ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১

চলে গেলেন বিজ্ঞানী আলী আসগর

প্রকাশিত: ২৩:১৯, ১৭ জুলাই ২০২০

চলে গেলেন বিজ্ঞানী আলী আসগর

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলে গেলেন বিজ্ঞানী, গবেষক, জনপ্রিয় বিজ্ঞান লেখক ও সংগঠক অধ্যাপক আলী আসগর। বৃহস্পতিবার ভোরে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্নালিল্লাহি... রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। স্ত্রী ও দুই ছেলে রেখে গেছেন তিনি। আসরের নামাজের পর উত্তরার ৪ নম্বর সেক্টর কবরস্থান মসজিদে আলী আসগরের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে ওই কবরস্থানেই দাফন করা হয়। আলী আসগর দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কজনিত রোগে ভুগছিলেন বলে জানিয়েছেন তাঁর ছেলে আরিফ আসগর। তিনি বলেন, বাবার হার্ট এ্যাটাক হয়েছিল। এছাড়া বার্ধক্যজনিত সমস্যা তো ছিলই। আলী আসগরের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। উদীচীর শোকবার্তায় বলা হয়, একজন বিজ্ঞানী, মুক্তচিন্তক ও প্রগতিবাদীর মৃত্যুতে বাংলাদেশের অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হলো। সমাপ্ত হলো এক গৌরবোজ্জ্বল, বৈচিত্র্যপূর্ণ অধ্যায়ের। একটি প্রগতিশীল, অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনস্ক সমাজ গঠনের সংগ্রামে ব্রতী ছিলেন অধ্যাপক ড. আলী আজগর। গবেষণা ও শিক্ষকতার পাশাপাশি বিজ্ঞান গবেষণার পরিবেশ সৃষ্টি, উদ্ভাবনমূলক বিজ্ঞানচর্চার আন্দোলন গড়ে তোলা এবং বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার লক্ষ্যে নানা প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন ও প্রকাশ মাধ্যমের ব্যবহারে তার মেধা ও মননকে প্রয়োগ করেছেন। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও শিক্ষা বিষয়ে তার শতাধিক প্রবন্ধ ও বই প্রকাশিত হয়েছে। আলী আসগর গণবিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল ফিজিকস ও বায়ামেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ছিলেন। এছাড়া প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। জমাট পদার্থ, চৌম্বক বস্তু, মেডিক্যাল ফিজিকস ও বায়ো-ম্যাগনেটিজম ছিল তার নির্বাচিত গবেষণার বিষয়। গবেষণা-ল্যাবরেটরি ও বিজ্ঞান ক্লাব গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশ এ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসের ফেলো এবং বাংলাদেশ জার্নাল অব ফিজিকসের চীফ এডিটর ছিলেন তিনি। অধ্যাপক আলী আসগর ১৯৬০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি এবং ১৯৬২ সালে এমএসসি ডিগ্রী অর্জন করেন। এর পর ১৯৭০ সালে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটন ইউনিভার্সিটি থেকে পিএচডি অর্জন করেন। সর্বস্তরে বিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করতে বিজ্ঞানবিষয়ক একাধিক বই লিখেছেন তিনি। এর মধ্যে ‘সময় প্রসঙ্গে’, ‘ভাষা ও বিজ্ঞান’, ‘বিজ্ঞান প্রতিদিন’, ‘বিজ্ঞানের বিচিত্র জগৎ থেকে’, ‘বিজ্ঞানের মজার প্রজেক্ট’, ‘বিজ্ঞান ও সমাজ’, ‘বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশের পথে’, ‘পরিবেশ ও বিজ্ঞান’, ‘বিজ্ঞানের দিগন্তে’, ‘বিজ্ঞান আন্দোলন’ উল্লেখযোগ্য। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ড. মনিরুজ্জামান স্বর্ণপদক, ড. কুদরত-ই-খুদা স্বর্ণপদক, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স এ্যাসোসিয়েশন স্বর্ণপদক ও মার্কেন্টাইল ব্যাংক স্বর্ণপদক।
×