ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো একদিনে রেকর্ড করোনা রোগী

প্রকাশিত: ২২:০১, ৫ অক্টোবর ২০২০

ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো একদিনে রেকর্ড করোনা রোগী

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ ব্রিটেনে প্রথমবারের মতো একদিনে রেকর্ড করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন। আর ইয়েমেনে করোনায় ৬৩ চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে করোনার কারণে ইরান ফের কঠোর বিধিনিষেধের দিকে ধাবিত হচ্ছে। এছাড়া ভারতে করোনা রোগীর সংখ্যা ৬৫ লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এদিকে সারাবিশ্বে রবিবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন তিন কোটি ৫২ লাখ ৫১ হাজার ৬৪৩ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন দুই কোটি ৬২ লাখ ২৮ হাজার ৫০৯ জন। মারা গেছেন ১০ লাখ ৩৯ হাজার ৫৮৪ জন। এখনও চিকিৎসাধীন আছেন ৭৯ লাখ ৭৫ হাজার ৪১৬ জন। যাদের মধ্যে ৬৬ হাজার ২৮৯ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। গত ২৪ ঘণ্টায় দুই লাখ ৯৫ হাজার ২৪৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। একদিনে মারা গেছেন চার হাজার ৭৯৫ জন। খবর বিবিসি, সিএনএন, আলজাজিরা, এএফপি, রয়টার্স ও ওয়ার্ল্ডোমিটার। ব্যাপকভিত্তিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার পর থেকে প্রথমবারের মতো ব্রিটেনে একদিনে ১০ হাজারেরও বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে। রেকর্ড ১২ হাজার ৮৭২ জনের করোনা পজিটিভ হয়েছেন। তবে হঠাৎ রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে দেশটির সরকার প্রতিবেদন দিতে দেরি করাকে দায় দিয়েছে, আসছে দিনগুলোর সংখ্যার সঙ্গেও অতিরিক্ত রোগী যুক্ত হতে পারে বলে জানিয়েছে তারা। সরকারী ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে কারিগরি সমস্যার কারণে নতুন কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা প্রকাশে দেরি হয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে আসছে দিনগুলোতে মোট সংখ্যার সঙ্গে ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় কিছু অতিরিক্ত ঘটনা যুক্ত হবে, এতে ঘোষিত রোগীর সংখ্যা বাড়বে। ঘোষিত দৈনিক সংক্রমণ ১২ হাজার ৮৭২, আগেরদিন ৬ হাজার ৯৬৮ জনের প্রায় দ্বিগুণ। এর আগে একদিনে সর্বোচ্চ রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত মঙ্গলবার ৭ হাজার ১৪৩ জন। দুই লাখ ৬৪ হাজার ৯৭৯ জনের করোনা পরীক্ষা করা হয়। ২৪ ঘণ্টা সময় বিবেচনায় এটি ব্রিটেনে তৃতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক পরীক্ষা। এ কারণেও শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। এখন প্রতিদিন ২ লাখেরও বেশি লোকের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হচ্ছে। মহামারী শুরু হওয়ার পর সেখানে প্রতিদিন এক লাখেরও কম লোকের পরীক্ষা করা হয়েছে। বর্তমানে মোট শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪ লাখ ৮০ হাজার ১৭ জনে। একদিনে মারা গেছে ৪৯ জন। যা আগেরদিনের ৬৬ জনের চেয়ে এই সংখ্যা অনেকটা কম। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে করোনা মহামারীতে এ পর্যন্ত ৪২ হাজার ৪০৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ইয়েমেনে ৬৩ চিকিৎসকের মৃত্যু ॥ যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইয়েমেনে নতুন করে আতঙ্ক হিসেবে ধরা দিয়েছে করোনাভাইরাস। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ইতোমধ্যেই বিশ্বের কয়েক লাখ মানুষের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এই ভাইরাসের সংক্রমণে প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে। একদিকে যুদ্ধ-সংঘাত অন্যদিকে করোনার হানায় ইয়েমেনে ভয়াবহ বিপর্যয় নেমে এসেছে। সংঘাতের কারণে দেশটির চিকিৎসাসেবা আগে থেকেই নড়বড়ে হয়ে গেছে। তারমধ্যে করোনা আতঙ্কে চিকিৎসা ব্যবস্থা যেন ভেঙ্গে পড়ছে। মিডলইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইয়েমেনে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে ৬৩ জন চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। নতুন করে দেশটিতে আরও একজন চিকিৎসক মারা গেছেন। মিসরীয় বংশোদ্ভূত ওই চিকিৎসকের নাম ডাঃ আলি আবু জালাত। তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাধরামাউতে মৃত্যুবরণ করেছেন। এক বিবৃতিতে ওই চিকিৎসকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। বিধিনিষেধ ফিরছে ইরানে ॥ করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ইরানের রাজধানী তেহরানসহ এর আশপাশের এলাকাগুলোতে আবারও কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। কেউ অসুস্থতার তথ্য গোপন করলে বা সরকারী কর্মকর্তারা মাস্ক না পরলে বড় অঙ্কের জরিমানা ও সাজার বিধানও জারি করতে যাচ্ছে ইরান। টেলিভিশনে করোনা টাস্কফোর্সের সাপ্তাহিক আয়োজনে হাসান রুহানি বলেন, প্রথম বিষয় হচ্ছে- কেউ অসুস্থতা অনুভব করলে বা বুঝতে পারলে অবশ্যই তা গোপন করা যাবে না। যদি কেউ করে তাহলে সে আইনভঙ্গ করছে। এরজন্য গুরুতর জরিমানা হতে পারে। নতুন আইন কার্যকর হলে যেসব সরকারী সংস্থা ও বেসরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জনগণের সেবা দিচ্ছে তাদের কর্মীদের মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক হবে। অন্যথায় কঠিন জরিমানার মুখে পড়তে হবে। যদি কোন সরকারী কর্মকর্তা স্বাস্থ্যবিধি না মানেন তাকে সর্বোচ্চ এক বছর পর্যন্ত বহিষ্কার করা হতে পারে। বেসরকারী প্রতিষ্ঠান নিয়মভঙ্গ করলে একমাস পর্যন্ত সেটি বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। তিনি বৃহত্তর তেহরানের সব বাসিন্দাকে সতর্ক করে বলেন, বাইরে সবসময় মাস্ক পরে থাকতে হবে। নাহলে এরজন্য পরিণতি ভোগ করতে হবে। করোনা মহামারীর প্রথম ঢেউয়ে বিশ্বের অন্যতম ভুক্তভোগী দেশ ইরান। ভারতে আরও ৯৪০ মৃত্যু ॥ গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৭৫ হাজার ৮২৯ জন। এ নিয়ে দেশটিতে কোভিড রোগীর সংখ্যা ৬৫ লাখ ৫৩ হাজার ২৭ জন। এই সময় মারা গেছেন ৯৪০ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক লাখ এক হাজার ৮১২ জন এবং মোট সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৫৫ লাখ ৯ হাজার ৯৬৬ জন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করোনা পরিস্থিতির এই সর্বশেষ তথ্য জানিয়েছে।
×