ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

গোল্ডেন মনিরের দুই শ’ প্লট-তদন্তে প্রমাণ পেলে বাতিল করা হবে

প্রকাশিত: ২১:৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২০

গোল্ডেন মনিরের দুই শ’ প্লট-তদন্তে প্রমাণ পেলে বাতিল করা হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ অনিয়ম করে মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনির ২০০ প্লটের মালিক তদন্ত প্রমাণিত হলে অবশ্যই তা বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যান মোঃ সাঈদ নূর আলম। একইসঙ্গে রাজউকে নতুন করে আরও শুদ্ধি অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। রবিবার সচিবালয়ে ডিটেইলস এরিয়া প্ল্যান (ড্যাপ) নিয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে অস্ত্র, মাদক ও বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালঙ্কারসহ গ্রেফতার মোঃ মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের অনিয়মের মাধ্যমে ২০০ প্লটের মালিক হওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন। প্লটগুলো বাতিল করবেন কি না- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই প্রক্রিয়ায় যদি কোনপ্রকার অনিয়ম থাকে তাহলে আমরা অবশ্যই বাতিল করব। গোল্ডেন মনিরের বাসা থেকে ২০০ প্লটের নথি জব্দ এবং বাড্ডার বাসা থেকে কর্মচারীদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে রাজউক চেয়ারম্যান বলেন, এগুলো আমরা তদন্ত করব। তদন্তে যারা শনাক্ত হবে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং আদালতে যে মামলা আছে তা চলবে। ২০০ প্লটের মালিক হওয়ার পেছনে রাজউকের কারও সহযোগিতা বা ইন্ধন ছিল কি না- জবাবে তিনি বলেন, আমার ধারণা, এটা একদিনের প্রক্রিয়া নয়, এটা দীর্ঘদিনের প্রক্রিয়া। আমরা এতদিনে উদ্ঘাটন করতে সক্ষম হয়েছি। গত বছর প্রথম উদ্ঘাটন করা হয় এবং তখন থেকে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। এ ব্যবস্থা চলমান এবং যতক্ষণ না সর্বশেষ বিষয়টি উদ্ঘাটিত হচ্ছে। রাজউক ভবনে তার একটি অফিসে অনেক কাগজপত্র পাওয়া গেছে, এর সঙ্গে রাজউকের অনেকেই জড়িত-এ নিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, গত বছর রাজউকের চেয়ারম্যান ছিলেন সুলতান আহমেদ। সে সময় আমি সদস্য (প্রশাসন) ছিলাম। আমাদের সবার অংশগ্রহণে একটি অভিযান পরিচালিত হয়েছিল রাজউকেরই একটি কক্ষে। এই কক্ষটি বাইরে ভাড়া দেয়া ছিল। এই কক্ষ থেকে আমরা ৭২টি নথি উদ্ধার করেছি। সেই নথি উদ্ধারের প্রেক্ষিতে মতিঝিল থানায় মামলা করেছি। সেই সময়ই একজন কর্মচারী আটক হন, তাকে আমরা থানায় সোপর্দ করি। তিনি আসামি। বিষয়টি এখনও বিচারাধীন। সেই কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করেছি এবং মামলা চলমান। তদন্তও চলছে। এর সঙ্গে আর যারা জড়িত, পুলিশ চার্জশীট দিলে এবং শনাক্ত হলে আমরা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা গ্রহণ করব। গোল্ডেন মনিরকে রাজউকের পক্ষ থেকে ভিআইপি প্রটোকল দেয়া প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান বলেন, ‘সরকারীভাবে যেভাবে নথি স্বাক্ষর হয় আমি সেই নিয়ম অনুসরণ করি। এখানে কাউকে কোনপ্রকার ভিআইপি প্রটোকল দেয়া হয়নি বা এ ধরনের প্রটোকল দেয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এখানে নিয়ম ভঙ্গের কোন ঘটনা ঘটেনি। রাজউকের সদস্য এবং চেয়ারম্যান হিসেবে আপনাদের দায় আছে কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে সাঈদ নূর আলম বলেন, ‘আমরা তার অনিয়মগুলো উদ্ঘাটন শুরু করেছি। উদ্ঘাটন করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে যেগুলো উদ্ঘাটন করা হবে সেগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করব। আদালতে বিচার ও বিভাগীয় ব্যবস্থা চলছে। আগে কেন ব্যবস্থা নেননি- জবাবে তিনি বলেন, গত বছরের অভিযান রাজউকের নিজস্ব ছিল। আমরা আমাদের নিয়ম অনুযায়ী চলব। একজন ২০০ প্লটের মালিক, এটা কি অনিয়ম নয়- জবাবে রাজউক প্রধান বলেন, এগুলো যাচাই-বাছাইয়ের প্রয়োজন আছে। যাচাই-বাছাইয়ের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত হবে। ভবিষ্যতে কোনপ্রকার অনিয়ম থাকবে না। শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে কি না- তিনি বলেন, শুদ্ধি অভিযান চালানো হবে। নতুন করে আরও শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করব। সেই পরিকল্পনা আমাদের আছে।
×