ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশসহ ৩৪ দেশে ফ্লাইট চালু করবে কুয়েত এয়ার

প্রকাশিত: ২২:১৯, ২৭ অক্টোবর ২০২০

বাংলাদেশসহ ৩৪ দেশে ফ্লাইট চালু করবে কুয়েত এয়ার

স্টাফ রিপোর্টার ॥ খুব শীঘ্রই বাংলাদেশসহ নিষিদ্ধ ৩৪ দেশের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছে কুয়েত। তালিকাভুক্ত দেশকে করোনা পরিস্থিতি বিবেচনা করে উচ্চ ঝুঁকির দেশ ও স্বল্প ঝুঁকির দেশ দুই ভাগে ভাগ করা হবে। কুয়েতের মিসিলায় বাংলাদেশ দূতাবাসে মীরসরাই সমিতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত ও মতবিনিময়কালে নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান এসব কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশের নাগরিকদের তিনবার করোনা পরীক্ষা করতে হবে। প্রথমে নিজ দেশ থেকে আসার সময় পিসিআর সনদ নিয়ে আসতে হবে। দ্বিতীয়বার কুয়েত এয়ারপোর্টে পৌঁছানোর পর এবং তৃতীয়বার সাতদিন বাসায় অথবা প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকার পর করোনা টেস্ট করাতে হবে। একই শর্ত প্রযোজ্য হবে স্বল্প ঝুঁকির দেশগুলোর ক্ষেত্রেও। এদিকে ঢাকায় কুয়েত এয়ার সূত্র জানিয়েছে, একযোগে এসব দেশে ফ্লাইট চালু করা হলেও কিছু শর্তের মুখে পড়তে পারে। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশে করোনার প্রভাব অন্যান্য দেশের তুলনায় কিছুটা দুর্বল থাকায় কুয়েত এয়ারের যাত্রীরা কিছু বাড়তি সুবিধা পেতে পারেন। করোনার হটস্পটে থাকা ভারতের যাত্রীদের বেলায় ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাংলাদেশীদের ক্ষেত্রে তা শিথিল করা হতে পারে। এ ছাড়া ফ্লাইটের স্বাস্থ্যবিধি সবার জন্য বাধ্যতামূলক থাকবে। বেবিচক জানিয়েছে, বর্তমানে প্রচ- গরম থাকায় করোনার তা-ব কিছুটা দুর্বল মনে হলেও শীতে তা কতটা ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। কুয়েতে কতসংখ্যক বাংলাদেশী এই মুহূর্তে অবস্থান করছেন এবং দেশে কতজন ফেরার অপেক্ষায় রয়েছেন সেটার ওপর নির্ভর করছে বিমানসহ কুয়েত এয়ারের বাণিজ্যিক সফলতা। উল্লেখ্য, দুনিয়াব্যাপী করোনা মহামারীর কারণে বন্ধ রয়েছে কুয়েতের সঙ্গে বাংলাদেশের ফ্লাইট যোগাযোগ। সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের বাণিজ্যিক ফ্লাইট বন্ধ করেছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কুয়েত। এ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় বাংলাদেশ ছাড়াও রয়েছে ভারত, পাকিস্তান, মিসর, ফিলিপিন্স, লেবানন, শ্রীলঙ্কাসহ ৩১টি দেশ। তারপর চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতকালে শ্রমবাজার নিয়ে কথা বলেন। ড. মোমেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে দু’দিনের ওই সফরে অতি শীঘ্রই প্রবাসী বাংলাদেশীদের জন্য কুয়েতের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট আবার চালুর বিষয়ে অনুরোধ জানান। তাতে সহযোগিতার আশ্বাস দেন কুয়েতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আহমাদ নাসের আল-মোহাম্মেদ আল-আহমেদ আল-জাবের আল-সাবাহ। এদিকে করোনার দাপট কমে আসলেও আগের মতো কুয়েত ফ্লাইট বাণিজ্যিক সফলতা পাবে কিনা সেটা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ আশীষ রায় চৌধুরী দৈনিক জনকণ্ঠকে বলেন, কুয়েত সরকার তার দেশ থেকে অভিবাসীদের সংখ্যা কমিয়ে আনতে একটি প্রবাসী কোটা বিল প্রণয়ন করেছে। ওই খসড়া আইনে বাংলাদেশী অভিবাসী শ্রমিকদের জন্য মাত্র ৩ শতাংশ কোটা প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে দেশটিতে অবস্থানরত আড়াই লাখের বেশি অভিবাসীকে ফেরত আসতে হতে পারে বলে আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের। কারণ সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী কুয়েতে মোট জনসংখ্যা ৪৩ লাখ, এর মধ্যে ৩০ লাখ অভিবাসী। শতাংশের হিসাবে যা প্রায় ৭০ শতাংশ। কুয়েতের মোট জনসংখ্যার ৭০ শতাংশ অভিবাসী হওয়ায় দেশটির সরকার সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে অভিবাসীর সংখ্যা পর্যায়ক্রমে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনতে। যেন জনতাত্ত্বিক ভারসাম্য রক্ষা করা যায়। এই লক্ষ্যে সেদেশের পার্লামেন্টের একটি কমিটি সম্প্রতি এ সংক্রান্ত খসড়া কোটা বিল অনুমোদন করে। এতে আড়াই লাখেরও বেশি বাংলাদেশীকে ফেরত পাঠানোর আশঙ্কা দেখা গেছে। এ অবস্থায় কুয়েত এয়ারসহ বিমানের ফ্লাইট চালু করা হলে সেটা আগের মতো বাণিজ্যিক সফলতা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
×