিবারও তা অব্যাহত রয়েছে। তবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা কিছুটা বেড়েছে। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, রাজশাহীতে রবিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর আগে শনিবার ছিল ৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস। আরও এক-দুদিন এ শৈত্যপ্রবাহ অব্যাহত থাকতে পারে। এদিকে হিমেল হাওয়ার কারণে রবিবার সকাল থেকে কর্মজীবী মানুষদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। শীতবস্ত্রের অভাবে অনেকেই ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শিশু ও বৃদ্ধরা বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভিড় করছে। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডাঃ সাইফুল ইসলাম ফেরদৌস বলেন, ‘নবজাতকরা নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ ও কোল্ড ডায়রিয়াসহ ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে রোগীরা চিকিৎসা নিতে আসছেন।’
×