যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পরাজিত হলে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর নাও করতে পারেন। বুধবার হোয়াইট হাউসে সংবাদ সম্মেলনে এ সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প নিজেই এই ইঙ্গিত করেন। তিনি বলেন, কী ঘটে তা আমাদের দেখতে হবে। খবর এপি, আলজাজিরা ও সিএনএন অনলাইনের।
আগামী ৩ নবেম্বর হতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এই নির্বাচনে ট্রাম্পের প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। ট্রাম্পের বক্তব্যে তার ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠল। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি ভোট ডাকযোগে দেয়া হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, আপনারা জানেন আমি শক্তভাবেই ডাকযোগেই ভোট নিয়ে অভিযোগ করেছি। এই প্রক্রিয়া দুর্যোগপূর্ণ। তার ভাষ্য, মহামারীর সময় ডাকযোগে বর্ধিত ভোট না হলে তিনি বিশ্বাস করেন, ক্ষমতা হস্তান্তরের কোন দরকার হতো না। ডাকযোগের ব্যালট না থাকলে সবই শান্তিপূর্ণ হতে পারে। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রয়োজন হবে না। এদিকে একই দিন মার্কিন মুসলিম কংগ্রেস সদস্য ইলহান ওমর প্রশ্ন রেখে বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার সমর্থকরা আমাকে নিয়ে এতে পীড়িত কেন? এটা আমার দেশ এবং আমি প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য, যেখানে ট্রাম্পকে অভিসংশন করা হয়েছে।
নির্বাচনী প্রচারে ট্রাম্পের বিষোদগারের জবাবে টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, গৃহযুদ্ধ কবলিত একটি দেশ থেকে মাত্র আট বছর বয়সে আমি পালিয়ে এসেছি। এতটুকু বয়সের একটি শিশু একটি দেশ চালাতে পারে না, যদিও আপনি সেভাবেই সবকিছু করে যাচ্ছেন। বুধবার তিনি বলেন, মানুষের আতঙ্ক পুঁজি করে ট্রাম্প নিজের স্বার্থ হাসিল করতে চাচ্ছেন। তিনি যেখানেই যান, ঘৃণার রোগ ছড়িয়ে দেন। ‘দেশজুড়ে তার সভা-সমাবেশগুলোতে আতঙ্ক ইন্ধন যোগাচ্ছে। মিনেসোটায় বিজয়ের ব্যাপারে তার মধ্যে মারাত্মক আতঙ্ক কাজ করছে, যে কারণে তিনি ঘৃণার আশ্রয় নিচ্ছেন। নির্বাচনী প্রচারে ইলহান ওমরের বিরুদ্ধে নিয়মিত বিষোদগার করে যাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার পেনসিলভানিয়ায় দেয়া এক ভাষণে ফের ইলহানের বিরুদ্ধে নিজের বিদ্বেষ প্রচার করেন তিনি। বললেন, সোমালিয়ায় বংশোদ্ভূত একজন মার্কিন আইনপ্রণেতা আমেরিকানদের বলছে, কীভাবে আমাদের দেশ চালাতে হবে?
সমর্থকদের উদ্দেশে দেয়া বক্তব্যে ট্রাম্প বলেন, আমরা দেশ কীভাবে চালাব, সে তা বলে দিচ্ছেন। আপনি যেখান থেকে এসেছেন, সেখানে গিয়ে বলছেন না কেন? আপনার দেশ কীভাবে চলছে? নির্বাচনের সামনে সর্বশেষ জনমত জরিপে দেখা গেছে, জাতীয়ভাবে জো বাইডেন এখনও সুবিধাজনক অবস্থায় এগিয়ে আছেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতেও দুই প্রার্থীর অবস্থান খুব কাছাকাছি। এর ফলে এবারের নির্বাচনের ফলাফল হাড্ডাহাড্ডি হবে এবং ডাকযোগে ভোট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কিউবার ওপর নিষেধাজ্ঞা ॥ সিগারেট ও মদ আমদানি ঠেকাতে এবার কিউবার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী ৩ নবেম্বর ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে যখন তিনি কঠোর নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামতে যাচ্ছেন তখন এই নিষেধাজ্ঞা দিলেন। ফ্লোরিডায় কিউবা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক ভোটারের বসবাস রয়েছে। বুধবার ট্রাম্প বলেন, কমিউনিস্ট নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের অব্যাহত লড়াইয়ের অংশ হিসেবে আমি ঘোষণা করছি যে, আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয় মার্কিন ভ্রমণকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করবে যেন তারা কিউবায় কোন সরকারী স্থাপনায় অবস্থান না করেন। নিষেধাজ্ঞার কারণ স্পষ্ট করে দিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আমাদের ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানাব, কিউবা থেকে যেন তারা সিগারেট এবং মদ আমদানি না করেন।