ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১

ফের বেড়েছে চালের দাম

প্রকাশিত: ২৩:০০, ১৫ ডিসেম্বর ২০২০

ফের বেড়েছে চালের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ নিত্যপণ্যের বাজারে আবারও বেড়েছে চালের দাম। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে দাম বেড়েছে ৩-৪ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে সরু চাল খ্যাত মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের দাম। জাত ও মান ভেদে প্রতিকেজি নাজিরশাইল ও মিনিকেট চাল ৪ টাকা বেড়ে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬৫ টাকায়। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা চাল ৫০-৫৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে খুচরা বাজারে। এছাড়া মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরিখ্যাত চাল ৪৫-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে চালকল মালিক ও পাইকারি ব্যবসায়ীরা ভিন্ন ভিন্ন কথা বলছেন। পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা অতিরিক্ত লাভের আশায় চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। মিল মালিকরা বলছেন, বাজারে পুরনো ধানের দাম বেড়েছে। বাধ্য হয়েই তাদের এইসব চালের দাম বাড়াতে হয়েছে। তবে নতুন উঠা আমনের দাম বাড়েনি বলেও তারা দাবি করছেন। খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করতে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি গত ১৫ দিনে ১ লাখ টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত থেকে এই চাল আমদানি করবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। এছাড়া সামনে আরও চাল আমদানির অনুমোদন দেয়া হবে বলে জানিয়েছে সরকারী ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। গত এক সপ্তাহ ধরে চাল বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। এর আগে গত নবেম্বর মাসের শুরুতে চালের দাম বেড়ে গেলে ওই সময় মিল মালিকদের কারসাজির প্রমাণ পায় সরকার। দেশের বিভিন্ন স্থানে চালকল মালিকদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হলে কমে আসে দাম। একমাস যেতে না যেতেই ফের আবার উর্ধমুখী চালের বাজার। চালের দাম বাড়ায় দেশের সাধারণ মানুষের কষ্ট সবচেয়ে বেশি বাড়ে। এর প্রভাব পড়ে স্বল্প আয়ের মানুষের দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের ওপর। অন্যদিকে আমনের বাম্পার ফলনে দেশে পর্যাপ্ত পরিমাণ ধানের মজুদ রয়েছে। এর পাশাপাশি আপদকালীন সঙ্কট মেটাতে চাল আমদানি করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় চালের দাম বাড়ার কোন যৌক্তিক কারণ নেই বলে মনে করেন বাজার বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, চালের দাম বাড়ার পেছনে অসাধু চালকল মালিক, পাইকারি ব্যবসায়ী ও সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের কারসাজি থাকতে পারে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, দাম বাড়ার পেছনে তাদের কোন হাত নেই। পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনার পর সামান্য মুনাফায় খুচরা বাজারে বিক্রি করা হয়। কারসাজি যা হয় তা মোকাম ও মিলগুলোতে। এ প্রসঙ্গে পুরান ঢাকার কাপ্তানবাজরের নুরু এজেন্সির স্বত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, পাইকারি বাজারে চালের দাম বেড়ে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরায়। তবে ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় শীঘ্রই দাম কমে আসবে। তিনি বলেন, শুনেছি, ভারত থেকে ১ লাখ টন চাল আমদানি করা হচ্ছে। ওই চাল দেশে আসলে চালের দাম কমবে। পাইকারি ব্যবসায়ী বলছেন, অনেক মিল বন্ধ হয়ে গেছে। এ কারণে বাজারে চালের সরবরাহ কম। পাশাপাশি, ধানের দাম বেশি। সব কিছু মিলে চালের দাম বেড়ে গেছে। চালের এই দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের উচিত শীঘ্রই মিল মালিকদের সঙ্গে বসে একটা দাম নির্ধারণ করে দেয়া। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা। দ্রুত এসব পদক্ষেপ না নিলে চালের দাম আরও বেড়ে যেতে পারে। এ প্রসঙ্গে বাবুবাজারের পাইকারি চাল ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন জনকণ্ঠকে বলেন, চালের দাম আমরা বাড়াই না। মিল মালিকরা চালের দাম বাড়ালে আমরা দাম বাড়াতে বাধ্য হই। মিলে চালের দাম অনেক বেড়েছে, এ কারণে বাজারেও চালের দাম বাড়তি।
×